ফুসফুসের ফোঁড়া ও বুকে জমে থাকা পুঁজ
আমরা শরীরের উপরি ভাগে বিশেষ করে চামড়ার বিভিন্ন অংশে ফোঁড়া হতে দেখি, যেমন- থাকে টনটনে ব্যাথা তেমনি থাকে কাঁপুনিসহ জ্বর| বুকে ফোঁড়া হলে কিংবা পুঁজ জমলে অনেকটা এই ধরণের লড়্গণের প্রকাশ পায়।
ফুসফুসে ফোড়া হলে লড়্গণগুলি নিম্নরূপ :
- উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর (>103 ডিগ্রী ফারেনহাইট) হয়। জ্বর শীত করে কেঁপে কেঁপে আসে।
- কাশি হয়ে থাকে, কাশির সাথে প্রচুর কফ বের হতে থাকে। কফ হয়ে থাকে ঘন, হলুদ এবং দূর্গন্ধযুক্ত। মাঝে মাঝে কফের সাথে রক্ত আসতে পারে।
- রোগীকে দেখতে খুবই অসুস্থ ও দুর্বল মনে হয়।
বিভিন্ন কারণে বুকে ফোঁড়া হতে পারে যেমন :-
- নিউমোনিয়ার চিকিৎসা সময় মত করা না হলে।
- মুখের জীবাণু যুক্ত লালা শ্বাসণালীতে চলে গেলে।
- শ্বাসণালীতে বাইরের কোন বস্তু ঢুকে আটকে গেলে।
- যারা তাদের শিরায় বিভিন্ন রকম নেশা জাতীয় দ্রব্য নেয়, তাদের ড়্গেত্রে বিভিন্ন জীবাণু, রক্ত দ্বারা বাহিত হয়ে ফুসফুসে যেয়ে ফোঁড়া তৈরি করতে পারে।
কাদের ফোাঁড়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশী ?
- যাদের মুখ গহ্বর, দাঁত ও দাঁতের মারি রোগাক্রানত্ম কিংবা অপরিষ্কার।
- যাদের ডায়বেটিস অনিয়ন্ত্রিত।
- যাদরে পূর্ব থেকেই ড়্গতিগ্রসত্ম ফুসফুস রয়েছে, প্রভৃতি।
ফোঁড়া হতে বাঁচার উপায়-
- মুখ গহ্বর, দাঁত ও মাড়ির যত্ম নেয়া।
- ডায়বেটিসকে নিয়ন্ত্রণ রাখা।
- যথাযথভাবে এবং দ্রম্নত নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নেয়া, প্রভৃতি।
ফুসফুসে ফোঁড়া হলে দীর্ঘদিন নির্ধারিত এন্টিবায়োটিকটি যথাযথ মাত্রায় মাত্রায় সেবন করতে হয়। কিছু কিছু ড়্গেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন হয় যেমন- ফোঁড়া যদি আকারে বড় হয়, ফোঁড়া যদি ফেটে যায় অথবা ফোঁড়া থেকে যদি রক্ত ড়্গরণ হয়, প্রভৃতি।
বুকে পুঁজ জমা : বুকে পুঁজ জমা বলতে বুঝায়, ফুসফুসের চারিদিকে যে আবরণী রয়েছে সেই আবরণীর দুই সত্মরের মধ্যে পুঁজ জমা। সেই ড়্গেত্রে রোগীর মধ্যে নিম্নলিখিত লড়্গণগুলি থাকতে পারে যেমন-
- রোগীকে খুবই অসুস্থ দেখায়।
- রোগীর প্রচন্ড জ্বর (উচ্চ তাপমাত্রা) আসতে পারে, জ্বর যখন আসে শীত করে এবং কেঁপে কেঁপে আসে।
- পুঁজ যে পাশে জমে, সে পাশটা ভার হয়ে থাকে এবং প্রচন্ড ব্যাথা হয় এবং ব্যাথার জন্য পরিপূর্ণভাবে শ্বাস পর্যনত্ম নেয়া যায় না। শ্বাস নিতে গেলে বুকের ব্যাথা বেড়ে যায়। অনেক সময় বুকের যে পাশে পুঁজ জমে, সে পাশে কেউ স্পর্শ করলেও রোগী ব্যাথা পায়।
বিভিন্ন কারণে বুকে পুঁজ জমতে পারে, যেমন-
- নিউমোনিয়ার জটিলতা হিসেবে।
- ফুসফুসের ফোঁড়া ফেটে গেলে।
- অন্য কোন কারণে ফুসফুসের পর্দায় জমে থাকা পানিতে সংক্রমণ (ইনফেকশন) হলে, প্রভৃতি।
বুকে পুঁজ জমে থাকার প্রধান চিকিৎসায় হল একটি ছোট নল লাগিয়ে দিয়ে পুঁজ বের করে ফেলা এবং যথাযথ এন্টিবায়োটিক দেয়া।
শ্বাসণালীতে কোন কিছু ঢুকে গেলে কি করণীয় ?
হঠাৎ করে শ্বাসণালীতে বাইরের কোন বস্তু দূর্ঘটনাবসত ঢুকে যেতে পারে যে কারো। তবে এই ঘটচনার সবচেয়ে বড় শিকার হল স্কুলে যাওয়ার ঠিক আগের বয়সের শিশুরা অর্থাৎ ৪/৫ বৎসর বয়স থেকে শুরম্ন করে এর নীচের বয়সের শিশুরা। এর ফলে বাচ্চারা বিভিন্ন প্রকার শারিরীক ভোগানিত্মর ¯^xKvi হয় এবং মৃত্যুর ঘটনাও কম নয়।
আমাদের কাছে মা-বাবার যখন বাচ্চাদের নিয়ে আসেন, তখন তারা এই রকম একটি ইতিহাস দেন যে, বাচ্চা পুঁথি বা মার্বেল দিয়ে খেলছিল, হঠাৎ তা মুখে দিয়ে গিলে ফেলে (মূলত তা অধিকাংশ ড়্গেত্রে চলে যায় শ্বাসণালীতে)। আর তখন থেকেই বাচ্চা ক্রমাগত কাশি, শ্বাসকষ্ট আর বুকে ঘড় ঘড় শব্দ নিয়ে ভুগছে (চিত্র :১২)। শ্বাসাণালীতে কোন কিছু ডুকে যাওয়ার বিষয়টি যদি অভিভাবকদের দৃষ্টিগোচন না হয়, তাহলে সময়ের সাথে সাথে বাচ্চাদের ফুসফুস ক্রমাগত ড়্গতিগ্রসত্ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই পরিস্থিতিতে বাচ্চারা প্রায়ই ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রানত্ম হতে থাকে। অনেক সময় বাচ্চার গলার স্বর বসে যায়, ঘন ঘন শ্বাস নিতে থাকে প্রভৃতি।
জাতীয় বড়্গব্যাধি ইনিষ্টিটিউট ও হাসপাতালে বিভিন্ন সময় নিয়ে আসা বাচ্চাদের, যারা শ্বাসণালীতে বিভিন্ন রকম আটকে থাকা বস্তুসহ ভর্তি হয়েছে, তাদের শ্বাসণালী থেকে নিম্নলিখিত বস্তুগুলো উদ্ধার হয়েছে। যেমন- (১) বিভিন্ন রকম ফলের বীচি, চিনাবাদাম (২) আলপিন, সেফটিপিন, ছোট পেড়েক (৩) খেলনার ড়্গুদ্র অংশ (৪) কলমের বিভিন্ন অংশ (৫) মার্বেল, পুঁথি প্রভৃতি। আর বড়দের ড়্গেত্রে পাওয়া যায়, নকল দাঁত, মাংসের হাড়, সুপাড়ি ইত্যাদি।
বাইরের বস্তু যেন শ্বাসণালীতে চলে না যায়, সেই ড়্গেত্রে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নেয়া যায় যেমন-
- চার বছরের নীচের বাচ্চাদের এমন ছোট খেলনা না দেয়া যেগুলির পুরোটা বা খন্ড বিশেষ মুখের মধ্যে বাচ্চারা ঢুকিয়ে ফেলতে পারে। যেমন- ছোট গাড়ি যেটির ছোটর ছোট চাকাও খুলে ফেলা যায়।
- এই বয়সের নীচের বাচ্চাদের কিছু ছোট শক্ত খাবার যেমন- শক্ত চকলেট, বাদাম, ফলের বীচি প্রভৃতি না দেয়া।
- বাচ্চাদেরকে খাবার ছোট ছোট টুকরো করে দেয়া যাতে খাবার গলায় আটকে না যায়।
- খাবার মুখে নিয়ে বাচ্চারা যেন দৌড়া-দৌড়ি বা কথা না বলে।
- মার্বেল, সেফটিফিন, কানের দুল, পুুঁথি, ট্যাবলেট প্রভৃতি বাচ্চাদের হাতের নাগালের বাইরে রাখা।
- বড়রা অনেক সময় মুখে খাবার নিয়ে কিংবা ঠোট বা দাঁতের ফাঁকে বিভিন্ন জিনিস যেমন ক্লিপ, পেড়েক প্রভৃতি নিয়ে কথা বলে অথবা বিভিন্ন কাজ করে, এই অভ্যাসটি পরিহার করা।
- যথাযথ ভাবে নকল দাঁত ব্যবহার করা, যাতে তা শ্বাসণালীতে চলে না যায়।
এক বৎসরের উপরে যাদের বয়স, তাদের ড়্গেত্রে বাইরের বস্তু শ্বাসণালীতে আটকে যেয়ে দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারি, একই সাথে যেখানে থোরাসিক সার্জনরা (মূলত তারাই ব্রোঙ্কোসকপি করি শ্বাসণালীর ভিতর থেকে বাইরের বস্তু বের করেন) কাজ করেন সে ধরনের হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
চিত্র : ২ (হেইম লিক প্রক্রিয়া)
- এই ধরণের রোগীদের শরীরের পিছন দিক দিয়ে দুই ডানার মাঝখানে হাতের তালুর শক্ত অংশ দিয়ে ধাক্কা দিব। তখন কাশির সাথে বস্তুটি শ্বাসণালী থেকে বের হয়ে আসতে পারে। যদি বের না হয়, এই প্রক্রিয়াটি পাঁচবার অনুসরণ করব।
- এরপরও রোগীর শ্বাসণালী পরিষ্কার না হলে, আমরা হেইম লিক প্রক্রিয়াটি (চিত্র:২) (heimlich maneuver) অনুসরণ করতে পারি। এই পদ্ধতিতে রোগীকে পিছন দিক থেকে জাপটে ধরতে হয় এবং হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নাভীর উপর হাত স্থাপন করে ঊর্ধ্বমুখী চাপ দিতে হয়। সফল না হওয়া পর্যনত্ম প্রক্রিয়াটি কমপড়্গে পাঁচবার অনুসরণ করব।
- কোন কারণে শ্বাস বা হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেলে কৃত্রিম শ্বাস বা কার্ডিয়াক ম্যাসেজ দেয়া লাগতে পারে।
এক বৎসর বয়সের নীচের বাচ্চাদের ড়্গেত্রে আমরা নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারি। তবে এই পদ্ধতি শুরম্ন করলৈও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বিলম্ব হওয়া কাম্য নয়।
চিত্র : ৪
- বাচ্চাটা যদি অজ্ঞান থাকে তবে তাকে কৃত্রিমভাবে শ্বাস এবং কার্ডিয়াক ম্যাসেজ দিতে হবে।
- বাচ্চার যদি জ্ঞান থাকে কিন্তু বাইরের বস্তু শ্বাসণালীতে ঢুকে যাওয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট হতে থাকে, তাহলে বাচ্চাটিকে উপর করে (চিত্র : ৩) আপনার একটি বাহুর উপর নিন। বাচ্চাটির ভর সামলানোর জন্য হাতসহ বাচ্চাটিকে সেই পাশের উরম্নর উপর রাখতে পারেন। অপর অব্যবহৃত হাত দিয়ে বাচ্চার দুই ডানার মাঝখানে চাপড় দিই (চিত্র : ৪)। এভাবে পাঁচবার চাপড় দেয়ার পর বাচ্চার মুখ পরীড়্গা করে দেখুন, বস্তুটি শ্বাসণালী থেকে বের হয়ে মুখে চলে এসেছে কিনা, তাহলে আঙ্গুল দিয়ে বস্তুটি বের করে নিয়ে আসেন।
- এরপরও বস্তুটি বের হয়ে না আসলে বাচ্চাটিকে চিৎ করে শুইয়ে বুকের মাঝখানের হাড়ের উপর পাঁচবার চাপ দিই (চিত্র : ৪) এবং খেয়াল করি শ্বাসণালীতে ঢুকে যাওয়া বস্তুটি মুখে চলে এসেছে কিনা ?
- শ্বাসণালী থেকে বস্তুটি বের না হওয়া পর্যনত্ম একবার উপর করে আরেকবার চিৎ করে বারবার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করি এবং একই সাথে নির্দিষ্ট হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা নিতে থাকি।
যড়্গা প্রতিরোধের উপায়
বিশ্বে যতগুলি যড়্গা প্রবণ দেশ রয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। অথচ অনেক ড়্গেত্রেই এই রোগটি প্রতিরোধ যোগ্য।
- যড়্গা প্রতিরোধের সাথে ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা জরম্নরী যেমন- যেখানে সেখানে থুথু না ফেলা, হাঁচি কাশির সময় নাক মুখ ঢাকা।
- জন্মের পরপরই যড়্গা প্রতিরোধি বি.সি.জি টীকা নিয়ে নেয়া। এই টীকা মোটামুটি সাত বৎসর বয়স পর্যনত্ম ফুসফুস ও ফুসফুস বহির্ভূত যড়্গার বিরম্নদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি যোগায়। আমরা ভাগ্যবান এই জন্য যে এই টীকাটি আমাদের সার্বজনিন টীকা দান কর্মসূচীর মধ্যে অনত্মর্গত অর্থাৎ বাচ্চা বয়স সব টীকা দেয়া হলে থাকলে আমরা ধরে নিব তার বিসিজি টীকাটিও দেয়া হয়ে গেছে।
- সুশৃঙ্খল জীবন যাপন, সুষম খাবার এবং পরিবেশে বসবাস যড়্গা প্রতিরোধের জন্য গুরম্নত্বপূর্ণ। একত্রে গাদাগাদি করে বসবাস যড়্গার বিসত্মার বাড়ায়। ঠিক একইভাবে পুষ্টিহীনতা যড়্গা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
- ধূমপান, মদ্যপান কিংবা অন্য যে কোন নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করলে যড়্গা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
- ডায়বেটিস থাকলে তা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করম্নন। অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিসে যড়্গা হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।
কফে যড়্গার জীবণু আছে, এরূপ রোগীকে যড়্গার ঔষধ সঠিকভাবে গ্রহণ করতে উৎসাহিত করা। কারণ তাদের মাধ্যমে মুলত রোগটি থাকে।
ফুসফুস চুপসে যাওয়ার কারণ
ফুসফুসকে তুলনা করা হয় বেলুনের সাথে। শ্বাসের সাথে বাতাস ঢুকলে এটি বুক জুড়ে ফুলে উঠে আর প্রশ্বাসের সাথে কিছুটা বাতাস বেরিয়ে গেলে এটি আয়তনের খানিকটা কমে যায়।
- শ্বাসণালী বন্ধ হয়ে ফুসফুস চুপসে যাওয়া : বেলুনের মত ফুসফুসেরও একটি মুখ রয়েছে যেখানে দিয়ে ফুসফুসের ভিতর বাতাস ঢুকে। ফুসফুসের এই মুখে যুক্ত থাকে বৃহৎ আকৃতির শ্বাসণালী। এই শ্বাসণালী দিয়ে বাইরের পরিবেশ বাতাস টেনে নিয়ে আমরা ফুসফুসকে ফুলিয়ে রাখি। শ্বাসণালী কোন কারণে বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের ফুসফুস চুপসে যায়। শ্বাসণালী বন্ধ হয়ে যেতে পারে নানা কারণে। যেমন- এর ভিতর টিউমার হলে, কফ জমে আটকে গেলে, বাইরের কোন বস্তু শ্বাসণালীর ভিতরে যেয়ে আটকে গেলে যেমন- ফলের বীচি, নকল দাঁত প্রভৃতি। আবার শ্বাসণালীর উপর বাইরে থেকে চাপ পড়লে বিশেষ করে কোন টিউমার দিয়ে শ্বাসণালী চেপে গেলে ফুসফুস চুপসে যেতে পারে।
- ফুসফুসকে বাইরে থেকে চাপ দিয়ে চুপসে দেয়া : বড়্গ গহ্বরে পানি, বাতাস, রক্ত কিংবা পুঁজ জমা হলে তা ফুসফুসকে চারদিক থেকে চেপে ধরে এবং এদের পরিমাণ বেশী হলে বুকের মধ্যে চাপ আরো বেড়ে যায় ফলে ফুসফুস ক্রমাগত চুপসে যেতে থাকে।
- ড়্গতিগ্রস্থ ফুসফুস কুঁচকে যাওয়ার কারণে ফুসফুসের চুপসে যাওয়া : ফুসফুসে যড়্গা, নিউমোনিয়া কিংবা ফোঁড়া হলে ছোট বড় ড়্গতের সৃষ্টি হয়। এই সব ড়্গত সেরে গেলে তা তন্তু জাতীয় টিস্যু দ্বারা ভরাট হয়, ফলে ফুসফুসের কোন কোন জায়গা কুঁচকিয়ে যায় ফলে এর আশেপাশের কিছু অংশ চুপসে যেতে পারে।
ফুসফুস চুপসে গেলে সাধারণত শ্বাসকষ্ট হয়, অনেক ড়্গেত্রে বুকে ব্যাথা হতে পারে। এছাড়া যে সব রোগের কারণে ফুসফুস চুপসে যেয়ে থাকে, অধিকাংশ ড়্গেত্রে সে সব রোগের লড়্গণগুলি প্রকাশ পেয়ে থাকে।
ফুসফুস দীর্ঘ দিন চুপসে থাকলে সময়ের সাথে সাথে কার্যকারিতাও হারাতে থাকে। কিন্তু সময়ের মধ্যে যদি ফুসফুসের বাইরের পানি, বাতাস কিংবা পানি চাপ অপসারণ করা যায় অথবা ফুসফুসের শ্বাসণালীর ভিতরের টিউমার অপসারণ করা যায় তাহলে ফুসফুস চুপসে যাওয়া অবস্থা থেকে অবস্থায় ফিরে আসতে পারে।
আগুনে পোড়া শ্বাসণালী
আগুনে পোড়া শ্বাসণালী যেমন রোগীর কষ্ট এবং যন্ত্রনা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয় তেমনি একইভাবে অনেক ড়্গেত্রে তাঁর চিকিৎসকগণও অসহায় হয়ে পড়েন। আগুনে পোড়া শ্বাসণালীর রোগীর চামড়ায় পোড়া ড়্গতসহ অথবা অনেক ড়্গেত্রে কোন প্রকার পোড়া ড়্গত ছাড়াও আসতে পারেন। শ্বাসণালী ড়্গতিগ্রস্থ হওয়ার এ ধরনের রোগী পরবর্তীতে সহজেই নিউমোনিয়াসহ অন্যান্য জটিলতায় আক্রানত্ম হয়ে থাকেন। আগুনে পোড়া চামড়ার ড়্গেত্রে সহজেই চোখে পড়ে, কিন্তু শ্বাসণালী পুড়ে যাওয়ার লড়্গণগুলি প্রাথমিক পর্যায়ে দেখা না দিতে পারে, অনেক ড়্গেত্রে লড়্গণগুলি দেখা দেয় ঘটনার ২৪ থেকে ৩৬ ঘন্টার পর। শরীরে পোড়াড়্গত বেশী জায়গা জুড়ে থাকলে, অনেক ড়্গেত্রেই চিকিৎসকরা আন্দাজ করে নেন, রোগীর শ্বাসণালীও হয়ত পুড়ে গেছে। আগুন লাগলে শ্বাসণালী পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে পাঁচ বৎসরের নীচের বাচ্চাদের এবং পঁচাত্তর বৎসরের অধিক বয়স্কদের।
শ্বাসণালী আগুনে কতটা ড়্গতিগ্রস্থ হয়েছে তা নির্ভর করে-
§ অগ্নিকান্ড কোন বদ্ধ জায়গা ঘটেছে কিনা ? (যেমন কাঁচ দিয়ে ঘেরা শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিতত কড়্গ)
§ অগ্নিকান্ড কোন বদ্ধ জায়গায় ঘটেছে কিনা ? (যেমন কাঁচ দিয়ে ঘেরা শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কড়্গ)
§ কতড়্গণ যাবত ব্যক্তিটি আগুন এবং ধোঁয়ার মধ্যে ছিলেন ?
§ কি ধরনের বস্তু পুড়েছে এবং তা থেকে কি ধরনের ড়্গতিকর ধোঁকা বের হয়েছে ?
§ রোগী আগে থেকে কোন শ্বাসের রোগে ভুগছে কিনা ?
§ কিভাবে আপনাপর শ্বাসণালী আগুনে ড়্গতিগ্রস্থ হতে পারে ?
মূলত তিন পদ্ধতিে শ্বাসণালী ড়্গতিগ্রস্থ হয়-
1. আগুনে উৎপন্ন তাপ দ্বারা তৈরী ড়্গত।
2. প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন বিষাক্ত গ্যাস দ্বারা শ্বাস রোধ হওয়া।
3. ধোঁয়া ফুসফুস এবং শ্বাসণালীর উত্তেজক হিসাবে কাজ করতে পারে।
1. আগুনে উৎপন্ন তাপ দ্বারা তৈরী ড়্গত : তাপের কারণের সাধারণত যে ড়্গত হয় তা মুখ গহ্বর সংলগ্ন শ্বাসের পথ (oropharynx) পর্যনত্ম সীমাবদ্ধ থাকে। তবে এর সাথে বাষ্প এবং বিস্ফোরণ যুক্ত হলে যে যেমন- কারখানার বয়লার বিস্ফোরিত হওয়া। শ্বাসণালীর ড়্গত পৌঁছে যেতে পারে ফুসফুসের গভীরে।
2. প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন বিষাক্ত গ্যাস দ্বারা শ্বাস রোধ হওয়া : প্রচুর পরিমান ধোঁয়াতে যদি শ্বাস রোধ হয়ে আসে, তাহলে তা আমাদের শরীরের কোষগুলিতে অক্সিজেনের ঘাটতি ঘটায়। অগ্নিকান্ডে স্থলে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়, তার উপর যদি, পোড়া বস্তু থেকে কার্বন মনো-অক্সাইড (CO) তৈরি হয়, তবে আমাদের শরীরের কোষগুলিতে অক্সিজেন ঘাটতিে আরো প্রকট হয়। তাছাড়া কার্বন মনো অক্সাইড হার্টের পাম্প করার ড়্গমতাও কমিয়ে দেয়। অগ্নিকান্ডের সময় যদি পস্নাষ্টিক (বিভন্ন রকম কারখানায় মজুদ থাকে), উল, সিল্ক, নাইলন, রাবার এবং কাগজ জাতীয় পদার্থ (গার্মেন্টস জাতীয় কারখানায় অধিক পরিমাণ থাকে। পুড়ে, তাহলে প্রচুর পরিমাণে সায়ানাইড তৈরি হয়। এই সায়ানাইড কার্বন মনো অক্সাইডের চেয়ে বিশ গুণ বিষয়াক্ত এবং এই পদার্থটি আক্রামনাত্মক ব্যক্তি দম বন্ধ করে দিতে পারে।
3. ধোঁয়ার কারণে শ্বাসণালী উত্তেজিত হলে, তাতে প্রদাহের সৃষ্টি হয় ও শ্বাসণালী সংকুচিত হয় এবং শ্বাসণালীর কোষগুলি হতে নি:সৃত পদার্থ দ্বারা ছোট ছোট শ্বাসণালীগুলি বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া শ্বাসণালী, ছাই জাতীয় দ্রব্যাদি দ্বারাও অনেক ড়্গেত্রে বন্দ হয়ে যেতে পারে।
একজন সাধারণ মানুষ কিভাবে বুঝবেন, আগুনে পোড়া রোগীটির শ্বাসণালী মারাত্মাকভাবে আক্রানত্ম হয়েছে ?
