অ্যাজমা ট্রিগার অর্থাৎ যে জিনিস গুলি অ্যাজমা বাড়িয়ে দেয়। এই অ্যাজমা ট্রিগার এক একজনের ড়্গেত্রে এক এক রকম। আবার একজনের একাধিক ট্রিগার বা উত্তেজক বস্তু থাকতে পারে।
আপনার বাসায় যদি তেলাপোকার উৎপাত থাকে তবে তা আপনার অ্যাজমা না কমার কারণ হতে পারে। আর তেলাপোকা সেখানেই বশেী থাকে, যেখানে খাদ্য কণা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। তাই আপনার রান্না ঘর এবং খাবারের ঘর পরিষ্কার রাখার উপর, অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ নির্ভর করতে পারে।
অনেক ড়্গেত্রে ঘরে ব্যবহৃত পোকা মাকড় মারার স্প্রে কিংবা নিজ দেহে ব্যবহৃদ সুগন্ধি আপনার অ্যাজমা বেড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে। তাই প্রয়োজনে এদের ব্যবহার আপনাকে পরিহার করতে হতে পারে।
তাপমাত্রার তারতশ্যে কারো কারো অ্যাজমা বেড়ে যায। বলা হয়ে থাকে, তাপমাত্রার ওঠা নামা যদি তিনি ডিগ্রীর সেলসিয়াসের বেশি হয়, অ্যাজমা বেড়ে যেতে পারে। ধনরম্ন আপনার অফিস বা গৃহ শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত, কিন্তু বাইরে প্রচন্ড গরম, এই তারতম্য অ্যাজমা রোগীদের জন্য ভাল নয়। তাই আপনার শীতাতাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াতের উপর রাখুন। সরাসরি ঠা-া বাতাসের সংস্পর্শে কারো কারো অ্যাজমা বেড়ে যায়। তাই সরাসরি ঠা-া বাতাস গায়ে লাগানো পরিহার করম্নন।
বাতাসে ভেড়ে বেড়নো ছত্রাকের স্পোর, শ্বাসের সাথে ফুসফুসে ঢুকে গেলে অ্যাজমা বেড়ে যেতে পারে। গম এবং স্যাঁতস্যাঁতে দেয়াল এবং মেঝে পরিহার করম্নন। শুনে অবাক হবেন, বিদ্যুৎ চমকালেও কারো কারো অ্যাজমা বেড়ে যায়। বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দে ছত্রাকের বীজ ভেঙ্গে, স্পোর গুলি বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।
অধিকাংশ অ্যাজমার রোগী অভিযোগ করেন ধূলা বালির মধ্যে গেলেই তাদের শ্বাস কষ্ট হয়। এই ধূলা বালি শুধু বাইরের না বরং ঘর বাড়িতে জমে থাকা ধুলা আপনাকে আরো বেশি অপদস্থ করবে। এছাড়াও এই ধুলাবালিতে জমে থাকে মাইট নামক পোকা, যা অধিকাংশ অ্যাজমা রোগীর অ্যাজমা বাড়িয়ে দেয়ার জন্য দায়ি। তাই ঘর বাড়রি সাজ শয্যায় সাধারণ হওয়ার ভাল। ধুলা বালি কম আটকায় এরকম জিনিস পত্র বাড়িতে কম রাখুন যেমন- কার্পেট, জানালার ভারী পর্দা, সোফাসেটের নক্সাদার খবার, লোমশ উলের পুতুল (টিডি বেয়অর) প্রভৃতি। বাজারে মাইট গ্রম্নফ বালিশ পাওয়া যায়, সেটিও প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘর ঝাড়ু নি দিয়ে মুছে ফেলা ভাল। শীতের শুরম্নতে উলের গরম কাপড়, K¤^j, লেপ বের করতে হলে অন্যদের সাহায্য নিন। কারণ এগুলির মধ্যে প্রচুর ধুলা মাইট পোকা জমে থাকে। কাপড় ঘরের খেলা জায়গায় বা আলনায় না রেখে আলমারিতে রাখুন। এত গেল ঘরের ভিতর ধুলা কমানোর বিভিন্ন উপায় বাইরে গেলে নাক মুখে মাক্স পড়ুন। সিটি কর্পোরেশনের পড়্গ থেকে ধুলা কমানোর জন্য পানিতে ছিটাতে পারে, উন্নয়ন কাজ দ্রম্নত শেষ করতে পারে। অ্যাজমা রোগীরা ধুলা প্রবণ এলাকায় গাড়ির কাঁচ বন্ধ করে চলাচল করতে পারে। বাইরে থেকে ফিরে ভালভাবে হাত মুখ ধুয়ে নিতে পারে, যাতে শরীরে ধুলা বালি আটকে না থাকে।