1. আক্রানত্ম ব্যক্তির গলার পরিবর্তিত হয়ে যায়, অনেক ড়্গেত্রে তা কর্কশ পরিণত হয়।
2. ব্যক্তি দ্রম্নত শ্বাস নিতে থাকে অর্থাৎ তার শ্বাস কষ্ট হয়।
3. ব্যক্তির জিহ্বা, হাতের নখ বা শরীরের অন্যান্য অংশ নীল বর্ণ ধারণ করে।
4. লোকটি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলতে পারে।
5. তার শ্বাসের সাথে বুকে ক্রমাগত আওয়াজ হতে থাকে।
6. তার কফের সাথে কালো কালো ছাই জাতীয় পদার্থ আসতে পারে।
§ চিকিৎসক প্রাথমিক পর্যায়ে বুকের এক্সরে রিপোর্ট পেলেও খুশী নহ না, অনেক ড়্গেত্রেই শ্বাসণালীর পরিবর্তন গুলি আসে ২৪ থেকে ৩৬ ঘন্টার পর।
§ এছাড়াও চিকিৎসকগণ রোগীর অবস্থা বুঝার জন্য রক্তে বিভিন্ন গ্যাসের পরিমাণ দেখেন, কিডনী ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা বুঝে নেন, হার্টের অবস্থা বুঝার জন্য ই.সি.জি করে নেন, এছাড়াও শ্বাসণালীর অবস্থা সঠিকভাবে দেখার জন্য অধিকাংশ ড়্গেত্রে ব্রঙ্কোসকপি করে নেন।
একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে শ্বাসণালী পোড়া রোগীকে কিভাবে সাহায্য করতে পারেন ?
1. যত দ্রম্নত সম্ভব অগ্নিকান্ডের স্থান থেকে রোগীকে অপসারণ করে মুক্ত খোলা স্থানে নিয়ে আসেন।
2. নাক মুখে ছাই বা কিছু আটকে থাকলে তা অপসারণ করম্নন।
3. আপনি যদি রোগীর জন্য দ্রম্নত প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে পারেন, তবে নিঃসন্দেহে আপনি চিকিৎসার প্রথম ধাপ পূরণ করেছেন।
4. বহনের সময়ও রোগী যাতে যথেষ্ট অক্সিজেন পায় সেদিক নজর রাখুন।
5. যে সব হাসপাতালে বার্ণ ইউনিট আছে, সে সব হাসপাতালে এ সকল রোগীর জন্য সবচেয়ে ভাল চিকিৎসালয়। তবে এর সাথে খেয়াল রাখা উচিত এই সকল চিকিৎসা কেন্দ্রের নিবিড় পর্যবেড়্গণ কেন্দ্র (আ.সি.ইউ) আছে কিনা? কারণ শতকরা পঞ্চাশ ভাগ শ্বাসনালী পোড়া রোগীর কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসের যন্ত্রের প্রয়োজন হয়। এর সাথে এই সব হাসপাতালে বড়্গব্যাধি বিশেষজ্ঞ থাকলে তা হবে সোনায় সাহাগা।
6. রোগী যদি পূর্বে থেকে অ্যাজমাসহ ফুসফুসের অন্যান্য রোগে ভুগতে থাকেন, তাহলে সংশিস্নষ্ট চিকিৎসককে অবহিত করম্নন।
শ্বাসণালী পোড়া কো কোন রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি থাকা উচিৎ ?
যে সকল ব্যক্তির শ্বাসণালী আগুন এবং এর ধোঁয়া দ্বারা আক্রানত্ম হয়েছে, তাদের সবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই, তবে সাধারণ ড়্গেত্রে কম পড়্গে চার থেকে ৬ ঘন্টা চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে থাকা ভাল। নিম্ন লিখিত বিষয়গুলি রোগীর মধ্যে উপস্থিত থাকলে আক্রানত্ম ব্যক্তির হাসপাতালে ভর্তি হওয়া উচিত :
1. যদি এমন ঘটনা ঘটে, অক্সিকান্ডে একটি বদ্ধ ঘরে ঘটেছিল (যেমন আপনার শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কম্পিউটার ল্যাব) এবং আক্রানত্ম ব্যক্তিটি সেখানে দশ মিনিটের বেশী আটকে ছিলেন।
2. যদি আক্রানত্ম ব্যক্তির কাশির সাথে ঘন কালো কফ বের হয়।
3. ব্যক্তিটি যদি শ্বাস কষ্টে ভুগতে থাকেন।
4. শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে ব্যক্তিটির বুক থেকে যদি বাঁশির আওয়াজের মত শব্দ বের হতে থাকে।
5. আক্রানত্ম ব্যক্তির মুখ মন্ডল যদি পুড়ে যেয়ে থাকে।
দুর্ঘটনা পরবর্তী জটিলতা : আমেরিকার একটি গবেষণায়, সাড়ে আটশত জন দশ থেকে আঠার বৎসর বয়সি শ্বাসণালী পোড়া রোগীদের মধ্যে দেখা গেছে, সেখানে মৃত্যুর হার ১৬.৪% এবং এই ড়্গেত্রে শ্বাসণালী পোড়ার সাথে যদি চামড়ায় পোড়া ড়্গত থাকেত তাহলে মৃত্যুর হার চার গুণ বেশী। আক্রানত্মব্যক্তি ক্রমাগত সুস্থ হয়ে উঠতে থাকলেও ফুসফুস কিছু কিছু সমস্যা থেকে যেতে পারে। ড়্গতিগ্রস্থ প্রধান শ্বাসণালীগুলি স্থায়ীভাবে সরম্ন হয়ে যেতে পারে।
অপর দিকে শ্বাসণালীর কিছু কিছু অংশ ড়্গতিগ্রস্থ হয়ে এর দেয়ালের স্থিতি স্থাপকতা নষ্ট হয়ে স্থায়ীভাবে প্রসারিত (bronchiectasis) থেকে যায়। ফলে এই শ্বাসণালীগুলি ঘন ঘন জীবাণু দ্বারা আক্রানত্ম হয়।
ফুসফুসের কোন কোন অংশে প্রদাহ জনিত তরল (pulmonary edema) জমে, এর অক্সিজেন সরবরাহের ড়্গমতা কমিয়ে দেয়। আবার অনেক ড়্গেত্রে ফুসফুসের কিছু কিছু অংশ চুপশে যেয়ে (atelectasis) অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে। এছাড়া নিউমোনিয়া এবং শ্বাসতন্ত্রের বিকলতা (respiratory failure) হল এর মারাত্মক জটিলতা গুলির অন্যতম।
কিভাবে আপনি আপনার শ্বাসণালীকে অগ্নিকান্ডের সময় রড়্গা করবেন ?
1. সবচেয়ে ভাল উপায় হল, অগ্নিকান্ড প্রতিরোধ করা। আধুনিকতার নামে অনেক ড়্গেত্রে আমার আমাদের ঘর-বাড়ি, অফিস, স্কুল, মার্কেট কংক্রিট এবং কাঁদ দিয়ে ঘিরে ফেলে তথাকথিত শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত আবদ্ধ কড়্গে পরিণত করছি। এই সকল আবদ্ধ কড়্গে অগ্নিকান্ড হলে শ্বাসণালী সবচেয়ে বেশী ড়্গতিগ্রস্থ হয়। তাই সব কড়্গেই থাকা উচিৎ বায়ু চলা চলের ব্যবস্থা। অগ্নিকান্ডের সময় সম্ভব হলে সব দরজা জানালা খুলে দিয়ে ধোঁয়া বাইরে বেরিয়ে যেতে দিন অথবা বাইরের দিকে কাঁদের দেয়াল থাকলে তা ভেঙ্গে দিয়ে ধোঁয়া বেরিয়ে যেতে দিন।
অনেক বহুতল ভবনই অগ্নিকান্ডের সময় বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে। নিচের দিকে কোন তালায় অগ্নিকান্ড হলে সবাই সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠার চেষ্টা করেন। উপরে উঠুন, তবে নিশ্চিত থাকুন। ছাদের দরজা খোলা আছে, তা না হলে আপনি ধোঁয়ার ফাঁদে আবদ্ধ হতে পারে।
2. খেয়াল রাখুন আপনার আসবাবপত্রগুলি যেন এমন বস্তু দিয়ে তৈরি হয়, যাতে তা পুড়ে গেলেও, তা থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া যেন বিষাক্ত না হয়।
3. যদি আপনার গৃহে কিংবা কারখানায় অতিরিক্ত দাহ্য পদার্থা থাকে, তবে অগ্নিকান্ডে সতর্কীকরণ এলার্ম পদ্ধতি ব্যবহার করম্নন, যা অনেক ড়্গেত্রেই প্রাণহানি কমাবে।
স্যার ইয়ান বোথামের একটি কাল্পনিক সাড়্গাৎকার
ক্রিকেট পাগল প্রায় সব মানুষেই ইয়ান বোথামকে চেনেন। যেমন- মেজাজি, তেমনি তুখোড় খেলোয়াড়। তিনি এক সময় ইংল্যান্ডের টেষ্ট দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার চেয়ে বড় কথা আজ পর্যনত্ম ক্রিকেট ইতিহাসে তিনি অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। টেষ্ট ক্রিকেটে তার রয়েছে ১৪টি শতক এবং একই সাথে ৩৮৩টি ইউকেট। আজকের সাড়্গাৎকারটিপ মূলত অ্যাজমা এবং ক্রিকেটের উপর এর প্রভাব নিয়ে। আপনারা হয়ত জেনে থাকবেন বোথাম এমন একজন জনপ্রিয় মানুষ, যিনি অ্যাজমাকে জয় করে, ক্রিকেটের অনেক সাফল্যই নিজ ঝুলিতে ভরেছেন।
লেখক ঃ আপনি কি অ্যাজমাকে কখনও ক্রিকেট ক্যারিয়ারের বাধা হিসেবে গণ্য করেছেন ?
বোথাম ঃ কখনই না। কারও যদি অ্যাজমা সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ থাকে, চাইলে সে বিশ্ব জয় করতে পারে। আপনি ডেভিড বেকহেমকেই (ইংল্যান্ড ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক) দেখেন, অ্যাজমাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, কিভাবে ফুটবলের মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছে।
লেখক ঃ কখন আপনি বুঝতে পারলেন, যে আপনি অ্যাজমায় আক্রানত্ম হয়েছেন ?
বোথাম ঃ আসলে অ্যাজমা আগে আমার ধারণা ছিলনা। আমি লড়্গ্য করলাম ১০/১৫ মিনিট খেলার পর, বুকে চাপ অনুভব করছি, শ্বাস কষ্ট হচ্ছে, হঠাৎ করে কাশি শুরম্ন হল এবং আমি খুবই দুর্বলতা অনুভব করছি। এ রকম কয়েকবার হবার পর আমি একজন চিকিৎসকের শরনাপন্ন হলাম, তখনই ধরা পড়ল আমি অ্যাজমাতে আক্রানত্ম।
লেখক ঃ কোন সময় আপনি অ্যাজমায় বেশি আক্রানত্ম হতেন ?
বোথাম ঃ যখন খেলাটা ঠা-া বাতাসে হত এবং সে সময় যদি আমি মুখ দিয়ে ঘনঘন শ্বাস নিই, তা হলে প্রায় অবসম্ভাবি ছিল যে, আমার একটা অ্যাজমা এ্যাটাক হতে যাচ্ছে অথবা ইংল্যান্ড যে সময়টা বাতাসে ফুলের ভাসমান পরাগ রেনু বেশী থাকে। ধরম্নন বসনত্মকাল, সে সময়টা আমি সমস্যায় পড়ে যেতাম।
লেখক ঃ আপনি নিয়মিত ইনহেলার ব্যবহার করেন, বিষয়টা কি নিরাপদ এবং কার্যকরী মনে হচ্ছে ?
বোথাম ঃ প্রথম প্রথম কিছুটা সমস্যা হত, পরবর্তীতে ইনহেলার নেয়ার পদ্ধতি ভালভাবে রপ্ত করতে পেরেছি। আসলে এটাই সবচেয়ে কার্যকরী এবং নিরাপদ ওষুধ।
লেখক ঃ মাঠে অ্যাজমা দ্বারা যাতে আক্রানত্ম না হন সে জন্য কি কি সাবধানতা করেন ?
বোথাম ঃ খেলা শুরর আগে, গা গরমের জন্য হালকা ব্যায়াম করে নিই। খেলা শুরম্নর আগে আগে ইনহেলার ব্যবহার করি। শ্বাস প্রশ্বাস মুখ দিয়ে না নিয়ে সব সময় নাক দিয়ে নেয়ার চেষ্টা করি। খেলার ফাঁকে ফাঁকে প্রয়োজনে ইনহেলার ব্যবহার করি। খেলার শেষে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিই।
লেখক ঃ যে সব শিশু অ্যাজমাতে আক্রানত্ম কিন্তু আপনার মত নামকরা ক্রিকেটার হতে চায়, তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কি ?
বোথাম ঃ নিজের অ্যাজমাকে ভালভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখ, এরপর ক্রিকেট ব্যাট হাতে নেমে যাও মাঠে।
লেখক ঃ আপনাকে ধন্যবাদ।
বোথাম ঃ আপনাকেও ধন্যবাদ।
যড়্গা রোগের লড়্গণ
বাংলাদেশে এখনও যড়্গায় আক্রানত্ম রোগীর সংখ্যার দিক দিয়ে অন্যতম ভারাক্রানত্ম দেশ। এই রোগ নিয়ন্ত্রণে সামাজিক সচেতনতা খুবই গুরম্নত্বপূর্ণ। এই রোগটি যেহেতু একটি সংক্রমণ ব্যাধি, তাই রোগটির লড়্গণ জেনে দ্রম্নত চিকিৎসা শুরম্নর মাধ্যমে রোগটির বিসত্মার রোধ করার সাথে সাথে অনেক মৃত্যু ও জটিলতা ঠেকানো সম্ভব। যড়্গা এমন একটি রোগ যা শরীরের যে কোন অংশে হতে পারে, তাবে সবচেয়ে আক্রানত্ম হয়ে থাকে মানুষের ফুসফুস। তাই এই সংক্রানত্ম লড়্গণগুলি আলোচিত হল।
1. রোগী দীর্ঘস্থায়ি কাশিতে ভুগতে থাকে। বলা হয়ে থাকে কাশি তিন সপ্তাহের বেশী স্থায়ি হলে, রোগীর উচিত তার যড়্গা হল কিনা তা জানার চেষ্টা কর। তবে ফুসফুসের আরো অনেক রোগের কারণে এমন দীর্ঘস্থায়ী কাশি হতে পারে।
2. রোগীর সন্ধ্যায় জ্বর আসে। তবে জ্বর সাধারণত মাত্রার হয়ে থাকে। এই জ্বর সাধারণত কাশির মতই দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে।
3. রোগীর খাবারের রম্নচি কমতে থাকে। সাথে সাথে রোগীর ওজনও কমতে থাকে।
4. কাশির সাথে কফ বের হয়। এই কফের সাথে প্রায়ই রক্ত মিশ্রিত থাকে।
5. রোগীরা প্রায়ই অভিযোগ করে তাদের শরীর রাতে প্রায়ই ঘামে ভিজে যায়।
উপরোলিস্নখিত লড়্গণগুলির মধ্যে একাধিক লড়্গণ বিদ্যমান থাকলে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
ইনহেলার নেওয়ার পদ্ধতি
বিভিন্ন রোগ যেমন অ্যাজমা, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসরোধক রোগ (COPD ) প্রভৃতি প্রধান ঔষধগুলি আমরা ইনহেলারের মাধ্যমে শ্বাসের সাথে বুকের মধ্যে টেনে নিই। ইনহেলার টানতে যেয়ে আমাদের অনেক সম্মানিত রোগী, ইনহেলার থেকে বের হওয়া ঔষধ খেয়ে ফেলেন, মুখে জমিয়ে রাখেন কিংবা নাক মুখ দিয়ে ঔষধ বের করে দেন, ফলে ঔষধগুলি অনেক ড়্গেত্রে কোন কাজেই আসে না।
মনে রাখতে হবে ঔষধ আমার ফুসফুসের জন্য, সুতরাং ইনহেলারের ঔষধ শ্বাসের সাথে বুকে টেনে নিতে হবে। ইনহেলার সার্বিকভাবে নেয়ার জন্য নীচের ৬টি ধাপ ক্রম অনুসারে খেয়াল করম্নন।
1. ইনহেলারটি হাতের বুড়া আগুল এবং তর্জনীর মধ্যে ছবির মত করে ধরম্নন এবং ৫ বার ভাড়াভাবে উপর নীচে ঝাঁকিয়ে নিন।
2. এর পর ইনহেলারের মুখ লাগানোর অংশের খাপটি খুলে নিই।
3. ইনহেলার মুখে লাগানোর আগে, পরিপূর্ণভাবে শ্বাস ফেলে ফুসফুস খালি করি।
4. এবার ইনহেলারটির মুখ লাগানোর অংশটি দুই ঠোট দিয়ে চেপে ধরি।
5. এর পর ইনহেলারের চাপ দেয়ার অংশে, তর্জনী দিয়ে চাপ দিই এবং চাপ দেয়অর সাথে সাথে বের হওয়া ঔষধ একই সাথে শ্বাসের সাথে বুকের গভীরে টেনে নিই।
6. টেনে নেয়া ঔষধ বুকে দশ সেকেন্ড আটকে রাখি। প্রয়োজনে ২ মিনিট পর দ্বিতীয় চাপের ঔষধ একইভাবে টেনে নিই। ইনহেলরে যদি স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ থাকে তবে ব্যবহারের পর ভালভাবে গড়গড়া করে কুলি করতে হবে।
সি.ও.পি.ডি (দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসরোধক রোগ) এর লড়্গণ
ছবিটি একজন খুবই মারাত্মকভাবে আক্রানত্ম সি.ও.পি.ডি রোগীর। এই রোগীর প্রয়োজন হয় সময় ধরে অক্সিজেন। রোগীদের মাংসেপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। রোগী সামান্যতম নিজের ব্যক্তিগত কাজ করতে যেয়ে শ্বাস কষ্টে আক্রানত্ম হয়। এক সময় হৃৎপি- তার কর্ম ড়্গমতা হারায়।
পরীড়্গার জন্য কফ দেয়ার সঠিক পদ্ধতি
যড়্গা রোগের জীবাণু দেখার জন্য কফ পরীড়্গা করতে দেয়া হয়। এর জন্য মুখের লালা দিলে কোন লাভ হবে না। কফ বের করার পদ্ধতি দেখুন। কফ দেয়ার আগে ভাল মত কুলি করে নিন। খালি পেটে কফ দেয়া ভাল।
ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে দাঁতের যত্ম নিন
আপনি হয়ত জানেন প্রধান শ্বাসণালী (trachea) এবং খাদ্যণালীর প্রধঅন ছিদ্রপথ খুব কাছাকাছি মুখ গহ্বরের পিছন দিকে অবস্থিত। সুতরাং মুখের লালা, খাদ্যকণা, জীবাণু, সময় সময় নকল দাঁত অথবা মুখের যে কোন ময়লা শুধু পেটে না প্রধান শ্বাসণালী দিয়ে চলে যেতে পারে ফুসফুসে। এই দ্রব্যগুলি ফুসফুসে যেতে বাধা দেয় দুই পাহারাদার যথা- এপিগস্নটিস (epiglotis)Ges ভোকাল কর্ড (vocal cord)| কিন্তু এরপরও মুখের তরল দ্রবীভূত কিছু অংশ চুইয়ে চুইয়ে চলে যায় ফুসফুসে। এটি বেশী ঘটে ঘুমের মধ্যে। আর খুব বেশী ঘটে কেউ যদি অজ্ঞান অবস্থায় থাকে অথবা কেউ যদি স্ট্রোকে আক্রানত্ম চুইয়ে চুইয়ে চলে যায় ফুসফুসে। এটি বেশী ঘটে ঘুমের মধ্যে। আর খুব বেশী ঘটে কেউ যদি অজ্ঞান অবস্থায় থাকে অথবা কেউ যদি স্ট্রোকে আক্রানত্ম হয় কিংবা কারো যদি খাদ্যণালীতে সমস্যা থাকে প্রভৃতি। মুখ গহ্বরে যদি ঘা থাকে, দাঁতের মারীতে যদি ইনফেকশন থাকে তবে লালাতে জীবাণুর পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়, এই অতিরিক্ত জীবাণু মিশ্রত লালা ফুসফুসে পৌঁছালে হতে পারে নিউমোনিয়া (pneumonia) অথবা ফোঁড়া (lung abscess)| তাই দাঁতের যত্ন নিলে আপনার ফুসফুসও ভালও থাকবে।
শ্বাস কষ্টের নানা কারণ
একজন রোগী, রোগের যে সব লড়্গণ নিয়ে আসে, তার মধ্যে শ্বাস কষ্টে ভোগা তাকে সবচেয়ে বেশী বিচলিত করে। আমাদের শরীরের প্রধানতম দুটি অঙ্গ যথা ফুসফুস বা হৃৎপি- আক্রানত্ম হলে মানুষ সবচেয়ে বেশি শ্বাসকষ্টে ভুগে থাকে। তবে এর বাইরে আরো অনেক কারণে রোগীরা শ্বাসকষ্টে ভুগে থাকে।
কোন রোগী শ্বাস কষ্টে ভুগতে থাকলে চিকিৎসকরা কয়েকটি জিনিস জানার চেষ্টা করেন। যেমন-
1. শ্বাস কষ্ট হঠাৎ করে শুরম্ন হয়েছে কিনা ? যেমন- হার্ট ফেউলিয়র (অর্থাৎ হৃৎপি-ের পরিমাণ মত কাজ করার অড়্গমতা), নিউমোনিয়া, ফুসফুসের বড় শ্বাসণালীগুলিতে হঠাৎ বাইরের কোন বস্তু ঢুকে যাওয়া, ফুসফুস হঠাৎ করে ফেটে যাওয়া প্রভৃতি।
2. শ্বাস কষ্ট অনেক দিন ধরে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে কিনা ? যেমন- সি.ও.পি.ডি (দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসরোধক রোগ), আই.এল.ডি (ফুসফুসের গঠণগত তন্তুর রোগ) প্রভৃতি।
3. পরিশ্রম করলে, যেমন- সিঁড়ি বেয়ে উটরে উঠলে শ্বাস কষ্ট বেড়ে যায় কিনা ? এরকমটি হয়ে থাকে যেমন- সি.ও.পি.ডি, আই.এল.ডি, রক্ত শূন্যতা কিংবা ফুসফুসের রক্তণালীর উচ্চ রক্তচাপ (পালমোনারী হাইপারটেনশন) প্রভৃতি।
4. শোয়া অবস্থায় শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় কিনা ? অনেক ড়্গেত্রে অ্যাজমা অ্যাটাক হলে বা সি.ও.পিডি রোগটি বেড়ে গেলে রোগী শুতে পারে না। তবে বিষয়টি সবচেয়ে বেশী চোখে পড়ে রোগী যদি হার্ট ফেউলুরে ভুগে।
5. চিকিৎসক আরো খেয়াল করেন, শ্বাস কষ্টের সাথে রোগী আর কোন সমস্যঅয় ভুগছেন কিনা ? যেমন-
(ক) শ্বাস কষ্টের সাথে কাশি, বুকে চাপ অনুভূত হওয়ার সাথে বুকে শব্দ হওয়া এ রকমটি হলে মনে করতে হবে রোগীটি হয়ত অ্যাজমা বা সি.ও.পি.ডি’তে ভুগছেন।
(খ) শ্বাস কষ্টের সাথে বুকে ব্যাথা থাকলে চিকিৎসকরা ভাবতে পারেন ফুসফুস ফেরে গেল কিনা ? ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রানত্ম কিনা ? তার বড় কোন ধরনের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কি না ? ফুসফুসের কোন বড় রক্তণালী জমাট রক্ত দিয়ে বন্ধ হয়ে গেল কিনা ?
(গ) শ্বাস কষ্টের সাথে জ্বর থাকলে মনে করতে হবে তার নিউমোনিয়া বা যড়্গা হল কিনা ?
6. শ্বাস কষ্টের সাথে শ্বাস নেয়ার সময় ঘড় ঘড় বা শো শো শব্দ হলে মনে করতে হবে ফুসফুসের বড় বড় শ্বাসণালীতে কোন টিউমার বা শরীরৈর বাইরের কোন বস্তু যেমন- ফলের বীচি, খাবারের অংশ ঢুকে গেছে কিনা?
7. হার্ট এবং ফুসফুস ছাড়াও আরো অনেক শারিরীক কারণে শ্বাস কষ্ট বা রোগী ঘন ঘন শ্বাস নিতে পারে। যেমন- অতিরিক্ত রক্ত শূন্যতা, কিডনী ফেইলিয়র, ডায়বেটিসের জটিলতা (ডায়বেটিক কিটো এসিডোসিস), মাংস পেশীর দুর্বলতা (মায়োপাথ্যিা) ইত্যাদি।
অ্যাজমাকে উস্কে দেয়া বস্তুগুলি পরিহার করম্নন
অ্যাজমা ট্রিগার অর্থাৎ যে জিনিস গুলি অ্যাজমা বাড়িয়ে দেয়। এই অ্যাজমা ট্রিগার এক একজনের ড়্গেত্রে এক এক রকম। আবার একজনের একাধিক ট্রিগার বা উত্তেজক বস্তু থাকতে পারে।
আপনার বাসায় যদি তেলাপোকার উৎপাত থাকে তবে তা আপনার অ্যাজমা না কমার কারণ হতে পারে। আর তেলাপোকা সেখানেই বশেী থাকে, যেখানে খাদ্য কণা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। তাই আপনার রান্না ঘর এবং খাবারের ঘর পরিষ্কার রাখার উপর, অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ নির্ভর করতে পারে।
অনেক ড়্গেত্রে ঘরে ব্যবহৃত পোকা মাকড় মারার স্প্রে কিংবা নিজ দেহে ব্যবহৃদ সুগন্ধি আপনার অ্যাজমা বেড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে। তাই প্রয়োজনে এদের ব্যবহার আপনাকে পরিহার করতে হতে পারে।
তাপমাত্রার তারতশ্যে কারো কারো অ্যাজমা বেড়ে যায। বলা হয়ে থাকে, তাপমাত্রার ওঠা নামা যদি তিনি ডিগ্রীর সেলসিয়াসের বেশি হয়, অ্যাজমা বেড়ে যেতে পারে। ধনরম্ন আপনার অফিস বা গৃহ শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত, কিন্তু বাইরে প্রচন্ড গরম, এই তারতম্য অ্যাজমা রোগীদের জন্য ভাল নয়। তাই আপনার শীতাতাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াতের উপর রাখুন। সরাসরি ঠা-া বাতাসের সংস্পর্শে কারো কারো অ্যাজমা বেড়ে যায়। তাই সরাসরি ঠা-া বাতাস গায়ে লাগানো পরিহার করম্নন।
বাতাসে ভেড়ে বেড়নো ছত্রাকের স্পোর, শ্বাসের সাথে ফুসফুসে ঢুকে গেলে অ্যাজমা বেড়ে যেতে পারে। গম এবং স্যাঁতস্যাঁতে দেয়াল এবং মেঝে পরিহার করম্নন। শুনে অবাক হবেন, বিদ্যুৎ চমকালেও কারো কারো অ্যাজমা বেড়ে যায়। বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দে ছত্রাকের বীজ ভেঙ্গে, স্পোর গুলি বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।
অধিকাংশ অ্যাজমার রোগী অভিযোগ করেন ধূলা বালির মধ্যে গেলেই তাদের শ্বাস কষ্ট হয়। এই ধূলা বালি শুধু বাইরের না বরং ঘর বাড়িতে জমে থাকা ধুলা আপনাকে আরো বেশি অপদস্থ করবে। এছাড়াও এই ধুলাবালিতে জমে থাকে মাইট নামক পোকা, যা অধিকাংশ অ্যাজমা রোগীর অ্যাজমা বাড়িয়ে দেয়ার জন্য দায়ি। তাই ঘর বাড়রি সাজ শয্যায় সাধারণ হওয়ার ভাল। ধুলা বালি কম আটকায় এরকম জিনিস পত্র বাড়িতে কম রাখুন যেমন- কার্পেট, জানালার ভারী পর্দা, সোফাসেটের নক্সাদার খবার, লোমশ উলের পুতুল (টিডি বেয়অর) প্রভৃতি। বাজারে মাইট গ্রম্নফ বালিশ পাওয়া যায়, সেটিও প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘর ঝাড়ু নি দিয়ে মুছে ফেলা ভাল। শীতের শুরম্নতে উলের গরম কাপড়, লেপ বের করতে হলে অন্যদের সাহায্য নিন। কারণ এগুলির মধ্যে প্রচুর ধুলা মাইট পোকা জমে থাকে। কাপড় ঘরের খেলা জায়গায় বা আলনায় না রেখে আলমারিতে রাখুন। এত গেল ঘরের ভিতর ধুলা কমানোর বিভিন্ন উপায় বাইরে গেলে নাক মুখে মাক্স পড়ুন। সিটি কর্পোরেশনের পড়্গ থেকে ধুলা কমানোর জন্য পানিতে ছিটাতে পারে, উন্নয়ন কাজ দ্রম্নত শেষ করতে পারে। অ্যাজমা রোগীরা ধুলা প্রবণ এলাকায় গাড়ির কাঁচ বন্ধ করে চলাচল করতে পারে। বাইরে থেকে ফিরে ভালভাবে হাত মুখ ধুয়ে নিতে পারে, যাতে শরীরে ধুলা বালি আটকে না থাকে।
আপনি যদি ধুমপানি হয়ে থাকেন, অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে অবশ্যই ধুমপান পরিহার করতে হবে। আজকাল মানুষ বিভিন্নভাবে ধূমপান করে থাকে যেমন- সিগারেট, বিড়ি হু্ক্কা, সীসা প্রভৃতি। পরোড়্গ ধূমপান অর্থা’ অন্যের সিগারেটের ধোঁয়া, আপনার শ্বাস কষ্ট বাড়িতে দিতে পারে। তাই কাছাকাছি থাকে এমন বন্ধু বান্ধব বা আত্মীয় ধূমপান নিরম্নৎসাহিত করম্নন।
যে কোন ঝাঁঝাল গন্ধ আপনার অ্যাজমা বাড়িতে দিতে পারে। ঝাঁঝাল গন্ধের উৎস হতে পার রাসায়নিক পদার্থ, ময়লার ভাগাড় এমনকি শরীরে ব্যভহৃত সুগন্ধি।
বায়ু দূষণ অ্যাজমা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। দ্রম্নত নগরায়ণের ফলে এই সমস্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশে ঘরে বাইরে বায়ু দুষণ প্রকট। ঘরের বায়ু দুষণ হয় মূলত রান্না ঘরের চুলা থাকে। চুলার ধোঁয়া রান্নাঘর থেকে সহজে বে হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকা উচিত। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যারা ব্যাসত্ম রাসত্মার পাশে বসবাস করে তাদের অ্যাজমার বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি।
অ্যাজমার বেড়ে যাওয়া আপনার মানসিক অবস্থার উপরও নির্ভর করে। অতিরিক্ত মানসিক চাপে কিংবনা ক্রোধে আপনার অ্যাজমার বেড়ে যেতে পারে। এমনকি কেউ যদি অট্টহাসিতে ফেতে পড়ে তা হলেও অ্যাজমা বেড়ে যেতে পারে।
আপনার যদি অ্যাজমা থাকে তাহলে ঘরের মধ্যে কোন পশু পাখি পালন না করাই ভাল।
কারো কারো ড়্গেত্রে শরীর চর্চা বা কায়িক পরিশ্রমে অ্যাজমা বেড়ে যায়। অনেক সময় অ্যাজমায় আক্রানত্ম বাচ্চারা, এই কারণে খেলতে অনীহা প্রকাশ করে। তবে সুনিয়ন্ত্রিত অ্যাজমা নিয়ে অনেকেই আজকে নাম করা খেলোয়াড়।
কারো কারো ড়্গেত্রে ফুলের রেণুতে অ্যাজমা বেড়ে যায়। তাই অনেক ড়্গেত্রে বসনত্মকালে অনেকেরই অ্যাজমা বেড়ে যায়। বাগান থেকে ফিরে এসে এই ধরনের ব্যাক্তিদের ভালভাবে নাক মুখ পরিষ্কার করা উচিত।
কিছু কিছু ঔষধ আপনার অ্যাজমা বাড়িতে দিতে পারে যেমন- প্রেসারের ঔষধ, ব্যাথার ঔষধ প্রভৃতি। তাই চিকিৎসকের কাছে গেলে, আপনার অ্যাজমার কথা তাকে জানান।
কিছু কিছু ড়্গেত্রে কোন কোন খাবারে কারো কারো অ্যাজমা বেড়ে যায়। তবে আমাদের দেশে এই প্রবণতা কিছুটা কম। সম্ভাব্য খাবার গুলি হল চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছ, বেগুন, বাদাম কিংবা খাবরে ব্যবহৃত প্রিজারবেটিভ ইত্যাদি। তবে অ্যাজমা হলেই যে সব খাবার গণহারে বাদ দিবেন, তার কোন মানে হয় না।
অ্যাজমাতে শ্বাসণালীর পরিবর্তন
আপনার যদি অ্যাজমা থাকে, তাহলে নীচের ছবিটি আপনার জন্য গুরম্নত্বপূর্ণ। হাতের বাঁয়ে যে ছবিটি আছে, তা একটি শ্বাসণালীর ছবি, যখন আপনার অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকে, তখন আপনার শ্বাসণালীও এরকম প্রসারিত থাকে, যার ফলে তখন কোন শ্বাস কষ্ট থাকে না। আর দ্বিতীয় ছবিটি অ্যাজমার অ্যাটাক সংঘটিত হওয়ার পর, আক্রানত্ম শ্বাসণালীর ছবি। লড়্গ করম্নন, শ্বাসণালী সংকুচিত হয়ে ভিতরে ফাঁকা অংশ কমে গেছে, এর ফলে আক্রানত্ম ব্যক্তির শ্বাস কষ্ট হয়, কাশি হয়, বুকের মধ্যে শো শো শব্দ হতে থাকে এবং রোগী বুকে চাপ অনুভব করতে থাকে।
যড়্গার ঔষধে কি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে ?
অধিকাংশ রোগী কোন প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই, যড়্গা রোগের ঔষধের কোর্স সম্পন্ন করেন। কিছু ড়্গেত্রে মাত্রার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তবে বড় ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্যিযা একে বারেই বিরল।
ঔষধ শুরম্ন করার পর রোগীর যে কারণে সবচেয়ে বেশি চিনিত্মত হয়ে পড়েন তা হল প্রসাবের রং কমলা বা লাল হওয়া। কিন্তু ব্যাপারটা একদমই weK, মূলত প্রসাব ঔষধের রং ধারণ করে। শধু প্রসাব কেন ? শরীরের ঘাম এমনকি অনেক ড়্গেত্রে চোখের পানির রং কমলা হয়ে যেতে পারে। প্রসাবের রং বিকালের পর পরিষ্কার হয়ে যায়।
কারো কারো ড়্গেত্রে ড়্গুধা মন্দা, খাবারের অরম্নচি কিংবা কখনও কখনও পেট ব্যাথা করতে পারে, সে ড়্গেত্রে খাবারের আগে খালি পেটে ঔষধ না খেয়ে, খাবারের সাথে অথবা খাবারের পর ঔষধ খেলে ভাল হয়।
শরীর বিভিন্ন গিড়ায় (অস্থি সন্ধি) গুটি কয়েক রোগীর ব্যাথা হগতে পারে। চিকিৎসকের পরমার্ম মত হালকা কিছু ঔষধ খেলেই এই সমস্যার সমাধান হয়।
কখন কখনও কারো কারো কারো পায়ে জ্বালা করতে পাড়ে, কখনও বা হতে পারে হালকা চুলকানি এর সাথে দেখা দিতে পারে চামড়ায় অ্যালার্জি জনিত সমস্যা, এতে দুঃচিনত্মার কিছু নেই, আপনার বাড়ির কাছের চিকিৎসকই এর সমাধান দিতে পারবে। তবে চামড়ার সমস্যা যদি বেশি পরিমাণে দেখা দেয় এবং কোন কোন ড়্গেত্রে যদি মুখ গহ্বরে ড়্গত দেখা দেয়া, তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
ক্যাটাগরি দুইতে ইনজেকশন নেয়ার সময়, আপনি খেয়াল করম্নন আপনি কানে কম শুনেছেন কিনা অথবা আপনার মাথা ঘুরছে কিনা, তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ঔষধ গ্রহণকালীন সময় যদি আপনার চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যায় এবং এর সাথে খাবারের অরম্নচি, বমি বমি ভাব প্রভৃতি দেখা দেয়, তাহলে মনে করতে হবে হয়ত আপনার জন্ডিস দেখা দিয়েছে (লিভার/যকৃত আক্রানত্ম হওয়া), আপনি দ্রম্নত আপনার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
নমনীয় ব্রঙ্কোসকপি করার প্রক্রিয়া
আপনার চিকিৎসক, যদি আপনাকে ব্রঙ্কোসকপি করতে বলে, তবে ঘাবড়ে যাবেন না, কারণ এটি একটি নিরাপদ পরীড়্গা। পরীড়্গাকালীন সময় কি করা হচ্ছে আপনি তা বুঝতে পারবেন এবং মনিটরের পর্দায় দেখওত পারবেন। পরীড়্গার সময় রোগীকে অজ্ঞান করা হয় না বরং প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে লোকাল এনেস্থেশিয়া ব্যবহার করা হয়, সেই কারণে পরীড়্গাটি ভালভাবে সমাপ্ত করতে আপনার সহযোগিতা একানত্ম জরম্নরী।
ব্রঙ্কোসকপি মেশিনটি সরম্ন এবং নমনীয়, সাধারণত যন্ত্রটি নাক দিয়ে প্রবেশ করানো হয়। পরীড়্গাটি শুরম্ন হওয়ার আগে আপনার চিকিৎসককে নিম্নলিখিত তথ্যগুলি দিয়ে সহযোগিতা করম্নন :-
1. আপনার অ্যাজমা, সিওপিডি অথবা অন্য যে কোন ধরনের শ্বাস কষ্টের সমস্যা আছে কিনা ?
2. আপনি কোন প্রকার হৃদরোগে ভুগছেন কিনা ?
3. কোথাও কেটে গেলে, রক্তড়্গরণের প্রবনতা রয়েছে কিনা ?
4. আপনার নাক কোন কারনে বন্ধ আছে কিনা ? ইত্যাদি।
ব্রঙ্কোসকপি করার আগে নিম্নলিখিত প্রস্তুতি থাকা জরম্নরী :-
1. ব্রঙ্কোসকপি করার পূর্বে চার ঘন্টা খালি পেটে থাকবেন এবং পরীড়্গা শেষে আরো দুই ঘন্টা কিছু খাওয়া যাবেনা।
2. Aspirin বা Clopidogrel জাতীয় ঔষধ খেয়ে থাকলে, তা পরীড়্গার পাঁচ দিন আগে বন্ধ রাখলে ভাল।
3. আপনার নাকে কোন নাকফুল অথবা মুখে কোন আলগা দাঁত থাকলে তা খুলে আসবেন।
4. পরীড়্গার সময় বুকের X-ray, ECG, CT-Scan এবং কফ পরীড়্গার রির্পোট নিয়ে আসবেন।
হাঁচিাশির সময় নাক-মুখ ঢাকুন
ফুসফুসের ফোঁড়া ও বুকে জমে থাকা পুঁজ
আমরা শরীরের উপরি ভাগে বিশেষ করে চামড়ার বিভিন্ন অংশে ফোঁড়া হতে দেখি, যেমন- থাকে টনটনে ব্যাথা তেমনি থাকে কাঁপুনিসহ বুকে ফোঁড়া হলে কিংবা পুঁজ জমলে অনেকটা এই ধরণের লড়্গণের প্রকাশ পায়।
ফুসফুসে ফোড়া হলে লড়্গণগুলি নিম্নরূপ :
1. উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর (>103 ডিগ্রী ফারেনহাইট) হয়। জ্বর শীত করে কেঁপে কেঁপে আসে।
2. কাশি হয়ে থাকে, কাশির সাথে প্রচুর কফ বের হতে থাকে। কফ হয়ে থাকে ঘন, হলুদ এবং দূর্গন্ধযুক্ত। মাঝে মাঝে কফের সাথে রক্ত আসতে পারে।
3. রোগীকে দেখতে খুবই অসুস্থ ও দুর্বল মনে হয়।
বিভিন্ন কারণে বুকে ফোঁড়া হতে পারে যেমন :-
1. নিউমোনিয়ার চিকিৎসা সময় মত করা না হলে।
2. মুখের জীবাণু যুক্ত লালা শ্বাসণালীতে চলে গেলে।
3. শ্বাসণালীতে বাইরের কোন বস্তু ঢুকে আটকে গেলে।
4. যারা তাদের শিরায় বিভিন্ন রকম নেশা জাতীয় দ্রব্য নেয়, তাদের ড়্গেত্রে বিভিন্ন জীবাণু, রক্ত দ্বারা বাহিত হয়ে ফুসফুসে যেয়ে ফোঁড়া তৈরি করতে পারে।
কাদের ফোাঁড়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশী ?
1. যাদের মুখ গহ্বর, দাঁত ও দাঁতের মারি রোগাক্রানত্ম কিংবা অপরিষ্কার।
2. যাদের ডায়বেটিস অনিয়ন্ত্রিত।
3. যাদরে পূর্ব থেকেই ড়্গতিগ্রসত্ম ফুসফুস রয়েছে, প্রভৃতি।
ফোঁড়া হতে বাঁচার উপায়-
1. মুখ গহ্বর, দাঁত ও মাড়ির যত্ম নেয়া।
2. ডায়বেটিসকে নিয়ন্ত্রণ রাখা।
3. যথাযথভাবে এবং দ্রম্নত নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নেয়া, প্রভৃতি।
ফুসফুসে ফোঁড়া হলে দীর্ঘদিন নির্ধারিত এন্টিবায়োটিকটি যথাযথ মাত্রায় মাত্রায় সেবন করতে হয়। কিছু কিছু ড়্গেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন হয় যেমন- ফোঁড়া যদি আকারে বড় হয়, ফোঁড়া যদি ফেটে যায় অথবা ফোঁড়া থেকে যদি রক্ত ড়্গরণ হয়, প্রভৃতি।
বুকে পুঁজ জমা : বুকে পুঁজ জমা বলতে বুঝায়, ফুসফুসের চারিদিকে যে আবরণী রয়েছে সেই আবরণীর দুই সত্মরের মধ্যে পুঁজ জমা। সেই ড়্গেত্রে রোগীর মধ্যে নিম্নলিখিত লড়্গণগুলি থাকতে পারে যেমন-
1. রোগীকে খুবই অসুস্থ দেখায়।
2. রোগীর প্রচন্ড জ্বর (উচ্চ তাপমাত্রা) আসতে পারে, জ্বর যখন আসে শীত করে এবং কেঁপে কেঁপে আসে।
3. পুঁজ যে পাশে জমে, সে পাশটা ভার হয়ে থাকে এবং প্রচন্ড ব্যাথা হয় এবং ব্যাথার জন্য পরিপূর্ণভাবে শ্বাস পর্যনত্ম নেয়া যায় না। শ্বাস নিতে গেলে বুকের ব্যাথা বেড়ে যায়। অনেক সময় বুকের যে পাশে পুঁজ জমে, সে পাশে কেউ স্পর্শ করলেও রোগী ব্যাথা পায়।
বিভিন্ন কারণে বুকে পুঁজ জমতে পারে, যেমন-
1. নিউমোনিয়ার জটিলতা হিসেবে।
2. ফুসফুসের ফোঁড়া ফেটে গেলে।
3. অন্য কোন কারণে ফুসফুসের পর্দায় জমে থাকা পানিতে সংক্রমণ (ইনফেকশন) হলে, প্রভৃতি।
বুকে পুঁজ জমে থাকার প্রধান চিকিৎসায় হল একটি ছোট নল লাগিয়ে দিয়ে পুঁজ বের করে ফেলা এবং যথাযথ এন্টিবায়োটিক দেয়া।
শ্বাসণালীতে কোন কিছু ঢুকে গেলে কি করণীয় ?