আপনি যদি ধুমপানি হয়ে থাকেন, অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে অবশ্যই ধুমপান পরিহার করতে হবে। আজকাল মানুষ বিভিন্নভাবে ধূমপান করে থাকে যেমন- সিগারেট, বিড়ি হু্ক্কা, সীসা প্রভৃতি। পরোড়্গ ধূমপান অর্থা’ অন্যের সিগারেটের ধোঁয়া, আপনার শ্বাস কষ্ট বাড়িতে দিতে পারে। তাই কাছাকাছি থাকে এমন বন্ধু বান্ধব বা আত্মীয় ¯^Rb‡K ধূমপান নিরম্নৎসাহিত করম্নন।
যে কোন ঝাঁঝাল গন্ধ আপনার অ্যাজমা বাড়িতে দিতে পারে। ঝাঁঝাল গন্ধের উৎস হতে পার রাসায়নিক পদার্থ, ময়লার ভাগাড় এমনকি শরীরে ব্যভহৃত সুগন্ধি।
বায়ু দূষণ অ্যাজমা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। দ্রম্নত নগরায়ণের ফলে এই সমস্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশে ঘরে বাইরে বায়ু দুষণ প্রকট। ঘরের বায়ু দুষণ হয় মূলত রান্না ঘরের চুলা থাকে। চুলার ধোঁয়া রান্নাঘর থেকে সহজে বে হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকা উচিত। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যারা ব্যাসত্ম রাসত্মার পাশে বসবাস করে তাদের অ্যাজমার বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি।
অ্যাজমার বেড়ে যাওয়া আপনার মানসিক অবস্থার উপরও নির্ভর করে। অতিরিক্ত মানসিক চাপে কিংবনা ক্রোধে আপনার অ্যাজমার বেড়ে যেতে পারে। এমনকি কেউ যদি অট্টহাসিতে ফেতে পড়ে তা হলেও অ্যাজমা বেড়ে যেতে পারে।
আপনার যদি অ্যাজমা থাকে তাহলে ঘরের মধ্যে কোন পশু পাখি পালন না করাই ভাল।
কারো কারো ড়্গেত্রে শরীর চর্চা বা কায়িক পরিশ্রমে অ্যাজমা বেড়ে যায়। অনেক সময় অ্যাজমায় আক্রানত্ম বাচ্চারা, এই কারণে খেলতে অনীহা প্রকাশ করে। তবে সুনিয়ন্ত্রিত অ্যাজমা নিয়ে অনেকেই আজকে নাম করা খেলোয়াড়।
কারো কারো ড়্গেত্রে ফুলের রেণুতে অ্যাজমা বেড়ে যায়। তাই অনেক ড়্গেত্রে বসনত্মকালে অনেকেরই অ্যাজমা বেড়ে যায়। বাগান থেকে ফিরে এসে এই ধরনের ব্যাক্তিদের ভালভাবে নাক মুখ পরিষ্কার করা উচিত।
কিছু কিছু ঔষধ আপনার অ্যাজমা বাড়িতে দিতে পারে যেমন- প্রেসারের ঔষধ, ব্যাথার ঔষধ প্রভৃতি। তাই চিকিৎসকের কাছে গেলে, আপনার অ্যাজমার কথা তাকে জানান।
কিছু কিছু ড়্গেত্রে কোন কোন খাবারে কারো কারো অ্যাজমা বেড়ে যায়। তবে আমাদের দেশে এই প্রবণতা কিছুটা কম। সম্ভাব্য খাবার গুলি হল চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছ, বেগুন, বাদাম কিংবা খাবরে ব্যবহৃত প্রিজারবেটিভ ইত্যাদি। তবে অ্যাজমা হলেই যে সব খাবার গণহারে বাদ দিবেন, তার কোন মানে হয় না।