চিত্র : ১
হঠাৎ করে শ্বাসণালীতে বাইরের কোন বস্তু দূর্ঘটনাবসত ঢুকে যেতে পারে যে কারো। তবে এই ঘটচনার সবচেয়ে বড় শিকার হল স্কুলে যাওয়ার ঠিক আগের বয়সের শিশুরা অর্থাৎ ৪/৫ বৎসর বয়স থেকে শুরম্ন করে এর নীচের বয়সের শিশুরা। এর ফলে বাচ্চারা বিভিন্ন প্রকার শারিরীক ভোগানিত্মর হয় এবং মৃত্যুর ঘটনাও কম নয়।
আমাদের কাছে মা-বাবার যখন বাচ্চাদের নিয়ে আসেন, তখন তারা এই রকম একটি ইতিহাস দেন যে, বাচ্চা পুঁথি বা মার্বেল দিয়ে খেলছিল, হঠাৎ তা মুখে দিয়ে গিলে ফেলে (মূলত তা অধিকাংশ ড়্গেত্রে চলে যায় শ্বাসণালীতে)। আর তখন থেকেই বাচ্চা ক্রমাগত কাশি, শ্বাসকষ্ট আর বুকে ঘড় ঘড় শব্দ নিয়ে ভুগছে (চিত্র :১২)। শ্বাসাণালীতে কোন কিছু ডুকে যাওয়ার বিষয়টি যদি অভিভাবকদের দৃষ্টিগোচন না হয়, তাহলে সময়ের সাথে সাথে বাচ্চাদের ফুসফুস ক্রমাগত ড়্গতিগ্রসত্ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই পরিস্থিতিতে বাচ্চারা প্রায়ই ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রানত্ম হতে থাকে। অনেক সময় বাচ্চার গলার বসে যায়, ঘন ঘন শ্বাস নিতে থাকে প্রভৃতি।
জাতীয় বড়্গব্যাধি ইনিষ্টিটিউট ও হাসপাতালে বিভিন্ন সময় নিয়ে আসা বাচ্চাদের, যারা শ্বাসণালীতে বিভিন্ন রকম আটকে থাকা বস্তুসহ ভর্তি হয়েছে, তাদের শ্বাসণালী থেকে নিম্নলিখিত বস্তুগুলো উদ্ধার হয়েছে। যেমন- (১) বিভিন্ন রকম ফলের বীচি, চিনাবাদাম (২) আলপিন, সেফটিপিন, ছোট পেড়েক (৩) খেলনার ড়্গুদ্র অংশ (৪) কলমের বিভিন্ন অংশ (৫) মার্বেল, পুঁথি প্রভৃতি। আর বড়দের ড়্গেত্রে পাওয়া যায়, নকল দাঁত, মাংসের হাড়, সুপাড়ি ইত্যাদি।
বাইরের বস্তু যেন শ্বাসণালীতে চলে না যায়, সেই ড়্গেত্রে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নেয়া যায় যেমন-
1. চার বছরের নীচের বাচ্চাদের এমন ছোট খেলনা না দেয়া যেগুলির পুরোটা বা খন্ড বিশেষ মুখের মধ্যে বাচ্চারা ঢুকিয়ে ফেলতে পারে। যেমন- ছোট গাড়ি যেটির ছোটর ছোট চাকাও খুলে ফেলা যায়।
2. এই বয়সের নীচের বাচ্চাদের কিছু ছোট শক্ত খাবার যেমন- শক্ত চকলেট, বাদাম, ফলের বীচি প্রভৃতি না দেয়া।
3. বাচ্চাদেরকে খাবার ছোট ছোট টুকরো করে দেয়া যাতে খাবার গলায় আটকে না যায়।
4. খাবার মুখে নিয়ে বাচ্চারা যেন দৌড়া-দৌড়ি বা কথা না বলে।
5. মার্বেল, সেফটিফিন, কানের দুল, পুুঁথি, ট্যাবলেট প্রভৃতি বাচ্চাদের হাতের নাগালের বাইরে রাখা।
6. বড়রা অনেক সময় মুখে খাবার নিয়ে কিংবা ঠোট বা দাঁতের ফাঁকে বিভিন্ন জিনিস যেমন ক্লিপ, পেড়েক প্রভৃতি নিয়ে কথা বলে অথবা বিভিন্ন কাজ করে, এই অভ্যাসটি পরিহার করা।
7. যথাযথ ভাবে নকল দাঁত ব্যবহার করা, যাতে তা শ্বাসণালীতে চলে না যায়।
এক বৎসরের উপরে যাদের বয়স, তাদের ড়্গেত্রে বাইরের বস্তু শ্বাসণালীতে আটকে যেয়ে দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারি, একই সাথে যেখানে থোরাসিক সার্জনরা (মূলত তারাই ব্রোঙ্কোসকপি করি শ্বাসণালীর ভিতর থেকে বাইরের বস্তু বের করেন) কাজ করেন সে ধরনের হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
চিত্র : ২ (হেইম লিক প্রক্রিয়া)
1. এই ধরণের রোগীদের শরীরের পিছন দিক দিয়ে দুই ডানার মাঝখানে হাতের তালুর শক্ত অংশ দিয়ে ধাক্কা দিব। তখন কাশির সাথে বস্তুটি শ্বাসণালী থেকে বের হয়ে আসতে পারে। যদি বের না হয়, এই প্রক্রিয়াটি পাঁচবার অনুসরণ করব।
2. এরপরও রোগীর শ্বাসণালী পরিষ্কার না হলে, আমরা হেইম লিক প্রক্রিয়াটি (চিত্র:২) (heimlich maneuver) অনুসরণ করতে পারি। এই পদ্ধতিতে রোগীকে পিছন দিক থেকে জাপটে ধরতে হয় এবং হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নাভীর উপর হাত স্থাপন করে ঊর্ধ্বমুখী চাপ দিতে হয়। সফল না হওয়া পর্যনত্ম প্রক্রিয়াটি কমপড়্গে পাঁচবার অনুসরণ করব।
3. কোন কারণে শ্বাস বা হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেলে কৃত্রিম শ্বাস বা কার্ডিয়াক ম্যাসেজ দেয়া লাগতে পারে।
এক বৎসর বয়সের নীচের বাচ্চাদের ড়্গেত্রে আমরা নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারি। তবে এই পদ্ধতি শুরম্ন করলৈও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বিলম্ব হওয়া কাম্য নয়।
চিত্র : ৩
চিত্র : ৪
1. বাচ্চাটা যদি অজ্ঞান থাকে তবে তাকে কৃত্রিমভাবে শ্বাস এবং কার্ডিয়াক ম্যাসেজ দিতে হবে।
2. বাচ্চার যদি জ্ঞান থাকে কিন্তু বাইরের বস্তু শ্বাসণালীতে ঢুকে যাওয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট হতে থাকে, তাহলে বাচ্চাটিকে উপর করে (চিত্র : ৩) আপনার একটি বাহুর উপর নিন। বাচ্চাটির ভর সামলানোর জন্য হাতসহ বাচ্চাটিকে সেই পাশের উরম্নর উপর রাখতে পারেন। অপর অব্যবহৃত হাত দিয়ে বাচ্চার দুই ডানার মাঝখানে চাপড় দিই (চিত্র : ৪)। এভাবে পাঁচবার চাপড় দেয়ার পর বাচ্চার মুখ পরীড়্গা করে দেখুন, বস্তুটি শ্বাসণালী থেকে বের হয়ে মুখে চলে এসেছে কিনা, তাহলে আঙ্গুল দিয়ে বস্তুটি বের করে নিয়ে আসেন।
3. এরপরও বস্তুটি বের হয়ে না আসলে বাচ্চাটিকে চিৎ করে শুইয়ে বুকের মাঝখানের হাড়ের উপর পাঁচবার চাপ দিই (চিত্র : ৪) এবং খেয়াল করি শ্বাসণালীতে ঢুকে যাওয়া বস্তুটি মুখে চলে এসেছে কিনা ?
4. শ্বাসণালী থেকে বস্তুটি বের না হওয়া পর্যনত্ম একবার উপর করে আরেকবার চিৎ করে বারবার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করি এবং একই সাথে নির্দিষ্ট হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা নিতে থাকি।
যড়্গা প্রতিরোধের উপায়
বিশ্বে যতগুলি যড়্গা প্রবণ দেশ রয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। অথচ অনেক ড়্গেত্রেই এই রোগটি প্রতিরোধ যোগ্য।
1. যড়্গা প্রতিরোধের সাথে ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা জরম্নরী যেমন- যেখানে সেখানে থুথু না ফেলা, হাঁচি কাশির সময় নাক মুখ ঢাকা।
2. জন্মের পরপরই যড়্গা প্রতিরোধি বি.সি.জি টীকা নিয়ে নেয়া। এই টীকা মোটামুটি সাত বৎসর বয়স পর্যনত্ম ফুসফুস ও ফুসফুস বহির্ভূত যড়্গার বিরম্নদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি যোগায়। আমরা ভাগ্যবান এই জন্য যে এই টীকাটি আমাদের সার্বজনিন টীকা দান কর্মসূচীর মধ্যে অনত্মর্গত অর্থাৎ বাচ্চা বয়স সব টীকা দেয়া হলে থাকলে আমরা ধরে নিব তার বিসিজি টীকাটিও দেয়া হয়ে গেছে।
3. সুশৃঙ্খল জীবন যাপন, সুষম খাবার এবং পরিবেশে বসবাস যড়্গা প্রতিরোধের জন্য গুরম্নত্বপূর্ণ। একত্রে গাদাগাদি করে বসবাস যড়্গার বিসত্মার বাড়ায়। ঠিক একইভাবে পুষ্টিহীনতা যড়্গা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
4. ধূমপান, মদ্যপান কিংবা অন্য যে কোন নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করলে যড়্গা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
5. ডায়বেটিস থাকলে তা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করম্নন। অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিসে যড়্গা হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।
6. কফে যড়্গার জীবণু আছে, এরূপ রোগীকে যড়্গার ঔষধ সঠিকভাবে গ্রহণ করতে উৎসাহিত করা। কারণ তাদের মাধ্যমে মুলত রোগটি থাকে।
ফুসফুস চুপসে যাওয়ার কারণ
ফুসফুসকে তুলনা করা হয় বেলুনের সাথে। শ্বাসের সাথে বাতাস ঢুকলে এটি বুক জুড়ে ফুলে উঠে আর প্রশ্বাসের সাথে কিছুটা বাতাস বেরিয়ে গেলে এটি আয়তনের খানিকটা কমে যায়।
1. শ্বাসণালী বন্ধ হয়ে ফুসফুস চুপসে যাওয়া : বেলুনের মত ফুসফুসেরও একটি মুখ রয়েছে যেখানে দিয়ে ফুসফুসের ভিতর বাতাস ঢুকে। ফুসফুসের এই মুখে যুক্ত থাকে বৃহৎ আকৃতির শ্বাসণালী। এই শ্বাসণালী দিয়ে বাইরের পরিবেশ বাতাস টেনে নিয়ে আমরা ফুসফুসকে ফুলিয়ে রাখি। শ্বাসণালী কোন কারণে বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের ফুসফুস চুপসে যায়। শ্বাসণালী বন্ধ হয়ে যেতে পারে নানা কারণে। যেমন- এর ভিতর টিউমার হলে, কফ জমে আটকে গেলে, বাইরের কোন বস্তু শ্বাসণালীর ভিতরে যেয়ে আটকে গেলে যেমন- ফলের বীচি, নকল দাঁত প্রভৃতি। আবার শ্বাসণালীর উপর বাইরে থেকে চাপ পড়লে বিশেষ করে কোন টিউমার দিয়ে শ্বাসণালী চেপে গেলে ফুসফুস চুপসে যেতে পারে।
2. ফুসফুসকে বাইরে থেকে চাপ দিয়ে চুপসে দেয়া : বড়্গ গহ্বরে পানি, বাতাস, রক্ত কিংবা পুঁজ জমা হলে তা ফুসফুসকে চারদিক থেকে চেপে ধরে এবং এদের পরিমাণ বেশী হলে বুকের মধ্যে চাপ আরো বেড়ে যায় ফলে ফুসফুস ক্রমাগত চুপসে যেতে থাকে।
3. ড়্গতিগ্রস্থ ফুসফুস কুঁচকে যাওয়ার কারণে ফুসফুসের চুপসে যাওয়া : ফুসফুসে যড়্গা, নিউমোনিয়া কিংবা ফোঁড়া হলে ছোট বড় ড়্গতের সৃষ্টি হয়। এই সব ড়্গত সেরে গেলে তা তন্তু জাতীয় টিস্যু দ্বারা ভরাট হয়, ফলে ফুসফুসের কোন কোন জায়গা কুঁচকিয়ে যায় ফলে এর আশেপাশের কিছু অংশ চুপসে যেতে পারে।
ফুসফুস চুপসে গেলে সাধারণত শ্বাসকষ্ট হয়, অনেক ড়্গেত্রে বুকে ব্যাথা হতে পারে। এছাড়া যে সব রোগের কারণে ফুসফুস চুপসে যেয়ে থাকে, অধিকাংশ ড়্গেত্রে সে সব রোগের লড়্গণগুলি প্রকাশ পেয়ে থাকে।
ফুসফুস দীর্ঘ দিন চুপসে থাকলে সময়ের সাথে সাথে কার্যকারিতাও হারাতে থাকে। কিন্তু or:#1D2129'>সময়ের মধ্যে যদি ফুসফুসের বাইরের পানি, বাতাস কিংবা পানি চাপ অপসারণ করা যায় অথবা ফুসফুসের শ্বাসণালীর ভিতরের টিউমার অপসারণ করা যায় তাহলে ফুসফুস চুপসে যাওয়া অবস্থা থেকে অবস্থায় ফিরে আসতে পারে।
আগুনে পোড়া শ্বাসণালী
আগুনে পোড়া শ্বাসণালী যেমন রোগীর কষ্ট এবং যন্ত্রনা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয় তেমনি একইভাবে অনেক ড়্গেত্রে তাঁর চিকিৎসকগণও অসহায় হয়ে পড়েন। আগুনে পোড়া শ্বাসণালীর রোগীর চামড়ায় পোড়া ড়্গতসহ অথবা অনেক ড়্গেত্রে কোন প্রকার পোড়া ড়্গত ছাড়াও আসতে পারেন। শ্বাসণালী ড়্গতিগ্রস্থ হওয়ার এ ধরনের রোগী পরবর্তীতে সহজেই নিউমোনিয়াসহ অন্যান্য জটিলতায় আক্রানত্ম হয়ে থাকেন। আগুনে পোড়া চামড়ার ড়্গেত্রে সহজেই চোখে পড়ে, কিন্তু শ্বাসণালী পুড়ে যাওয়ার লড়্গণগুলি প্রাথমিক পর্যায়ে দেখা না দিতে পারে, অনেক ড়্গেত্রে লড়্গণগুলি দেখা দেয় ঘটনার ২৪ থেকে ৩৬ ঘন্টার পর। শরীরে পোড়াড়্গত বেশী জায়গা জুড়ে থাকলে, অনেক ড়্গেত্রেই চিকিৎসকরা আন্দাজ করে নেন, রোগীর শ্বাসণালীও হয়ত পুড়ে গেছে। আগুন লাগলে শ্বাসণালী পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে পাঁচ বৎসরের নীচের বাচ্চাদের এবং পঁচাত্তর বৎসরের অধিক বয়স্কদের।
শ্বাসণালী আগুনে কতটা ড়্গতিগ্রস্থ হয়েছে তা নির্ভর করে-
§ অগ্নিকান্ড কোন বদ্ধ জায়গা ঘটেছে কিনা ? (যেমন কাঁচ দিয়ে ঘেরা শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিতত কড়্গ)
§ অগ্নিকান্ড কোন বদ্ধ জায়গায় ঘটেছে কিনা ? (যেমন কাঁচ দিয়ে ঘেরা শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কড়্গ)
§ কতড়্গণ যাবত ব্যক্তিটি আগুন এবং ধোঁয়ার মধ্যে ছিলেন ?
§ কি ধরনের বস্তু পুড়েছে এবং তা থেকে কি ধরনের ড়্গতিকর ধোঁকা বের হয়েছে ?
§ রোগী আগে থেকে কোন শ্বাসের রোগে ভুগছে কিনা ?
§ কিভাবে আপনাপর শ্বাসণালী আগুনে ড়্গতিগ্রস্থ হতে পারে ?
মূলত তিন পদ্ধতিে শ্বাসণালী ড়্গতিগ্রস্থ হয়-
1. আগুনে উৎপন্ন তাপ দ্বারা তৈরী ড়্গত।
2. প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন বিষাক্ত গ্যাস দ্বারা শ্বাস রোধ হওয়া।
3. ধোঁয়া ফুসফুস এবং শ্বাসণালীর উত্তেজক হিসাবে কাজ করতে পারে।
1. আগুনে উৎপন্ন তাপ দ্বারা তৈরী ড়্গত : তাপের কারণের সাধারণত যে ড়্গত হয় তা মুখ গহ্বর সংলগ্ন শ্বাসের পথ (oropharynx) পর্যনত্ম সীমাবদ্ধ থাকে। তবে এর সাথে বাষ্প এবং বিস্ফোরণ যুক্ত হলে যে যেমন- কারখানার বয়লার বিস্ফোরিত হওয়া। শ্বাসণালীর ড়্গত পৌঁছে যেতে পারে ফুসফুসের গভীরে।
2. প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন বিষাক্ত গ্যাস দ্বারা শ্বাস রোধ হওয়া : প্রচুর পরিমান ধোঁয়াতে যদি শ্বাস রোধ হয়ে আসে, তাহলে তা আমাদের শরীরের কোষগুলিতে অক্সিজেনের ঘাটতি ঘটায়। অগ্নিকান্ডে স্থলে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়, তার উপর যদি, পোড়া বস্তু থেকে কার্বন মনো-অক্সাইড (CO) তৈরি হয়, তবে আমাদের শরীরের কোষগুলিতে অক্সিজেন ঘাটতিে আরো প্রকট হয়। তাছাড়া কার্বন মনো অক্সাইড হার্টের পাম্প করার ড়্গমতাও কমিয়ে দেয়। অগ্নিকান্ডের সময় যদি পস্নাষ্টিক (বিভন্ন রকম কারখানায় মজুদ থাকে), উল, সিল্ক, নাইলন, রাবার এবং কাগজ জাতীয় পদার্থ (গার্মেন্টস জাতীয় কারখানায় অধিক পরিমাণ থাকে। পুড়ে, তাহলে প্রচুর পরিমাণে সায়ানাইড তৈরি হয়। এই সায়ানাইড কার্বন মনো অক্সাইডের চেয়ে বিশ গুণ বিষয়াক্ত এবং এই পদার্থটি আক্রামনাত্মক ব্যক্তি দম বন্ধ করে দিতে পারে।
3. ধোঁয়ার কারণে শ্বাসণালী উত্তেজিত হলে, তাতে প্রদাহের সৃষ্টি হয় ও শ্বাসণালী সংকুচিত হয় এবং শ্বাসণালীর কোষগুলি হতে নি:সৃত পদার্থ দ্বারা ছোট ছোট শ্বাসণালীগুলি বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া শ্বাসণালী, ছাই জাতীয় দ্রব্যাদি দ্বারাও অনেক ড়্গেত্রে বন্দ হয়ে যেতে পারে।
একজন সাধারণ মানুষ কিভাবে বুঝবেন, আগুনে পোড়া রোগীটির শ্বাসণালী মারাত্মাকভাবে আক্রানত্ম হয়েছে ?
1. আক্রানত্ম ব্যক্তির গলার ¯^i পরিবর্তিত হয়ে যায়, অনেক ড়্গেত্রে তা কর্কশ ¯^‡i পরিণত হয়।
2. ব্যক্তি দ্রম্নত শ্বাস নিতে থাকে অর্থাৎ তার শ্বাস কষ্ট হয়।
3. ব্যক্তির জিহ্বা, হাতের নখ বা শরীরের অন্যান্য অংশ নীল বর্ণ ধারণ করে।
4. লোকটি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলতে পারে।
5. তার শ্বাসের সাথে বুকে ক্রমাগত আওয়াজ হতে থাকে।
6. তার কফের সাথে কালো কালো ছাই জাতীয় পদার্থ আসতে পারে।
§ চিকিৎসক প্রাথমিক পর্যায়ে বুকের এক্সরে রিপোর্ট ¯^vfvweK পেলেও খুশী নহ না, অনেক ড়্গেত্রেই শ্বাসণালীর পরিবর্তন গুলি আসে ২৪ থেকে ৩৬ ঘন্টার পর।
§ এছাড়াও চিকিৎসকগণ রোগীর অবস্থা বুঝার জন্য রক্তে বিভিন্ন গ্যাসের পরিমাণ দেখেন, কিডনী ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা বুঝে নেন, হার্টের অবস্থা বুঝার জন্য ই.সি.জি করে নেন, এছাড়াও শ্বাসণালীর অবস্থা সঠিকভাবে দেখার জন্য অধিকাংশ ড়্গেত্রে ব্রঙ্কোসকপি করে নেন।
একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে শ্বাসণালী পোড়া রোগীকে কিভাবে সাহায্য করতে পারেন ?
1. যত দ্রম্নত সম্ভব অগ্নিকান্ডের স্থান থেকে রোগীকে অপসারণ করে মুক্ত খোলা স্থানে নিয়ে আসেন।
2. নাক মুখে ছাই বা কিছু আটকে থাকলে তা অপসারণ করম্নন।
3. আপনি যদি রোগীর জন্য দ্রম্নত প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে পারেন, তবে নিঃসন্দেহে আপনি চিকিৎসার প্রথম ধাপ পূরণ করেছেন।
4. G¨v¤^y‡jÝ বহনের সময়ও রোগী যাতে যথেষ্ট অক্সিজেন পায় সেদিক নজর রাখুন।
5. যে সব হাসপাতালে বার্ণ ইউনিট আছে, সে সব হাসপাতালে এ সকল রোগীর জন্য সবচেয়ে ভাল চিকিৎসালয়। তবে এর সাথে খেয়াল রাখা উচিত এই সকল চিকিৎসা কেন্দ্রের নিবিড় পর্যবেড়্গণ কেন্দ্র (আ.সি.ইউ) আছে কিনা? কারণ শতকরা পঞ্চাশ ভাগ শ্বাসনালী পোড়া রোগীর কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসের যন্ত্রের প্রয়োজন হয়। এর সাথে এই সব হাসপাতালে বড়্গব্যাধি বিশেষজ্ঞ থাকলে তা হবে সোনায় সাহাগা।
6. রোগী যদি পূর্বে থেকে অ্যাজমাসহ ফুসফুসের অন্যান্য রোগে ভুগতে থাকেন, তাহলে সংশিস্নষ্ট চিকিৎসককে অবহিত করম্নন।
শ্বাসণালী পোড়া কো কোন রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি থাকা উচিৎ ?
যে সকল ব্যক্তির শ্বাসণালী আগুন এবং এর ধোঁয়া দ্বারা আক্রানত্ম হয়েছে, তাদের সবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই, তবে সাধারণ ড়্গেত্রে কম পড়্গে চার থেকে ৬ ঘন্টা চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে থাকা ভাল। নিম্ন লিখিত বিষয়গুলি রোগীর মধ্যে উপস্থিত থাকলে আক্রানত্ম ব্যক্তির হাসপাতালে ভর্তি হওয়া উচিত :
1. যদি এমন ঘটনা ঘটে, অক্সিকান্ডে একটি বদ্ধ ঘরে ঘটেছিল (যেমন আপনার শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কম্পিউটার ল্যাব) এবং আক্রানত্ম ব্যক্তিটি সেখানে দশ মিনিটের বেশী আটকে ছিলেন।
2. যদি আক্রানত্ম ব্যক্তির কাশির সাথে ঘন কালো কফ বের হয়।
3. ব্যক্তিটি যদি শ্বাস কষ্টে ভুগতে থাকেন।
4. শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে ব্যক্তিটির বুক থেকে যদি বাঁশির আওয়াজের মত শব্দ বের হতে থাকে।
5. আক্রানত্ম ব্যক্তির মুখ মন্ডল যদি পুড়ে যেয়ে থাকে।
দুর্ঘটনা পরবর্তী জটিলতা : আমেরিকার একটি গবেষণায়, সাড়ে আটশত জন দশ থেকে আঠার বৎসর বয়সি শ্বাসণালী পোড়া রোগীদের মধ্যে দেখা গেছে, সেখানে মৃত্যুর হার ১৬.৪% এবং এই ড়্গেত্রে শ্বাসণালী পোড়ার সাথে যদি চামড়ায় পোড়া ড়্গত থাকেত তাহলে মৃত্যুর হার চার গুণ বেশী। আক্রানত্মব্যক্তি ক্রমাগত সুস্থ হয়ে উঠতে থাকলেও ফুসফুস কিছু কিছু সমস্যা থেকে যেতে পারে। ড়্গতিগ্রস্থ প্রধান শ্বাসণালীগুলি স্থায়ীভাবে সরম্ন হয়ে যেতে পারে।
অপর দিকে শ্বাসণালীর কিছু কিছু অংশ ড়্গতিগ্রস্থ হয়ে এর দেয়ালের স্থিতি স্থাপকতা নষ্ট হয়ে স্থায়ীভাবে প্রসারিত (bronchiectasis) থেকে যায়। ফলে এই শ্বাসণালীগুলি ঘন ঘন জীবাণু দ্বারা আক্রানত্ম হয়।
ফুসফুসের কোন কোন অংশে প্রদাহ জনিত তরল (pulmonary edema) জমে, এর অক্সিজেন সরবরাহের ড়্গমতা কমিয়ে দেয়। আবার অনেক ড়্গেত্রে ফুসফুসের কিছু কিছু অংশ চুপশে যেয়ে (atelectasis) অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে। এছাড়া নিউমোনিয়া এবং শ্বাসতন্ত্রের বিকলতা (respiratory failure) হল এর মারাত্মক জটিলতা গুলির অন্যতম।
কিভাবে আপনি আপনার শ্বাসণালীকে অগ্নিকান্ডের সময় রড়্গা করবেন ?
1. সবচেয়ে ভাল উপায় হল, অগ্নিকান্ড প্রতিরোধ করা। আধুনিকতার নামে অনেক ড়্গেত্রে আমার আমাদের ঘর-বাড়ি, অফিস, স্কুল, মার্কেট কংক্রিট এবং কাঁদ দিয়ে ঘিরে ফেলে তথাকথিত শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত আবদ্ধ কড়্গে পরিণত করছি। এই সকল আবদ্ধ কড়্গে অগ্নিকান্ড হলে শ্বাসণালী সবচেয়ে বেশী ড়্গতিগ্রস্থ হয়। তাই সব কড়্গেই থাকা উচিৎ ¯^vfvweK বায়ু চলা চলের ব্যবস্থা। অগ্নিকান্ডের সময় সম্ভব হলে সব দরজা জানালা খুলে দিয়ে ধোঁয়া বাইরে বেরিয়ে যেতে দিন অথবা বাইরের দিকে কাঁদের দেয়াল থাকলে তা ভেঙ্গে দিয়ে ধোঁয়া বেরিয়ে যেতে দিন।
অনেক বহুতল ভবনই অগ্নিকান্ডের সময় বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে। নিচের দিকে কোন তালায় অগ্নিকান্ড হলে সবাই সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠার চেষ্টা করেন। উপরে উঠুন, তবে নিশ্চিত থাকুন। ছাদের দরজা খোলা আছে, তা না হলে আপনি ধোঁয়ার ফাঁদে আবদ্ধ হতে পারে।
2. খেয়াল রাখুন আপনার আসবাবপত্রগুলি যেন এমন বস্তু দিয়ে তৈরি হয়, যাতে তা পুড়ে গেলেও, তা থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া যেন বিষাক্ত না হয়।
3. যদি আপনার গৃহে কিংবা কারখানায় অতিরিক্ত দাহ্য পদার্থা থাকে, তবে অগ্নিকান্ডে সতর্কীকরণ এলার্ম পদ্ধতি ব্যবহার করম্নন, যা অনেক ড়্গেত্রেই প্রাণহানি কমাবে।
স্যার ইয়ান বোথামের একটি কাল্পনিক সাড়্গাৎকার
ক্রিকেট পাগল প্রায় সব মানুষেই ইয়ান বোথামকে চেনেন। যেমন- মেজাজি, তেমনি তুখোড় খেলোয়াড়। তিনি এক সময় ইংল্যান্ডের টেষ্ট দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার চেয়ে বড় কথা আজ পর্যনত্ম ক্রিকেট ইতিহাসে তিনি অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। টেষ্ট ক্রিকেটে তার রয়েছে ১৪টি শতক এবং একই সাথে ৩৮৩টি ইউকেট। আজকের সাড়্গাৎকারটিপ মূলত অ্যাজমা এবং ক্রিকেটের উপর এর প্রভাব নিয়ে। আপনারা হয়ত জেনে থাকবেন বোথাম এমন একজন জনপ্রিয় মানুষ, যিনি অ্যাজমাকে জয় করে, ক্রিকেটের অনেক সাফল্যই নিজ ঝুলিতে ভরেছেন।
লেখক ঃ আপনি কি অ্যাজমাকে কখনও ক্রিকেট ক্যারিয়ারের বাধা হিসেবে গণ্য করেছেন ?
বোথাম ঃ কখনই না। কারও যদি অ্যাজমা সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ থাকে, চাইলে সে বিশ্ব জয় করতে পারে। আপনি ডেভিড বেকহেমকেই (ইংল্যান্ড ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক) দেখেন, অ্যাজমাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, কিভাবে ফুটবলের মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছে।
লেখক ঃ কখন আপনি বুঝতে পারলেন, যে আপনি অ্যাজমায় আক্রানত্ম হয়েছেন ?
বোথাম ঃ আসলে অ্যাজমা m¤^‡Ü আগে আমার ধারণা ছিলনা। আমি লড়্গ্য করলাম ১০/১৫ মিনিট খেলার পর, বুকে চাপ অনুভব করছি, শ্বাস কষ্ট হচ্ছে, হঠাৎ করে কাশি শুরম্ন হল এবং আমি খুবই দুর্বলতা অনুভব করছি। এ রকম কয়েকবার হবার পর আমি একজন চিকিৎসকের শরনাপন্ন হলাম, তখনই ধরা পড়ল আমি অ্যাজমাতে আক্রানত্ম।
লেখক ঃ কোন সময় আপনি অ্যাজমায় বেশি আক্রানত্ম হতেন ?
বোথাম ঃ যখন খেলাটা ঠা-া বাতাসে হত এবং সে সময় যদি আমি মুখ দিয়ে ঘনঘন শ্বাস নিই, তা হলে প্রায় অবসম্ভাবি ছিল যে, আমার একটা অ্যাজমা এ্যাটাক হতে যাচ্ছে অথবা ইংল্যান্ড যে সময়টা বাতাসে ফুলের ভাসমান পরাগ রেনু বেশী থাকে। ধরম্নন বসনত্মকাল, সে সময়টা আমি সমস্যায় পড়ে যেতাম।
লেখক ঃ আপনি নিয়মিত ইনহেলার ব্যবহার করেন, বিষয়টা কি নিরাপদ এবং কার্যকরী মনে হচ্ছে ?
বোথাম ঃ প্রথম প্রথম কিছুটা সমস্যা হত, পরবর্তীতে ইনহেলার নেয়ার পদ্ধতি ভালভাবে রপ্ত করতে পেরেছি। আসলে এটাই সবচেয়ে কার্যকরী এবং নিরাপদ ওষুধ।
লেখক ঃ মাঠে অ্যাজমা দ্বারা যাতে আক্রানত্ম না হন সে জন্য কি কি সাবধানতা Aej¤^b করেন ?
বোথাম ঃ খেলা শুরর আগে, গা গরমের জন্য হালকা ব্যায়াম করে নিই। খেলা শুরম্নর আগে আগে ইনহেলার ব্যবহার করি। শ্বাস প্রশ্বাস মুখ দিয়ে না নিয়ে সব সময় নাক দিয়ে নেয়ার চেষ্টা করি। খেলার ফাঁকে ফাঁকে প্রয়োজনে ইনহেলার ব্যবহার করি। খেলার শেষে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিই।
লেখক ঃ যে সব শিশু অ্যাজমাতে আক্রানত্ম কিন্তু আপনার মত নামকরা ক্রিকেটার হতে চায়, তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কি ?
বোথাম ঃ নিজের অ্যাজমাকে ভালভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখ, এরপর ক্রিকেট ব্যাট হাতে নেমে যাও মাঠে।
লেখক ঃ আপনাকে ধন্যবাদ।
বোথাম ঃ আপনাকেও ধন্যবাদ।
যড়্গা রোগের লড়্গণ
বাংলাদেশে এখনও যড়্গায় আক্রানত্ম রোগীর সংখ্যার দিক দিয়ে অন্যতম ভারাক্রানত্ম দেশ। এই রোগ নিয়ন্ত্রণে সামাজিক সচেতনতা খুবই গুরম্নত্বপূর্ণ। এই রোগটি যেহেতু একটি সংক্রমণ ব্যাধি, তাই রোগটির লড়্গণ জেনে দ্রম্নত চিকিৎসা শুরম্নর মাধ্যমে রোগটির বিসত্মার রোধ করার সাথে সাথে অনেক মৃত্যু ও জটিলতা ঠেকানো সম্ভব। যড়্গা এমন একটি রোগ যা শরীরের যে কোন অংশে হতে পারে, তাবে সবচেয়ে আক্রানত্ম হয়ে থাকে মানুষের ফুসফুস। তাই এই সংক্রানত্ম লড়্গণগুলি আলোচিত হল।
1. রোগী দীর্ঘস্থায়ি কাশিতে ভুগতে থাকে। বলা হয়ে থাকে কাশি তিন সপ্তাহের বেশী স্থায়ি হলে, রোগীর উচিত তার যড়্গা হল কিনা তা জানার চেষ্টা কর। তবে ফুসফুসের আরো অনেক রোগের কারণে এমন দীর্ঘস্থায়ী কাশি হতে পারে।
2. রোগীর সন্ধ্যায় জ্বর আসে। তবে জ্বর সাধারণত ¯^í মাত্রার হয়ে থাকে। এই জ্বর সাধারণত কাশির মতই দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে।
3. রোগীর খাবারের রম্নচি কমতে থাকে। সাথে সাথে রোগীর ওজনও কমতে থাকে।
4. কাশির সাথে কফ বের হয়। এই কফের সাথে প্রায়ই রক্ত মিশ্রিত থাকে।
5. রোগীরা প্রায়ই অভিযোগ করে তাদের শরীর রাতে প্রায়ই ঘামে ভিজে যায়।
উপরোলিস্নখিত লড়্গণগুলির মধ্যে একাধিক লড়্গণ বিদ্যমান থাকলে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
ইনহেলার নেওয়ার পদ্ধতি
বিভিন্ন রোগ যেমন অ্যাজমা, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসরোধক রোগ (COPD ) প্রভৃতি প্রধান ঔষধগুলি আমরা ইনহেলারের মাধ্যমে শ্বাসের সাথে বুকের মধ্যে টেনে নিই। ইনহেলার টানতে যেয়ে আমাদের অনেক সম্মানিত রোগী, ইনহেলার থেকে বের হওয়া ঔষধ খেয়ে ফেলেন, মুখে জমিয়ে রাখেন কিংবা নাক মুখ দিয়ে ঔষধ বের করে দেন, ফলে ঔষধগুলি অনেক ড়্গেত্রে কোন কাজেই আসে না।
মনে রাখতে হবে ঔষধ আমার ফুসফুসের জন্য, সুতরাং ইনহেলারের ঔষধ শ্বাসের সাথে বুকে টেনে নিতে হবে। ইনহেলার সার্বিকভাবে নেয়ার জন্য নীচের ৬টি ধাপ ক্রম অনুসারে খেয়াল করম্নন।
1. ইনহেলারটি হাতের বুড়া আগুল এবং তর্জনীর মধ্যে ছবির মত করে ধরম্নন এবং ৫ বার ভাড়াভাবে উপর নীচে ঝাঁকিয়ে নিন।
2. এর পর ইনহেলারের মুখ লাগানোর অংশের খাপটি খুলে নিই।
3. ইনহেলার মুখে লাগানোর আগে, পরিপূর্ণভাবে শ্বাস ফেলে ফুসফুস খালি করি।
4. এবার ইনহেলারটির মুখ লাগানোর অংশটি দুই ঠোট দিয়ে চেপে ধরি।
5. এর পর ইনহেলারের চাপ দেয়ার অংশে, তর্জনী দিয়ে চাপ দিই এবং চাপ দেয়অর সাথে সাথে বের হওয়া ঔষধ একই সাথে শ্বাসের সাথে বুকের গভীরে টেনে নিই।
6. টেনে নেয়া ঔষধ বুকে দশ সেকেন্ড আটকে রাখি। প্রয়োজনে ২ মিনিট পর দ্বিতীয় চাপের ঔষধ একইভাবে টেনে নিই। ইনহেলরে যদি স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ থাকে তবে ব্যবহারের পর ভালভাবে গড়গড়া করে কুলি করতে হবে।
সি.ও.পি.ডি (দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসরোধক রোগ) এর লড়্গণ
ছবিটি একজন খুবই মারাত্মকভাবে আক্রানত্ম সি.ও.পি.ডি রোগীর। এই রোগীর প্রয়োজন হয় j¤^v সময় ধরে অক্সিজেন। রোগীদের মাংসেপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। রোগী সামান্যতম নিজের ব্যক্তিগত কাজ করতে যেয়ে শ্বাস কষ্টে আক্রানত্ম হয়। এক সময় হৃৎপি- তার ¯^vfvweK কর্ম ড়্গমতা হারায়।
পরীড়্গার জন্য কফ দেয়ার সঠিক পদ্ধতি
যড়্গা রোগের জীবাণু দেখার জন্য কফ পরীড়্গা করতে দেয়া হয়। এর জন্য মুখের লালা দিলে কোন লাভ হবে না। কফ বের করার পদ্ধতি দেখুন। কফ দেয়ার আগে ভাল মত কুলি করে নিন। খালি পেটে কফ দেয়া ভাল।
ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে দাঁতের যত্ম নিন
আপনি হয়ত জানেন প্রধান শ্বাসণালী (trachea) এবং খাদ্যণালীর প্রধঅন ছিদ্রপথ খুব কাছাকাছি মুখ গহ্বরের পিছন দিকে অবস্থিত। সুতরাং মুখের লালা, খাদ্যকণা, জীবাণু, সময় সময় নকল দাঁত অথবা মুখের যে কোন ময়লা শুধু পেটে না প্রধান শ্বাসণালী দিয়ে চলে যেতে পারে ফুসফুসে। এই দ্রব্যগুলি ফুসফুসে যেতে বাধা দেয় দুই পাহারাদার যথা- এপিগস্নটিস (epiglotis)Ges ভোকাল কর্ড (vocal cord)| কিন্তু এরপরও মুখের তরল দ্রবীভূত কিছু অংশ চুইয়ে চুইয়ে চলে যায় ফুসফুসে। এটি বেশী ঘটে ঘুমের মধ্যে। আর খুব বেশী ঘটে কেউ যদি অজ্ঞান অবস্থায় থাকে অথবা কেউ যদি স্ট্রোকে আক্রানত্ম চুইয়ে চুইয়ে চলে যায় ফুসফুসে। এটি বেশী ঘটে ঘুমের মধ্যে। আর খুব বেশী ঘটে কেউ যদি অজ্ঞান অবস্থায় থাকে অথবা কেউ যদি স্ট্রোকে আক্রানত্ম হয় কিংবা কারো যদি খাদ্যণালীতে সমস্যা থাকে প্রভৃতি। মুখ গহ্বরে যদি ঘা থাকে, দাঁতের মারীতে যদি ইনফেকশন থাকে তবে লালাতে জীবাণুর পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়, এই অতিরিক্ত জীবাণু মিশ্রত লালা ফুসফুসে পৌঁছালে হতে পারে নিউমোনিয়া (pneumonia) অথবা ফোঁড়া (lung abscess)| তাই দাঁতের যত্ন নিলে আপনার ফুসফুসও ভালও থাকবে।
শ্বাস কষ্টের নানা কারণ
একজন রোগী, রোগের যে সব লড়্গণ নিয়ে আসে, তার মধ্যে শ্বাস কষ্টে ভোগা তাকে সবচেয়ে বেশী বিচলিত করে। আমাদের শরীরের প্রধানতম দুটি অঙ্গ যথা ফুসফুস বা হৃৎপি- আক্রানত্ম হলে মানুষ সবচেয়ে বেশি শ্বাসকষ্টে ভুগে থাকে। তবে এর বাইরে আরো অনেক কারণে রোগীরা শ্বাসকষ্টে ভুগে থাকে।
কোন রোগী শ্বাস কষ্টে ভুগতে থাকলে চিকিৎসকরা কয়েকটি জিনিস জানার চেষ্টা করেন। যেমন-
1. শ্বাস কষ্ট হঠাৎ করে শুরম্ন হয়েছে কিনা ? যেমন- হার্ট ফেউলিয়র (অর্থাৎ হৃৎপি-ের পরিমাণ মত কাজ করার অড়্গমতা), নিউমোনিয়া, ফুসফুসের বড় শ্বাসণালীগুলিতে হঠাৎ বাইরের কোন বস্তু ঢুকে যাওয়া, ফুসফুস হঠাৎ করে ফেটে যাওয়া প্রভৃতি।
2. শ্বাস কষ্ট অনেক দিন ধরে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে কিনা ? যেমন- সি.ও.পি.ডি (দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসরোধক রোগ), আই.এল.ডি (ফুসফুসের গঠণগত তন্তুর রোগ) প্রভৃতি।
3. পরিশ্রম করলে, যেমন- সিঁড়ি বেয়ে উটরে উঠলে শ্বাস কষ্ট বেড়ে যায় কিনা ? এরকমটি হয়ে থাকে যেমন- সি.ও.পি.ডি, আই.এল.ডি, রক্ত শূন্যতা কিংবা ফুসফুসের রক্তণালীর উচ্চ রক্তচাপ (পালমোনারী হাইপারটেনশন) প্রভৃতি।
4. শোয়া অবস্থায় শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় কিনা ? অনেক ড়্গেত্রে অ্যাজমা অ্যাটাক হলে বা সি.ও.পিডি রোগটি বেড়ে গেলে রোগী শুতে পারে না। তবে বিষয়টি সবচেয়ে বেশী চোখে পড়ে রোগী যদি হার্ট ফেউলুরে ভুগে।
5. চিকিৎসক আরো খেয়াল করেন, শ্বাস কষ্টের সাথে রোগী আর কোন সমস্যঅয় ভুগছেন কিনা ? যেমন-
(ক) শ্বাস কষ্টের সাথে কাশি, বুকে চাপ অনুভূত হওয়ার সাথে বুকে শব্দ হওয়া এ রকমটি হলে মনে করতে হবে রোগীটি হয়ত অ্যাজমা বা সি.ও.পি.ডি’তে ভুগছেন।
(খ) শ্বাস কষ্টের সাথে বুকে ব্যাথা থাকলে চিকিৎসকরা ভাবতে পারেন ফুসফুস ফেরে গেল কিনা ? ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রানত্ম কিনা ? তার বড় কোন ধরনের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কি না ? ফুসফুসের কোন বড় রক্তণালী জমাট রক্ত দিয়ে বন্ধ হয়ে গেল কিনা ?
(গ) শ্বাস কষ্টের সাথে জ্বর থাকলে মনে করতে হবে তার নিউমোনিয়া বা যড়্গা হল কিনা ?
6. শ্বাস কষ্টের সাথে শ্বাস নেয়ার সময় ঘড় ঘড় বা শো শো শব্দ হলে মনে করতে হবে ফুসফুসের বড় বড় শ্বাসণালীতে কোন টিউমার বা শরীরৈর বাইরের কোন বস্তু যেমন- ফলের বীচি, খাবারের অংশ ঢুকে গেছে কিনা?
7. হার্ট এবং ফুসফুস ছাড়াও আরো অনেক শারিরীক কারণে শ্বাস কষ্ট বা রোগী ঘন ঘন শ্বাস নিতে পারে। যেমন- অতিরিক্ত রক্ত শূন্যতা, কিডনী ফেইলিয়র, ডায়বেটিসের জটিলতা (ডায়বেটিক কিটো এসিডোসিস), মাংস পেশীর দুর্বলতা (মায়োপাথ্যিা) ইত্যাদি।
অ্যাজমাকে উস্কে দেয়া বস্তুগুলি পরিহার করম্নন
অ্যাজমা ট্রিগার অর্থাৎ যে জিনিস গুলি অ্যাজমা বাড়িয়ে দেয়। এই অ্যাজমা ট্রিগার এক একজনের ড়্গেত্রে এক এক রকম। আবার একজনের একাধিক ট্রিগার বা উত্তেজক বস্তু থাকতে পারে।
আপনার বাসায় যদি তেলাপোকার উৎপাত থাকে তবে তা আপনার অ্যাজমা না কমার কারণ হতে পারে। আর তেলাপোকা সেখানেই বশেী থাকে, যেখানে খাদ্য কণা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। তাই আপনার রান্না ঘর এবং খাবারের ঘর পরিষ্কার রাখার উপর, অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ নির্ভর করতে পারে।
অনেক ড়্গেত্রে ঘরে ব্যবহৃত পোকা মাকড় মারার স্প্রে কিংবা নিজ দেহে ব্যবহৃদ সুগন্ধি আপনার অ্যাজমা বেড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে। তাই প্রয়োজনে এদের ব্যবহার আপনাকে পরিহার করতে হতে পারে।
তাপমাত্রার তারতশ্যে কারো কারো অ্যাজমা বেড়ে যায। বলা হয়ে থাকে, তাপমাত্রার ওঠা নামা যদি তিনি ডিগ্রীর সেলসিয়াসের বেশি হয়, অ্যাজমা বেড়ে যেতে পারে। ধনরম্ন আপনার অফিস বা গৃহ শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত, কিন্তু বাইরে প্রচন্ড গরম, এই তারতম্য অ্যাজমা রোগীদের জন্য ভাল নয়। তাই আপনার শীতাতাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াতের উপর রাখুন। সরাসরি ঠা-া বাতাসের সংস্পর্শে কারো কারো অ্যাজমা বেড়ে যায়। তাই সরাসরি ঠা-া বাতাস গায়ে লাগানো পরিহার করম্নন।
বাতাসে ভেড়ে বেড়নো ছত্রাকের স্পোর, শ্বাসের সাথে ফুসফুসে ঢুকে গেলে অ্যাজমা বেড়ে যেতে পারে। গম এবং স্যাঁতস্যাঁতে দেয়াল এবং মেঝে পরিহার করম্নন। শুনে অবাক হবেন, বিদ্যুৎ চমকালেও কারো কারো অ্যাজমা বেড়ে যায়। বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দে ছত্রাকের বীজ ভেঙ্গে, স্পোর গুলি বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।
অধিকাংশ অ্যাজমার রোগী অভিযোগ করেন ধূলা বালির মধ্যে গেলেই তাদের শ্বাস কষ্ট হয়। এই ধূলা বালি শুধু বাইরের না বরং ঘর বাড়িতে জমে থাকা ধুলা আপনাকে আরো বেশি অপদস্থ করবে। এছাড়াও এই ধুলাবালিতে জমে থাকে মাইট নামক পোকা, যা অধিকাংশ অ্যাজমা রোগীর অ্যাজমা বাড়িয়ে দেয়ার জন্য দায়ি। তাই ঘর বাড়রি সাজ শয্যায় সাধারণ হওয়ার ভাল। ধুলা বালি কম আটকায় এরকম জিনিস পত্র বাড়িতে কম রাখুন যেমন- কার্পেট, জানালার ভারী পর্দা, সোফাসেটের নক্সাদার খবার, লোমশ উলের পুতুল (টিডি বেয়অর) প্রভৃতি। বাজারে মাইট গ্রম্নফ বালিশ পাওয়া যায়, সেটিও প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘর ঝাড়ু নি দিয়ে মুছে ফেলা ভাল। শীতের শুরম্নতে উলের গরম কাপড়, K¤^j, লেপ বের করতে হলে অন্যদের সাহায্য নিন। কারণ এগুলির মধ্যে প্রচুর ধুলা মাইট পোকা জমে থাকে। কাপড় ঘরের খেলা জায়গায় বা আলনায় না রেখে আলমারিতে রাখুন। এত গেল ঘরের ভিতর ধুলা কমানোর বিভিন্ন উপায় বাইরে গেলে নাক মুখে মাক্স পড়ুন। সিটি কর্পোরেশনের পড়্গ থেকে ধুলা কমানোর জন্য পানিতে ছিটাতে পারে, উন্নয়ন কাজ দ্রম্নত শেষ করতে পারে। অ্যাজমা রোগীরা ধুলা প্রবণ এলাকায় গাড়ির কাঁচ বন্ধ করে চলাচল করতে পারে। বাইরে থেকে ফিরে ভালভাবে হাত মুখ ধুয়ে নিতে পারে, যাতে শরীরে ধুলা বালি আটকে না থাকে।
আপনি যদি ধুমপানি হয়ে থাকেন, অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে অবশ্যই ধুমপান পরিহার করতে হবে। আজকাল মানুষ বিভিন্নভাবে ধূমপান করে থাকে যেমন- সিগারেট, বিড়ি হু্ক্কা, সীসা প্রভৃতি। পরোড়্গ ধূমপান অর্থা’ অন্যের সিগারেটের ধোঁয়া, আপনার শ্বাস কষ্ট বাড়িতে দিতে পারে। তাই কাছাকাছি থাকে এমন বন্ধু বান্ধব বা আত্মীয় ¯^Rb‡K ধূমপান নিরম্নৎসাহিত করম্নন।
যে কোন ঝাঁঝাল গন্ধ আপনার অ্যাজমা বাড়িতে দিতে পারে। ঝাঁঝাল গন্ধের উৎস হতে পার রাসায়নিক পদার্থ, ময়লার ভাগাড় এমনকি শরীরে ব্যভহৃত সুগন্ধি।
বায়ু দূষণ অ্যাজমা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। দ্রম্নত নগরায়ণের ফলে এই সমস্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশে ঘরে বাইরে বায়ু দুষণ প্রকট। ঘরের বায়ু দুষণ হয় মূলত রান্না ঘরের চুলা থাকে। চুলার ধোঁয়া রান্নাঘর থেকে সহজে বে হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকা উচিত। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যারা ব্যাসত্ম রাসত্মার পাশে বসবাস করে তাদের অ্যাজমার বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি।
অ্যাজমার বেড়ে যাওয়া আপনার মানসিক অবস্থার উপরও নির্ভর করে। অতিরিক্ত মানসিক চাপে কিংবনা ক্রোধে আপনার অ্যাজমার বেড়ে যেতে পারে। এমনকি কেউ যদি অট্টহাসিতে ফেতে পড়ে তা হলেও অ্যাজমা বেড়ে যেতে পারে।
আপনার যদি অ্যাজমা থাকে তাহলে ঘরের মধ্যে কোন পশু পাখি পালন না করাই ভাল।
কারো কারো ড়্গেত্রে শরীর চর্চা বা কায়িক পরিশ্রমে অ্যাজমা বেড়ে যায়। অনেক সময় অ্যাজমায় আক্রানত্ম বাচ্চারা, এই কারণে খেলতে অনীহা প্রকাশ করে। তবে সুনিয়ন্ত্রিত অ্যাজমা নিয়ে অনেকেই আজকে নাম করা খেলোয়াড়।
কারো কারো ড়্গেত্রে ফুলের রেণুতে অ্যাজমা বেড়ে যায়। তাই অনেক ড়্গেত্রে বসনত্মকালে অনেকেরই অ্যাজমা বেড়ে যায়। বাগান থেকে ফিরে এসে এই ধরনের ব্যাক্তিদের ভালভাবে নাক মুখ পরিষ্কার করা উচিত।
কিছু কিছু ঔষধ আপনার অ্যাজমা বাড়িতে দিতে পারে যেমন- প্রেসারের ঔষধ, ব্যাথার ঔষধ প্রভৃতি। তাই চিকিৎসকের কাছে গেলে, আপনার অ্যাজমার কথা তাকে জানান।
কিছু কিছু ড়্গেত্রে কোন কোন খাবারে কারো কারো অ্যাজমা বেড়ে যায়। তবে আমাদের দেশে এই প্রবণতা কিছুটা কম। সম্ভাব্য খাবার গুলি হল চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছ, বেগুন, বাদাম কিংবা খাবরে ব্যবহৃত প্রিজারবেটিভ ইত্যাদি। তবে অ্যাজমা হলেই যে সব খাবার গণহারে বাদ দিবেন, তার কোন মানে হয় না।
অ্যাজমাতে শ্বাসণালীর পরিবর্তন
আপনার যদি অ্যাজমা থাকে, তাহলে নীচের ছবিটি আপনার জন্য গুরম্নত্বপূর্ণ। হাতের বাঁয়ে যে ছবিটি আছে, তা একটি ¯^vfvweK শ্বাসণালীর ছবি, যখন আপনার অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকে, তখন আপনার শ্বাসণালীও এরকম প্রসারিত থাকে, যার ফলে তখন কোন শ্বাস কষ্ট থাকে না। আর দ্বিতীয় ছবিটি অ্যাজমার অ্যাটাক সংঘটিত হওয়ার পর, আক্রানত্ম শ্বাসণালীর ছবি। লড়্গ করম্নন, শ্বাসণালী সংকুচিত হয়ে ভিতরে ফাঁকা অংশ কমে গেছে, এর ফলে আক্রানত্ম ব্যক্তির শ্বাস কষ্ট হয়, কাশি হয়, বুকের মধ্যে শো শো শব্দ হতে থাকে এবং রোগী বুকে চাপ অনুভব করতে থাকে।
যড়্গার ঔষধে কি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে ?
অধিকাংশ রোগী কোন প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই, যড়্গা রোগের ঔষধের কোর্স সম্পন্ন করেন। কিছু ড়্গেত্রে ¯^í মাত্রার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তবে বড় ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্যিযা একে বারেই বিরল।
ঔষধ শুরম্ন করার পর রোগীর যে কারণে সবচেয়ে বেশি চিনিত্মত হয়ে পড়েন তা হল প্রসাবের রং কমলা বা লাল হওয়া। কিন্তু ব্যাপারটা একদমই ¯^vfvweK, মূলত প্রসাব ঔষধের রং ধারণ করে। শধু প্রসাব কেন ? শরীরের ঘাম এমনকি অনেক ড়্গেত্রে চোখের পানির রং কমলা হয়ে যেতে পারে। প্রসাবের রং বিকালের পর পরিষ্কার হয়ে যায়।
কারো কারো ড়্গেত্রে ড়্গুধা মন্দা, খাবারের অরম্নচি কিংবা কখনও কখনও পেট ব্যাথা করতে পারে, সে ড়্গেত্রে খাবারের আগে খালি পেটে ঔষধ না খেয়ে, খাবারের সাথে অথবা খাবারের পর ঔষধ খেলে ভাল হয়।
শরীর বিভিন্ন গিড়ায় (অস্থি সন্ধি) গুটি কয়েক রোগীর ব্যাথা হগতে পারে। চিকিৎসকের পরমার্ম মত হালকা কিছু ঔষধ খেলেই এই সমস্যার সমাধান হয়।
কখন কখনও কারো কারো কারো পায়ে জ্বালা করতে পাড়ে, কখনও বা হতে পারে হালকা চুলকানি এর সাথে দেখা দিতে পারে চামড়ায় অ্যালার্জি জনিত সমস্যা, এতে দুঃচিনত্মার কিছু নেই, আপনার বাড়ির কাছের চিকিৎসকই এর সমাধান দিতে পারবে। তবে চামড়ার সমস্যা যদি বেশি পরিমাণে দেখা দেয় এবং কোন কোন ড়্গেত্রে যদি মুখ গহ্বরে ড়্গত দেখা দেয়া, তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
ক্যাটাগরি দুইতে ইনজেকশন নেয়ার সময়, আপনি খেয়াল করম্নন আপনি কানে কম শুনেছেন কিনা অথবা আপনার মাথা ঘুরছে কিনা, তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ঔষধ গ্রহণকালীন সময় যদি আপনার চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যায় এবং এর সাথে খাবারের অরম্নচি, বমি বমি ভাব প্রভৃতি দেখা দেয়, তাহলে মনে করতে হবে হয়ত আপনার জন্ডিস দেখা দিয়েছে (লিভার/যকৃত আক্রানত্ম হওয়া), আপনি দ্রম্নত আপনার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
নমনীয় ব্রঙ্কোসকপি করার প্রক্রিয়া
আপনার চিকিৎসক, যদি আপনাকে ব্রঙ্কোসকপি করতে বলে, তবে ঘাবড়ে যাবেন না, কারণ এটি একটি নিরাপদ পরীড়্গা। পরীড়্গাকালীন সময় কি করা হচ্ছে আপনি তা বুঝতে পারবেন এবং মনিটরের পর্দায় দেখওত পারবেন। পরীড়্গার সময় রোগীকে অজ্ঞান করা হয় না বরং প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে লোকাল এনেস্থেশিয়া ব্যবহার করা হয়, সেই কারণে পরীড়্গাটি ভালভাবে সমাপ্ত করতে আপনার সহযোগিতা একানত্ম জরম্নরী।
ü ব্রঙ্কোসকপি মেশিনটি সরম্ন এবং নমনীয়, সাধারণত যন্ত্রটি নাক দিয়ে প্রবেশ করানো হয়। পরীড়্গাটি শুরম্ন হওয়ার আগে আপনার চিকিৎসককে নিম্নলিখিত তথ্যগুলি দিয়ে সহযোগিতা করম্নন :-
1. আপনার অ্যাজমা, সিওপিডি অথবা অন্য যে কোন ধরনের শ্বাস কষ্টের সমস্যা আছে কিনা ?
2. আপনি কোন প্রকার হৃদরোগে ভুগছেন কিনা ?
3. কোথাও কেটে গেলে, A¯^vfvweK রক্তড়্গরণের প্রবনতা রয়েছে কিনা ?
4. আপনার নাক কোন কারনে বন্ধ আছে কিনা ? ইত্যাদি।
ü ব্রঙ্কোসকপি করার আগে নিম্নলিখিত প্রস্তুতি থাকা জরম্নরী :-
1. ব্রঙ্কোসকপি করার পূর্বে চার ঘন্টা খালি পেটে থাকবেন এবং পরীড়্গা শেষে আরো দুই ঘন্টা কিছু খাওয়া যাবেনা।
2. Aspirin বা Clopidogrel জাতীয় ঔষধ খেয়ে থাকলে, তা পরীড়্গার পাঁচ দিন আগে বন্ধ রাখলে ভাল।
3. আপনার নাকে কোন নাকফুল অথবা মুখে কোন আলগা দাঁত থাকলে তা খুলে আসবেন।
4. পরীড়্গার সময় বুকের X-ray, ECG, CT-Scan এবং কফ পরীড়্গার রির্পোট নিয়ে আসবেন।
হাঁচিাশির সময় নাক-মুখ ঢাকুন
হাঁচি কাশির সময় আপনার নাক মুখ ঢাকুন এবং অপরকেও ঢাকতে উৎসাহিত করম্নন। যড়্গা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া এমন আরো অসংখ্য বায়ু বাহিত রোগ হাঁচি কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। সবচেয়ে ভালো হল টিস্যু কাগজ ব্যবহার করা এবং পরবর্তীতে যথাস্থানে টিস্যু পেপারটি ফেলে দেয়া। টিস্যু কাগজ না থাকলে কনুই সংলগ্ন বাহুর পিছন দিক ব্যবহার করা। হাতের তালু নাক মুখ ঢাকার জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়, কাজ কর্মের জন্য হাত ব্যবহার করলে, রোগের বিসত্মার ঘটতে পারে। সঠিক সময় হাত ধুলে নিলে অসংখ্য রোগ ঠেকানো যায়।
অ্যাজমা
বেশি বিচলিত করে। আমাদের শরীরের প্রধানতম দুটি অঙ্গ যথা ফুসফুস বা হৃৎপিন্ড আক্রানত্ম হলে মানুষ সবচেয়ে বেশি শ্বাসকষ্টে ভুগে থাকে। তবে এর বাইরে আরো অনেক কারণে রোগীরা শ্বাসকষ্টে ভুগে থাকে।
কোন রোগী শ্বাস কষ্টে ভুগতে থাকলে চিকিৎসকরা কয়েকটি জিনিস জানার চেষ্টা করেন। যেমন-
1. শ্বাস কষ্ট হঠাৎ করে শুরম্ন হয়েছে কিনা ? যেমন- হার্ট ফেউলিয়র (অর্থাৎ হৃৎপিন্ডের পরিমাণ মত কাজ করার অড়্গমতা), নিউমোনিয়া, ফুসফুসের বড় শ্বাসণালীগুলিতে হঠাৎ বাইরের কোন বস্তু ঢুকে যাওয়া, ফুসফুস হঠাৎ করে ফেটে যাওয়া প্রভৃতি।
2. শ্বাস কষ্ট অনেক দিন ধরে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে কিনা ? যেমন- সিওপিডি (দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসরোধক রোগ), আইএল.ডি (ফুসফুসের গঠনতন্ত্র তন্তুর রোগ) প্রভৃতি।
3.
অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে চাই বাড়ীর উন্নত পরিবেশ
আমাদের শ্রদ্ধেয় রোগীদের অনেকেই বলে থাকেন, নিয়মিত অ্যাজমার সব ঔষধই ব্যবহার করছি তারপরও কেন বারবার অ্যাজমা বেড়ে যায় অথবা ঔষধ ব্যবহার করার পরও সমস্যঅ ঠিকমত কমতে চায়না। মনে রাখবেন শুধু ঔষধ ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ নাও থাকতে পারে। এই ড়্গেত্রে অ্যাজমাকে উস্কানি দানকারী বস্তুগুলি (asthma trigger) নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
আপনি আপনার ঘরের কথাই ধরম্নণন, অ্যাজমা বাড়িতে দিতে পারে এমন অনেক উপাদানই আপনার ঘরে বিদ্যমান বা ঐ বিষয়গুলি আপনার প্রাত্যাহিক জীবনের সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে আছে।
1. ধরম্নন আপনার ঘরে কার্পেট বিছানো আছে। ঘরের শোভা বৃদ্ধি করলেও কার্পেটে আটকিয়ে থাকে প্রচুর ধূলা এবং সেখানে বসবাস করে মাইট নামক কীট, যা আপানার অ্যাজমাকে যে কোন সময় বাড়িয়ে দিতে পারে।
2. এই রকম ধূলা আটকে থাকতে পারে বাচ্চার লোমশ পুতুলে, নকশা করা পর্দা কিংবা আসবাবের ফাঁকে ফাঁকে। সুতরাং আপনার বাড়ি যত Avo¤^inxb এবং খোলামেলা হবে, অ্যাজমা রোগীর জন্য ততই মঙ্গল।
3. আপনি যদি পশু-পাখি পালেন তাও আপনার অ্যাজমাকে বাড়িতে দিতে পারে। বিশেষভাবে তাদের লোম অথবা পালকের অংশ বিশেষ অ্যাজমার উত্তেজক হিসাবে কাজ করতে পারে।
4. আপনি নিজে অথবা বাড়ির অন্য কোন সদস্য বাড়ির ভিতরে নিয়মিত ধূমপান করেন, তাহলে কিভাবে আপনি আশা করেন আপনার কিংবা আপনার সনত্মানের অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। প্রত্যড়্গ এবং পরোড়্গ ধূমপান পরিহার করম্নন।
5. অ্যাজমাতে আক্রানত্ম হয়ে আপনি হয়ত দীর্ঘদিন যাবত কাশিতে ভুগছেন, কখনও খেয়াল করেছেন কি ? আপনি শরীরে যে স্প্রে ব্যবহার করছেন তা আপনার অ্যাজমা বাড়িয়ে দিচ্ছে কিনা ? প্রয়োজনে তা ব্যবহার করা পরিহার করম্নন।
6. ঘরের মেঝে অথবা দেয়াল স্যাঁত স্যাঁতে থাকলে অ্যাজমায় আক্রানত্ম হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। কারণ স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া জন্ম দেয়া ছত্রাকের। , এই ছত্রাকের বীজ যখন বাতাসে ভাসতে থাকে, শ্বাসণালীতে প্রবেশ করে আপনার অ্যাজমা বাড়িয়ে দিতে পারে। ঘরের এই স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ পরিহার করতে আপনি আরো কিছু ব্যবস্থা নিতে পারেন। যেমন- ঘরের ভিতর কাপড় শুকাবেন না। আপনার ঘরের বাথরম্নমের দরজাটি বন্ধ রাখুন। প্রভৃতি।
7. আপনার বাড়িটি যদি একটি ব্যাসত্ম রাসত্মার পাশে থাকে, অনেক ড়্গেত্রে তা অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। গাড়ির ধোঁয়া এবং রাসত্মার ধূলা বালি আপনার অ্যাজমা বাড়িয়ে দিতে পারে। অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ রাখতে আপনার বাড়ির ¯^v¯’¨Kvi পরিবেশ খুবই জরম্নরী। তাই নিয়মিত ঔষধ ব্যবহারের পাশাপাশি আমরা বাড়ির পরিবেশ সংক্রানত্ম বিধি বিধানগুলি মেনে চলব।
কাশির সাথে রক্ত যাওয়া
কাশির সাথে রক্ত যাওয়া, লড়্গণটি কম বেশী অনেকের কাছে পরিচিত। বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে ভয় জাগানিয়া। তাদের কাছে সবচেয়ে ভয়ের বিষয় তারা যড়্গা কিংবা ফুসফুসের ক্যান্সার আক্রানত্ম হয়েছেন কিনা !
কাশির সাথে রক্ত আসে সাধারণত ফুসফুস বা এর শ্বাসণালীর সমস্যার কারণে, এরপরও চিকিৎসকরা নিশ্চিত হয়ে নেন, কাশির সাথের রক্ত নাক বা খাদ্যণালী থেকে আসেনি।
কাশির সাথে রক্ত আসার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল ব্রংকাইটিস বা শ্বাসণালীর প্রদাহ। এই প্রদাহ হতে পারে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, পরিবশ দূষণ কিংবা ধূমপানের কারণে। আমরা বেশী চিনিত্মত হই দীর্ঘদিন ধূমপানে অভ্যসত্ম মধ্যবয়স থেকে বেশী বয়সের লোকরা যখন কাশির সাথে মাঝে মাঝে রক্ত যাওয়ার কথা বলেন। আমরা বিভিন্ন পরীড়্গার মাধ্যমে জানার চেষ্টা করি তিনি ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রানত্ম হয়েছেন কিনা ?
কাশির সাথে রক্ত আসতে পারে বিভিন্ন পরিমাণে, তবে অধিক পরিমাণে রক্ত আসতে পারে যড়্গা, ফুসফুসে ফোঁড়া কিংবা বিভিন্ন রোগে ড়্গতিগ্রস্থ (bronchiectasis) ফুসফুস থেকে।
কাশির সাথে কখনও কখনও বেশি রক্ত যেতে পারে যে, এতে বড় শ্বাসণালীগুলি রক্তে ভরে যেতে রোগী দম বন্ধ হয়ে মারা যেতে পারেন। সেই কারণে কাশি সাথে খুব বেশি রক্ত যাওয়া একটি মেডিকাল ইমার্জেন্সি। সাধারণত বলা হয়ে থাকে, যদি কাশির সাথে ২৪ ঘন্টায় ৫০০ মি.লি লিটারের বেশি রক্ত যায় তবে তাৎড়্গণিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
আপনার যদি জানা থাকে, কোন ফুসফুস (ডান/বাম) থেকে আপনার ক্ত থেকে বের হয় অথবা আপনার জানা মতে যে ফুসফুসে পুরাতন ড়্গত রয়েছে, তবে রক্ত যাওয়ার সময় সেই দিকে কাত হয়ে শুনে থাকবেন এতে ভাল ফুসফুসটির শ্বাসণালী রক্ত দিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ত পাবে। আর কোন ফুসফুস থেকে রক্ত ড়্গরণ হচ্ছে বিষয়টি যদি জানা না থাকে তাহলে শানত্মভাবে মাথা উঁচু করে শুয়ে থাকুন। অস্থির হবেন না এবং অযথা হাঁটা চলা করবেন না এতে রক্ত ড়্গরণ বেড়ে যেতে পারে।
আপনারা জেনে অবাক হবেন হার্টের রোগসহ আরো অসংখ্য রোগের কারণে কাশির সাথে রক্ত যেতে পারে। তাই এই সমস্যার সম্মুখীন হলে শীঘ্রই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
বুকের ব্যাথার নানা কারণ
বুকের ব্যাথা হলেই আমাদের ¯^vfvweK প্রবণতা থাকে, এটি হয়ত হার্টের (হৃৎপি-ের) ব্যাথা। কিন্তু আমাদের বুকে রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি অঙ্গ এবং শারীরিক কাঠামো, যাদের যে কোনটির সমস্যায় বুকে ব্যাথার সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে গুরম্নত্বপূর্ণ অংশগুলো হল ফুসফুস, ফুসফুসের পর্দা, প্রধান শ্বাসণালী (Trachea), ফুসফুসের রক্তণালী, খাদ্যণালী, হৃৎপি-ের প্রধান ধমনী, বুকের পাঁজর ও মেরম্নদন্ডের অংশ এবং এদের সাথে লাগানো মাংসপেশী।
ফুসফুসের ব্যাথা, সাধারণত বুকের দুই পাশে হয়, যেখানে হৃৎপি-ের ব্যাথা মূলত হয়ে থাকে বুকের মাঝখানে। ফুসফুস এবং এর সাথে সংশিস্নষ্ট অংশগুলির সমস্যার কারণে বুকে যে ব্যাথা হয়, তা সাধালণত কাশি বা শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের ব্যাথার সাথে কাশি ছাড়াও রোগীর কাশির সাথে কফ বা রক্ত যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, প্রভৃতি উপস্থিত থাকতে পারে। ফুসফুসের ক্যান্সার ব্যাথা সাধারণত খুব মারাত্মক আকারে দেখা দিয়ে থাকে, সব সময় এক ধরনের ধরা ধরা ভাব থাকে। নিউমোনিয়া হলে বুকের ব্যাথার সাথে জ্বর ও কাশি থাকবে। হঠাৎ করে বুকের ব্যাথা হতে পারে, কোন ফুসফুস ফুটো হয়ে বাতাস বড়্গ গহ্বরে ছড়িয়ে গেলে (pneumothorax) অথবা ফুসফুসের কোন রক্তণালী জমাট রক্ত বা অন্য কোন কিছু দ্বারা হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলে (pulmonary embolism) মনের ভয় থকে, বুকের ব্যাথার জন্য আমরা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিব কিন্তু একই সাথে বুক ব্যাথার অন্যান্য কারণগুলি মাথায় রাখতে হবে। এর মধ্যে ফুসফুস সংক্রানত্ম বুকের ব্যাথা গুরম্নত্বপূর্ণ। এই কারণে আপনার দ্বিতীয় চিকিৎসক হওয়া উচিত একজন বড়্গব্যাধি বিশেষজ্ঞ (পালমনোলজিস্ট)। ফুসফুসের রোগ নির্ণয়ে দেরী হলে, অনেক ড়্গেত্রেই ফুসফুস স্থায়িভাবে ড়্গতিগ্রস্থ হয় এমনকি মৃত্যু পর্যনত্ম হতে পারে।
নাক ডাকা কি কোন সমস্যা
নাক ডাকা কি কোন সমস্যা ? নাকি এটি সুখ নিদ্রার লড়্গণ ? আপনি সেচতন হন, নাক ডাকা আসলে ঘুমের মধ্যে শ্বাস বাঁধাপ্রাপ্ত হওয়ার লড়্গণ। তবে সব না ক ডাকাই বিপদজনক নয় বা সব নাক ডাকার চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে ছুটতে হবে না।
তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন তখনই যখন নাক ডাকার সাথে নিম্ন লিখিত লড়্গণগুলি উপস্থিত থাকে। যেমন- ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা অবস্থায়, রোগীর শ্বাস যদি বন্ধ হয়ে আসে, ফলে বার বার তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঐ ব্যক্তির যদি দিনের একটি বড় অংশে ঝিমুনিভাব থাকে অথবা গুরম্নত্বপূর্ণ কাজ যেমন- গাড়ি চালনা, মিটিং এ অংশ গ্রহণ, এই সব সময় রোগী যদি ঘুমিয়ে পড়ে, তবে অবশ্যই এই নাক ডাক্তার চিকিৎসা নিতে হবে। এই রোগটিকে বলা হয় নিদ্রাজনিত শ্বাসরোধক রোগ (obstructive sleep apnoea)|
এই ধরনের লোকেরা সাধারণত দেখতে মোটা এবং ছোট ঘাড় বিশিষ্ট হয়ে থাকে। এদের অনেকেই উচ্চ রক্তচাপ এবং বহুমূত্র (diabetes mellitus) রোগে ভুগে থাকেন। কেন এই ধরণের নাক ডাকার চিকিৎসা প্রয়োজন ? চিকিৎসা না নিলে এই সকল রোগীল উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে অনিয়ন্ত্রিতত হতে পারে স্ট্রোক, এমনকি ব্যাক্তিটি হৃদরোগে আক্রানত্ম হতে পারে। এর ফলে ফুসফুসের ধমনীতে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, রোগী অল্প পরিশ্রেেমই শ্বাস কষ্টে ভোগেন। ব্যাক্তির কর্ম দড়্গতা হ্রাস পায় এবং অনেক ড়্গেত্রে তিনি গাড়ি চালাতে যেয়ে দূর্ঘটনার ¯^xKvi হন। জেগে থাকা অবস্থঅয় আমাদর গলবিল (pharynx) কে বন্ধ বা চুপষে যাওয়া প্রতিরোধ করে কিছু মাংসপেশী। ঘুমনত্ম অবস্থায় এই সমস্যা পেশীর কার্যকারিতা হ্রাস পায়। এর ফলে নাক ডাক্তায় অভ্যসত্ম কোন কোন ব্যাক্তির গলবিল এতটাই চুপষে যায় যে ঘুমের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসে। আর এর ফলে দেখা দেয় নিদ্রাজনিত শ্বাসরোধক রোগ (obstructive sleep apnoea)|
এই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আপনাকে করাতে হবে ঘুম নিরীড়্গণ পরীড়্গা (sleep study)| এই পরীড়্গা জাতীয় বড়্গ্যব্যাধি ইনিষ্টিটিউটসহ বড় বড় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে সম্পন্ন হয়ে থাকে, এমনকি বাড়িতে বসেও এটি সম্পন্ন করা সম্ভব।
ড়্গতিকর নাক ডাক্তার চিকিৎসা নিন ভাল থাকুন।
ফুসফুসে পানি আসা
মিজান সাহেব বেশ চিনিত্মত। পনের দিন যাবত তিনি হালকা জ্বরে ভুগছেন। জ্বর না কমায, ডাক্তার সাহেব তাকে বুকের একটি এক্স-রে করতে বলেন। এক্স-রে দেখে কেউ একজন বলল আপনার ফুসফুসে পানি আছে। আসলে পানি জমে ফুসফুসের যে দুইটি আবরণী বা পর্দা আছে তার মাঝখানে। সুতরাং একে আমরা ফুসফুসের পর্দার পানি জমা সমস্যা বলতে পারি।
ফুসফুসের পর্দায় পানি আসা, এটি নির্দিষ্ট কোন রোগ নয়, বরং একটি বিভিন্ন রোগের লড়্গণ হিসাবে প্রকাশ পেয়ে থাকে। ফুসফুসের পর্দায় পানি হতে পারে পর্দার নিজস্ব রোগের কারণে, ফুসফুসের রোগের কারণ এবং ফুসফুস বহির্ভূত অন্যান্য রোগের কারণে। আমাদের দেশে ফুসফুসের পর্দায় পানি আসার অন্যতম প্রধান কারণ পর্দা কিংবা ফুসফুস যড়্গায় আক্রানত্ম হওয়া। বয়স্ক লোকদের ফুসফুসের পর্দায় পানি আসার আরেকটি গুরম্নত্বপূর্ণ লড়্গণ হল ফুসফুসের পর্দায় ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়া। বয়স্ক লোকদের ফুসফুসের পর্দায় পানি আসার আরেকটি গুরম্নত্বপূর্ণ লড়্গণ হল ফুসফুসের পর্দায় ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়া। ক্যান্সার ফুসফুস থেকে ছড়াতে পারে, আবার শরীরের অন্যান্য অংশ থেকে ছড়াতে পারে। ক্যান্সারের কারণে ফুসফুসের পর্দায় যে পানি জমে তা দেখতে অনেক ড়্গেত্রেই রক্তের মত লালহয়।
এছাড়াও নিউমোনিয়ার জটিলতা থেকে ফুসফুসে পানি আসতে পারে। নিউমোনিয়ার চিকিৎসা দেরীতে শুরম্ন হলে এই পানি অনেক ড়্গেত্রে পুঁজে পরিণত হয়। তখন পুঁজ বের করা দেয়া ছাড়া চিকিৎসকের কোন উপায় থাকে না।
বুকের এক দিকের ফুসফ্থসের পর্দায় যেমন পানি আসতে পারে ঠিক তেমনি কিছু কিছু কারণে বুকের উভয় দিকের ফুসফুসের পর্দায় পানি জমতে পারে। যাদের হার্ট বা হৃদরোগের সমস্যা আছে অথবা কিডনী/বৃক্কের সমস্যা আছে কিংবা লিভার/যকৃতের সমস্যা আছে। সাধারণত এই সকল ড়্গেত্রে উলেস্নখিত আক্রানত্ম অঙ্গগুলির চিকিৎসা নিলে, ফুসফুসের পর্দার পানি কমে আসে।
প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোন লড়্গণ থাকেনা। হালকা ব্যাথা থাকতে পারে এবং বুক ভারী ভারী লাগতে পারে। পানি বাড়তে থাকলে পরবর্তীতে শ্বাস কষ্ট দেয়া দেখা দেয়।
চিকিৎসার অংশ হিসাবে পানি বের করে পরীড়্গা করা হয়, পানি আসার কারণ জানার জন্য।
আমাদের ফুসফুসও ফাঙ্গাস (ছত্রাক) দ্বারা আক্রানত্ম হয়
ছত্রাক শুধু চামড়াতে হয়না এটা ফুসফুসকেও আক্রানত্ম হয়। ফাঙ্গাস বা ছত্রাকের বীজ এতই ছোট যা সহজে শ্বাসের সাথে ঢুকে পৌঁছে যায় ফুসফুসে। এই কারণে কারো কারো অ্যাজমা হয় অনিয়ন্ত্রত। আর যাদের রোগ প্রতিরোধ কম, তাদের হতে পারে নিউমোনিয়া, এমনকি ইনফেকশন ছড়িয়ে যেতে পারে রক্তে। গরম ও স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া পরিহার করম্নন।
ছত্রাকের বীজগুলি বাতাসের উড়ে বেড়ায়, বিশেষ করে উষ্ণ এবং স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায়। শ্বাসের সাথে ফুসফুসের ঢুকে বাসা বাধে। বিশেষ করে পূর্ব থেকে ড়্গতিগ্রসত্ম ফুসফুসে। এখানে ফুসফুসের ড়্গততে তৈরী হয়েছে ছত্রাকের বল। এর কারণ কাশি সাথে রক্ত আসতে পারে। অনেক ড়্গেত্রে ছত্রাকের ভাসমান স্পোর বা বীজের কারণে রোগীদের কাশি এবং অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
শরীরের যেসব অংশে ক্যান্সার ছড়ায়
ছবিতে দেখানো হয়েছে ফুসফুসের ক্যান্সার কোথায় কোথায় ছড়াতে পারে। যেমন- হাড়ে, মসিত্মষ্কে, লসিকা গ্রন্থি, চামড়ায়, যকৃতে, কিডনীর (বৃক্কের) উপর অ্যাডরেনাল গ্রন্থিতে, অপর ফুসফুসে অথবা একই ফুসফুসের অন্য অংশে কিংবা ফুসফুস অথবা হৃৎপি-ের পর্দায়।
যদি মসিত্মষ্কে ক্যান্সার ছড়ায় তবে রোগী জ্ঞান হারাতে পারে অথবা তাঁর খিঁচুনী হতে পারে। যদি লিভারে ছড়ায় তাহলে রোগীর জন্ডিত দেখা দিতে পারে। যদি হাড়ে ছড়ায় তাহলে রোগী সেই অংশে প্রচন্ড ব্যাথা যেমন- কোমর ব্যাথা অথবা হাড় ভাঙ্গা নিয়ে আসতে পারে। চামড়াতে ক্যান্সার ছড়ালে সেখানে হঠাৎ করে বড় বড় গোটার সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ফুসফুসের পর্দায় কিংবা হৃদপি-ের পর্দায় ক্যান্সার ছড়ালে সেখানে প্রচুর পরিমাণ পানি জমা হয়।
যড়্গার বিসত্মার প্রতিরোধ যোগ্য
মানুষের হাঁচি কাশির মাধ্যমে যে রোগুলো ছড়ায় তার মধ্যে যড়্গা অন্যতম। আপনারা নিশ্চয় জানেন পৃথিবীতে যে কয়টি দেশের মানুষ যড়্গার সবচেয়ে বেশী আক্রানত্ম হয়ে থাকে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বিশ্বের বাইশটি দেশ যড়্গা প্রবণ। সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশে প্রতি বছর নতুন করে ত্রিশ লড়্গ রোগ যড়্গা রোগ্রে আক্রানত্ম হয় এবং প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ যড়্গায় মারা যায়। যা সত্যিই আমাদের মাথা ব্যাথার কারণ।
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে আমাদের দেশে যড়্গা রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণ কি? এক কথায় বলা যায়, দারিদ্র্যতা এবং অসচেতনতা। জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে দারিদ্র্যতার সাথে বিষয়টি কিভাবে যুক্ত? অর্থনৈতিক দৈন্য দশার কারণে দেখা দেয় অপুষ্টি, বসবাসের জায়গা হয় A¯^v¯’¨Ki এবং ঘনবসতিপূর্ণ এছাড়া চিকিৎসা সেবা নেয়ার ড়্গেত্রে দেখা দেয় অনীহা।
তবে দারিদ্র্যতার বাঁধা অতিক্রম করা যেত যদি শিড়্গা এবং সচেতনতা থাকত। আমাদের একটি বড় অংশ হাঁচি কাশির সময় মুখ ঢাকেন না। ফলে তাদের হাঁচি কাশি সৃষ্ট জলকণা (droplet) বাতাসে ভাসতে থাকে এবং ছড়িয়ে যায় অনেকদূর পর্যনত্ম। এই কফ কাশির কণাগুলো আশেপাশের মানুষ শ্বাসের সাথে তাদের ফুসফুসে টেনে নেয়। তাহলে চিনত্মা করম্নণ যড়্গা রোগীর কফকাশি কতটা মারাত্মক হতে পারে। কারণ তাদের কফ-কাশির ভাসমান কণায় থাকে যড়্গা রোগের জীবাণু। তাই ফুসফুসের যড়্গায় আক্রানত্ম ব্যক্তি যদি মুখোশ না পড়েন অথবা হাচি কাশির সময় নাক মুখ না ঢাকেন তবে জেনে রাখবেন আপনি হয়ত অনেক মানুষের ড়্গতি করে চলেছেন।
আমাদের অনেকের আরেকটি খুব খারাপ অভ্যাস আছে তা হল যেখানে সেখানে থুথু ফেলা, যা অনেক দেশে দন্ডনীয় অপরাধ। যড়্গা রোগী যেখানে সেখানে থুথু ফেললে এই রোগের বিসত্মার ঘটতে পারে। তাই আসুন যড়্গা প্রতিরোধে আমরা কফ কাশির সময় আমরা নাক মুখ ঢাকার অভ্যাস গড়ে তুলি এবং যেখানে সেখানে থুথু ফেলার অভ্যাস পরিত্যাগ করি।
মনে রাখবেন আপনার থুথু আপনার জন্য বিপদজনক নয় কিন্তু অপরের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।
কৃষকদের ফুসফুসের রোগ
আমাদের দেশের কৃষক ফুসফুস অরড়্গিত রেখে কাজ করে। তাই জমিতে কাজ করার সময় শ্বাসের সাথে ঢুকে যেতে পারে বিভিন্ন ছত্রাকের বীজ, ব্যাকটেরিয়া, শস্যকণা বাতাসে ছড়িয়ে পড়া কীটনাশক এমনকি জমি থেকে উত্থিত বালি। এ ছাড়াও কৃষকদের একটি বড় অংশ ধূমপান করেন, যা উলেস্নখিত বস্তুগুলি ফুসফুসে গেলে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়, তা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও কৃষকরা ঘরের পাশেই যদি গৃহপালিত পশু লালন পালন করে, তাদের মূলমূত্র থেকে তৈরি হয় এ্যামোনিয়া এবং হাইড্রোজেন সালফাইড, যা ফুসফুসের ¯^v‡¯’¨i জন্য ড়্গতিকর।
কৃষকদের একটি অংশ পেশাগত অ্যাজমায় (occupation asthma) ভুগে থাকেন। এই ড়্গেত্রে তারা যদি নির্দিষ্ট কোন বস্তুতে সংবেদনশীল হয়ে থাকেন এবং তা যদি চাষাবাদের সময় সংস্পর্শে আসে, তবে তিনি অ্যাজমায় আক্রানত্ম হতে পারেন। দেখা যায় এই সকল ব্যক্তি, ছুটির দিনগুলিতে, হাতে যখন কাজ থাকে না, তখন বেশ ভাল থাকেন। অর্থাৎ অ্যাজমার লড়্গণগুলি যেমন কাশি, শ্বাস কষ্ট, বুকে শব্দ হওয়া প্রভৃতি থেকে ভুক্তভোগী কৃষক মুক্ত থাকেন। ধরা যাক কোন কৃষকের ধান মারাই করার সময় অ্যাজমাতে আক্রানত্ম হন। তিনি এই কাজটি সম্পূর্ণ পরিহার করতে পারেন। সেটা সম্ভব না হলে, সনাতন মারাই পদ্ধতি বাদ দিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন, এতেও অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে না আসলে ফসলের ধরণ পরিবর্তন করতে পারেন, যেমন- ধানের পরিবর্তে সব্জি চাষ করতে পারেন। তবে আধুনিক চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমৈ পেশার সাথে জড়িত অ্যাজমা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
কখনও কৃষকদের ফুসফুস (farmer’s lung) কথাটি শুনেছেন, এটাও একটা রোগের নাম, যার ফলে ফুসফুস মারাত্মকভাবে ড়্গতিগ্রসত্ম হতে পারে। এই রোগটি তাদেরই বেশী হয়, যারা জমে থাকা খড়ুকুটো, শস্যাকণা অথবা পঁচা জৈব অংশ নাড়াচাড়া করে। উদাহরণ ¯^iƒc বলা যায়, গরম্নকে জমে থাকা খড় খাওয়ানোর কাজে যারা নিয়োজিত আছে, তাদের এই রোগ হতে পারে। মূলত এই সকল বস্তুতে অবস্থিত বিভিন্ন জীবাণুর প্রতি ফুসফুসের অতিসংবেদনশীলতা (hypersensitivity) এই রোগের জন্য দায়ী এবং এই পর্যায়ে রোগী যদি চিকিৎসা নেয় এবং একই সাথে কৃষিকাজের ঐ সকল কাজ পরিহার করে, তবে কৃষকগণ এই সমস্যা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হতে পারবে। অনেক ড়্গেত্রেই কৃষকরা বুঝতেই পারেন না, কি কারণে তার এই সকল সমস্যা হচ্ছে, ফলে ক্রমাগতভাবে এই সকল শস্যকণা এবং এর মধ্যস্থ জীবাণু শ্বাসের সাথে ফুসফুসের ঢোকার কারণে তা স্থায়িভাবে ড়্গতিগ্রস্থ হচ্ছে। এই পর্যায়ে কৃষকের ফুসফুস (farmer’s lung) নামক রোগটির চিকিৎসা দুঃসাধ্য হয়ে উঠে।
একইভাবে আখের রস বের করার পর যে ছোবড়া তৈরি হয়, তাতে উৎপন্ন জীবাণু এবং ধূলার ন্যায় সূড়্গ জৈব কণা ফুসফুসে প্রবেশ করলে যে রোগ দেখা দিতে পারে তা নাম বেগাসোসিস (baggasosis)| প্রাথমিক পর্যায়ে রোগের লড়্গণ অ্যাজমার মতই, যেমন কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ অভূত হওয়া প্রভৃতি। একে ফুসফুসের আখ রোগ বলা যেতে পারে।
একইভাবে তুলা চাষীর, কাঁচা তুলা থেকে ফুসফুসের যে সমস্যা হয় তাকে বলে বাইসিনোসিস (bysinossis) । একে বলা যায় ফুসফুসের তুলা রোগ প্রত্যেকটি ড়্গেত্রে কৃষক যদি প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন, অর্থাৎ কেবল যখন কফ, কাশি, হালকা শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, তখন তাদের চিকিৎসা দেয়া সহজতর এবং একই সাথে তাদের পরামর্শ দেয়া যায় আপনি আপনার
জমিতে অন্য কোন ফসল ফলাতে পাারেন। তা সম্ভব না হলে, তিনি নাক-মুখে মুখোশ ব্যবহার করতে পারেন অথবা এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন যাতে এই সব জৈব ধূলার সংস্পর্শে কম যেতে হয়। অনকে দিন যাবত রোগে ভুগতে থাকলে ফুসফুস মারাত্মক এবং স্থায়িভাবে ড়্গতিগ্রস্থ হয়। এই পর্যায়ে ফুসফুসে বাসা বাঁধে ইন্টার ইষ্টিশিয়াল লাং ডিজিস (IlD), বাংলায় একে বলা যায় ফুসফুসের অধিক তন্তুময়তা। এর ফলে ফুসফুসের অক্সিজেন সরবরাহ ড়্গমতা কমে যায় এবং ফুসফুস কুঁকড়ে যায়। অনেক ড়্গেত্রে শ্বাসতন্ত্রের অকার্যকারিতা দেখা দিতে পারে (Respiratory failure)|
কৃষকদের ফুসফুসের ¯^v¯’¨ ভাল রাখতে হলে উপরের উলেস্নখিত ব্যবস্থা নেয়া ছাড়াও তাদের উচিত হবে ধূমপান না করা এবং ধূমপানকে নিরম্নৎসাহিত করার জন্য তমাকের চাষ না করা। গৃহপালিত পশু এবং হাঁস মুরগীর খামার বসত বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে স্থাপন করা। জমিতে কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব বালাই নাশক ব্যবহার করা এর ফলে ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে যাতে ফুসফুসের প্রতিরোধ করা যায়। বাড়িতে আদর্শ চলা বা বায়োগ্যাস ব্যবহার করতে হবে যাতে শ্বাসণালীতে প্রদাহ (bronchitis) না হয়। ¯^v¯’¨evb কৃষক দেশ এবং জাতির জন্য খুবই গুরম্নত্বপূর্ণ।
শ্বাস মেপে জেনে নিন কেমন আছে আপনার ফুসফুস
দ্রম্নত নগরায়নের ফলে বাড়ছে পরিবেশ দূষণ, তার সাথে পালস্না দিয়ে বাড়ছে শ্বাসতন্ত্রজনিত সমস্যা। শ্বাসতন্ত্রজনিত এই সকল সমস্যা বা রোগের ধরণ এবং মাত্রা জানতে বিশ্বব্যাপি যে পদ্ধতি প্রচলিত আছে তার নাম স্পাইরোমেট্রি।
নিম্নলিখিত বিষয়গুলি একজন মানুষের মধ্যে উপস্থিত থাকলে, একজন সচেতন নাগরিকের উচিৎ শীঘ্রেই স্পাইরেমেট্রি করিয়ে নেয়া যেমন-
1. আপনি যদি শ্বাসকষ্টে ভুগেন।
2. আপনি যদি দীর্ঘদিন কাশিতে ভুগেন কমপড়্গে ৩ সপ্তাহের বেশী।
3. আগের তুলনায় অল্প পরিশ্রমে আপনার দম খাটো হয়ে আসে।
4. আপনি যদি দীর্ঘদিন যাবৎ ধূমপানে অভ্যসত্ম হয়ে থাকেন।
5. আপনি যদি এমন পেশায় নিয়োজিত থাকেন যেখানে বায়ু দূষণ বেশী অথবা অন্যান্য ভাসমান কণা বেশী।
এছাড়াও আপাত: একজন সুস্থ মানুষ স্পাইরোমিট্রি করিয়ে নিতে পানে, নিজের শ্বাসতন্ত্রের সড়্গমতা জানতে, এতে অনেক সময় প্রাথমিক অবস্থায় রোগ ধরা পড়ে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে অনেক জটিলতা এড়ানো যায়।
স্পাইরোমেট্টি খুব সহজ একটি পদ্ধতি, ৪/৫ বছরের একটি বাচ্চার পড়্গেও এটি সহজে সু-সম্পন্ন করা সম্ভব। এই পরীড়্গা সম্পন্ন করার জন্য বাড়টি কোন প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না।
স্পাইরোমেট্টির মাধ্যমে মূলত আমরা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে যে আয়তনের বাতাস ছাড়ি বা গ্রহণ করি তা পরিমাপের মাধ্যমে শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের রোগ m¤^‡Ü ধারণা লাভ করতে পারি। স্পাইরোমেট্টি পদ্ধতিতে ইসিজি’র ন্যায় কাগজে নির্দিষ্ট ধরনের গ্রাফ তৈরি করা যা থেকে আপনার চিকিৎসক আপনার ফুসফুসের অবস্থা m¤^‡Ü ধারণা লাভ করেন।
যে সকল রোগ m¤^‡Ü ধারণা করে আপনার চিকিৎসক স্পাইরোমেট্রি করার পরামর্শ দেন তা হলো :
1. অ্যাজমা ও শ্বাসণালীর বিভিন্ন প্রকার প্রদাহ।
2. জন্মগত ত্রম্নটির কারণে আক্রানত্ম ফুসফুস যেমন- সিস্টিক ফাইব্রোসিস।
3. ধূমপান এবং পরিবেশ দূষণ জনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগ যেমন- সিওপিডি।
4. বিভিন্ন রোগে আক্রানত্ম সংকুচিত ফুসফুস।
5. বিভিন্ন ধরনের অপারেশনের আগে, বিশেষ করে ফুসফুস ও হার্টের অপারেশনের আগে, ইত্যাদি।
তাই আমাদের কাছে আসুন এবং স্পাইরোমেট্রি করিয়ে জেনে নিন আপনার শ্বাসতন্ত্রের ¯^v¯’¨| স্পাইরোমেট্রি সম্পর্কে জানুন, আপনার নিজের জন্য এবং আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।
যড়্গারোগের চাই দ্রম্নত সনাক্তকরণ
যড়্গা রোগ যথাযথ চিকিৎসায় ভাল হয় ঠিকই কিন্তু রোগটি সঠিক সময় ধরা না পড়লে ফুসফুসসহ অন্যান্য যে অংশে, যেমন- মেরম্নদন্ড, কিডনী, মসিত্মষ্ক, অস্থিসন্ধি প্রভৃতি খুব খারাপভাবে ড়্গতিগ্রসত্ম হতে পারে যার ফলে রোগী বাকী জীবনটা ভুগতে থাকে। অনেক ড়্গেত্রে দেরীতে চিকিৎসা শুরম্ন অথবা চিকিৎসা না করালে মৃত্যু অনিবার্য হয়ে উঠে। সবচেয়ে বিপদজনক বিষয় হল কফ কাশিতে যে সকল রোগীর যড়্গার জীবাণু আছে, ঔষধ শুরম্ন করার আগ পর্যনত্ম তারা জীবাণু ছড়াতে থাকে, ফলে অনেক সুস্থ লোক এই রোগে আক্রানত্ম হয়ে পড়ে।
শহুরে জীবনে বায়ু দূষণের প্রভাব
এক পরিসংখ্যানে বলা হয়ে থাকে পৃথিবী ব্যাপি শহুরে মানুষদের প্রতি দশ জনের নয় জনই কোন না কোনভাবে বায়ু দূষণের ¯^xKvi| এই দূষণের শিকার হয়ে শহরগুলিতে মারা যায় প্রতি বৎসর প্রায় ৩২ লড়্গ মানুষ। বায়ু দূষণের মূল উপাদান গুলি হল- (১) বাতাসের ভাসমান কণা (২) কার্বন মনো অক্সাইড (৩) সালফার ডাই অক্সাইড (৪) নাইট্রোজেন অক্সাইড (৫) ওজোন প্রভৃতি। এর মধ্যে ভাসমান কণা তৈরি হয় গাড়ির জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত তেল, গ্যাস থেকে কিংবা কারখানায় ব্যবহৃত কয়লা থেকে অথবা ইট ভাটা বা বাসায় ব্যবহৃত জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর ফলে। বাতাসে ভাসমান কণার আরেকটি বড় উৎস রাসত্মা ঘাট খনন এবং মেরামতের ফলে সৃষ্ট ধূলিকণা। যানজটের এই ঢাকা শহরে বায়ু দূষণের এই প্রত্যেকটি কারণই প্রবলভাবে বিদ্যমান।
শহরের বায়ু দূষণ সবচেয়ে ড়্গতিগ্রস্থ করে আমাদের ফুসফুসকে। আমাদের ফুসফুস নিম্নলিখিত ভাবে আক্রানত্ম হতে পারে।
1. যারা অ্যাজমার রোগী তাদের ঘন ঘন অ্যাজমার অ্যাটাক হতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে সকল অ্যাজমার রোগী শহরের বড় বড় ব্যাসত্ম রাসত্মার পাশে বসবাস করেন, তাদের ঘন ঘন অ্যাজমা অ্যাটাক হতে পারে।
2. সিওপিডি বা ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ি শ্বাসরোধক রোগের অন্যতম কারণ এই বায়ু দূষণ এবং যারা ইতমধ্যে সিওপিডিতে আক্রানত্ম, বায়ু দূষণের কবল পড়ে হঠাৎ হঠাৎ এই রোগের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে। ফলে অনেক ড়্গেত্রে তাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় আর পৃথিবীব্যাপী এই রোগে মৃত্যুর হার ক্রমাগত বাড়ছে। বলা হয়ে থাকে বর্তমান সময়ে সিওপিডি বা দীর্ঘস্থায়ি শ্বাসরোধক রোগ হল মানব জাতির মৃত্যুর তৃতীয় বৃহত্তম কারণ।
3. বায়ু দূষণ ফুসফুসের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। সারা পৃথিবীতে বায়ুদূষণের সাথে পালস্না দিয়ে বেড়ে চলেছে ফুসফুসের ক্যান্সার। একটি বিরাট সংখ্যক অধূমপায়ি জনগোষ্ঠী শুধুমাত্র বায়ু দূষণের কারণে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রানত্ম হচ্ছে। আর যারা ধূমপায়ি তাদের ক্যান্সারের আশংকা বেড়ে যাচ্ছে বহুগুণ।
4. দূষণে সবচেয়ে বেশী ড়্গতিগ্রস্থ হয় শিশুরা। দেখা গেছে বায়ু দূষণের শিকার শিশুদের মধ্যে নিউমুনিয়াতে আক্রানত্ম হওয়ার হার অনেক বেশি। সারা বৎসর এই সব শিশুদের মধ্যে শ্বাসণালীর প্রদাহজনিত কফ কাশি লেগেই থাকে। যে সব বাচ্চারা অ্যাজমাতে ভুগছে, বায়ু দূষণের কারণে তাদের অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে।
5. সিলিকোসিস বা ফুসফুসের বালুময়তা, ফুসফুসের আরেকটি গুরম্নত্বপূর্ণ রোগ যেটির সাথে বায়ু দূষণ এবং আমাদের পেশা সরাসরি জড়িত। এই রোগে বিভিন্ন কারণে সৃষ্ট বালুকণা ফুসফুসের বিভিন্ন অংশে জমা হয়। সাধারণত রাসত্মা খনন, পাথর ভাঙ্গা, ইট ভাঙ্গা প্রভৃতি কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা সাধারণত এই রোগে আক্রানত্ম হয়ে থাকেন।
হঠাৎ বন্ধ ফুসফুসের রক্তণালী
আমরা বিভিন্ন সময় শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত বন্ধ হয়ে গেলে সৃষ্ট কয়েকটি রোগ সম্পর্কে জেনে থাকতে পারি, যেমন- হার্টের কোন অংশের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়, ব্রেন বা মসিত্মষ্কের কোন অংশের রক্ত চলাচল বন্ধ হলে স্ট্রোক হয়, ঠিক তেমনি ফুসফুসরে রক্তণালী বন্ধ হয়ে গেলে তাকে আমরা বলি পালমোনারী ইনফ্রাকশন (ফুসফুস অ্যাটাক হিসেবে পরিচিতি দেয়া যায়)। এ সমস্যায় হার্ট অ্যাটাকের মত বুকে তীব্র ব্যাথা হতে পারে, এমনকি তাৎড়্গণিক মৃত্যুও হতে পারে। অন্যনা্য দেশে সমস্যাটি অহরহ আলোচনায় আসলেও, এই নিয়ে আমাদের দেশের মানুষের মথ্যে সচেতনতা কম। কিন্তু যে সব কারণে এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে তা আমাদের অনেকের মধ্যে বিদ্যমান।
এই রোগে সাধারণত ফুসফুস থেকে দুরবর্তী যেমন- পা, কোমড় কিংবা পেটে অবস্থিত কোন শিরায় তৈরি হওয়া জমাট রক্ত শিরার মধ্য দিয়ে ভেসে ভেসে এসে হৃৎপিন্ড হয়ে ফুসফুসে এসে আটকে যায় ফলে ফুসফুসের ঐ অংশের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে বিভিন্ন প্রকার লড়্গণ প্রকাশ পেতে পারে।
1. যদি ফুসফুসের মাঝারি ধরণের রক্তণালী এই জমাট বাঁধা রক্ত দিয়ে আটকে যায়, তাহলে বুকে প্রচন্ড ব্যাথা দেখা দিতে পারে। একই সাথে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট এবং বুক ধরফরানি।
2. যদি বড় ধরনের রক্তণালী বন্ধ হয়, তাহলে তাৎড়্গণিক মৃত্যুও হতে পারে।
3. যদি ড়্গুদ্রাতি ড়্গুদ্র রক্তণালী বন্ধ হয়, তাহলে দেখা দিতে পারে ফুসফুসের রক্তণালীর উচ্চরক্তচাপ। এই ধরনের রোগীরা সাধারণত অল্প পরিশ্রমেই শ্বাসকষ্ট অনুভব করে।
কাদের হাট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশী, তা আমাদের মোটামুটি সকলের জানা। ঠিক তেমনি কারা ফুসফুস অ্যাটাকের (Pulmonary infarction) ঝুঁকিতে আছে তারও একটি j¤^v তালিকা রয়েছে।
আগেই বলা হয়েছে শিরার মধ্য দিয়ে ভেসে আসা জমাট রক্তের কারণেই ফুসফুস অ্যাটাক হয়। আর এই রক্ত জমাট (embolus) তৈরি হয় আমাদের পায়ের দিকে অবস্থিত শিরাগুলিতে (Deep vein thrombosis)| শিরায় রক্ত জমাট বাঁধার ফলে এই সব রোগীর সাধারণত কোন এক পা ফোলা থাকে এবং পায়ের ফোলা অংশের চাপ দিলে যে অংশে ডেবে যায়। এভাবে কোন একটি পা ফোলা থাকলে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন কেনন আপনি ফুসফুস অ্যাটাকের ঝুঁকিতে আছেন। শিরায় রক্ত জমে পা ফুলে যেতে পারে বিভিন্ন কারণে, যেমন-
1. কোন রোগে দীর্ঘ দিন শয্যাশায়ি থাকলে।
2. দীর্ঘ ভ্রমনে একভাবে বসে থাকলে।
3. দীর্ঘ দিন যাবত গর্ভ নিরোধক পিল খেলে।
4. কোন প্রকার ক্যান্সারে আক্রানত্ম হয়ে থাকলে।
5. সিওপিডিতে আক্রানত্ম রোগীদের।
6. পায়ে কোন বড় ধরনের অপারেশন হলে। প্রভৃতি।
এর মধ্যে অনেকগুলো কারণই রয়েছে যা প্রতিরোধযোগ্য। যেমন- অসুস্থ রোগীকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাঁটা বা চলাচল করতে সাহায্য করা। যাত্রা পথে একভাবে বসে না থেকে মাঝে মাঝে পায়চারি করা। দীর্ঘ দিন জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি না খাওয়া, প্রভৃতি।
ধূমপান চালিয়ে যাওয়ার কোন কারণ থাকতে পারে না
ধূমপান বাদ দিলে মৃত্যুর কয়েকটি নিশ্চিত কারণ থেকে রড়্গা পাওয়া যায় :-
1. সিওপিডি (দীর্ঘস্থায়ী শ্বাস রোধক রোগ)।
2. ফুসফুসের ক্যান্সার।
3. হৃদরোগ।
ইতিহাস নিলে দেখা যাবে শতকরা ৭০ ভাগ লোক জীবনের কোন না কোন সময় ধূমপান ছাড়ার কথা চিনত্মা করেছে এবং শতকরা ৫০ ভাগ ধূমপায়ি, কোন না কোন সময় ধূমপান ছাড়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু অধিকাংশ সময় তারা ব্যার্থ হযেছে। এর মূল কারণ নিকোটিন যা সিগারেটের একটি অবিচ্ছেদ্য উপাদান। নিকোটিন একটি শক্তিশালী মাদক। ক্রমাগত ধূমপানের ফলে নিকোটিনের প্রতি শারীরিক এবং মানসিক আসক্তি জন্মে। সিগারেটে নিকোটিনের উপস্থিতির কারণে ধূমপান ছাড়া কষ্টাকর হয়ে উঠে, ধূমপান ছাড়া cÖjw¤^Z হয় বা অনেক ড়্গেত্রে অসফল হয়। অসফল হওয়ার অন্যতম কারণ, আসত্ম মানুষের শরীরে নিকোটিন সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে বিভিন্ন প্রকার শারিরীক A¯^w¯’ দেখা দেয়, যেমন- নিকোটিন গ্রহণ করার প্রবল শারীরিক ও মানসিক ইচ্ছা জাগে দুশ্চিনত্মা ও অস্থিরতা দেখা দেয়। অনেকে বিষন্নতায় ভুগে, কারো কারো ওজন বাড়ে প্রভৃতি। ধূমপান ছাড়ার পদ্ধতিগুলিকে মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
1. অন্য কিছুর সাহায্য না নিয়ে ¯^‡Zv:cÖ‡Yvw`Z হয়ে মূমপান ছাড়া। এই প্রক্রিয়ায় সফল হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৩ থেকে ৬ ভাগ। সুতরাং ব্যার্থতার হার অনেক বেশি।
2. কোন কিছুর সহায়তা নিয়ে ধূমপান ছাড়া। এই সহায়তা আবার দুই ধরনের- (ক) কাউন্সিলিং (ধূমপানের বিভিন্ন ড়্গতিকর দিক আলোচনা পূর্বক ধূমপান বন্ধ ককরতে উৎসাহিত করা)। (খ) ধূমপান বন্ধ সহায়ক বিভিন্ন ঔষধ ব্যবহার করা। এই ঔষধগুলি মূলত, ধূমপান বন্ধ রাখলে যে A¯^w¯’Ki লড়্গণগুলি প্রকাশ পায় তা প্রশমিত করে। যেমন- বিউপ্রিপিয়ন, ভারনিক্লাইন, সিস্টিন কিংবা নিকোটিন প্রতিস্থাপনকারী চিকিৎসা। এই গবেষণায় দেখা গেছে মনের প্রবল ইচ্ছা, যথাযথ কাউন্সিলিং এবং উপযুক্ত ঔষধ, সম্মিলিতভাবে ধূমপান ছেড়ে দেয়ার মাত্রা অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়। এই ড়্গেত্রে অসফল হওয়ার হার বেশ খানিকটা কমে আসে।
অ্যাজমা নয়, আপনি হয়ত সিওপিডিতে আক্রানত্ম
ব্যাপক প্রচারণার ফলে অ্যাজমা রোগটি এখন আমাদের অনেকের কাছে পরিচিতি। কিন্তু সিওপিডি নামক ঘাতক রোগটি সে তুলনায় ¯^í পরিচিত। অনেকে একে অ্যাজমা হিসাবে ভুলে করেন। আসুন আমরা বিশিষ্ট বড়্গব্যাধি চিকিৎসকের কাছ থেকে শুনি রোগটির বৈশিষ্ট্য এবং ব্যপকতার সম্পর্কে :-
1. COPD (সিওপিডি) বিষয়টি আমাদের কাছে নতুন, এটা আসলে কি ধরনের রোগ ?
উত্তর- বাংলাদেশসহ বিশ্বের একটি উলেস্নখযোগ্য সংখ্যার মানুষ এই রোগে আক্রানত্ম। সাধারণ মানুষের এই সংক্রানত্ম কিছু বিচ্ছিন্ন ধারণা আছে, যেমন- ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস যার অর্থ হল, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসনালীর প্রদাহ। অপরদিকে Chronic Obstructive Pulmonary Disease যার অর্থ হয় ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী শ্বাস প্রতিরোধক রোগ। মূলত সিগারেটের ধোঁয়া এবং দূষিত বাতাস, কোন ব্যক্তি শ্বাসের সাথে দীর্ঘদিন নিতে থাকলে শ্বাসনালী কিছুটা স্থায়ীভাবে সরম্ন হওয়াসহ ফুসফুসের বায়ুথলি গুলি ড়্গতিগ্রসত্ম হয়, যা ফুসফুসের বায়ু প্রবাহকে বাধাগ্রস্থ করে ফলে রোগী শ্বাস কষ্ট ও কাশিসহ দীর্ঘস্থায়ী ভোগানিত্মতে পড়ে যায়।
2. রোগটির ব্যাপকতা সম্পর্কে আমাদের ধারণা দিবেন ?
উত্তর- রোগটির ব্যাপকতা সরাসরি ধূমপানের ব্যাপকতার সাথে সম্পর্কিত। বলা হয়ে থাকে বর্তমানে পৃথিবী ব্যাপি প্রায় আট কোটি লোক মাঝারি বা খারাপ ধরনের সিওপিডি রোগে আক্রানত্ম এবং তার মধ্যে প্রায় ত্রিশ লড়্গ লোক প্রতি বৎসর এই রোগে মারা যায়, যা মোট মৃত্যুর শতকরা পাঁচ ভাগ। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন ২০২০ সাল নাগাদ এই রোগটি হবে মৃত্যুর তৃতীয় বৃহত্তম কারণ এবং এই ড়্গেত্রে এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলি সবচেয়ে বেশী ঝুঁকিতে আছে। আর এর মূল কারণই হল ক্রমবর্ধমান মূমপায়ির সংখ্যা।
3. বাংলাদেশে এই রোগটির প্রাদুর্ভাব কেমন ?
উত্তর- বলা হয়ে থাকে চলিস্নশ বৎসরের উপরে, বাংলাদেশের শতকরা বাইশ জন সিওপিডি’তে ভুগে থাকেন। সেই হিসাবে প্রায় ষাট লড়্গ মানুষ সিওপিডি’তে আক্রানত্ম আমাদের জাতীয় বড়্গব্যাধি ইনষ্টিটিউতে প্রতিদিন যে সকল রোগী ভর্তি হয় তার এক চতুর্থাংশই সিওপিডি ও এর জটিলতায় আক্রানত্ম এবং প্রতি সপ্তাহে যে সকল রোগী মারা যান তার এক তৃতীয়াংশ সিওপিডি’তে আক্রানত্ম থাকেন।
4. সিওপিডি রোগের লড়্গণগুলি কি কি ?
উত্তর- এই রোগের লড়্গণগুলি অনেকেটা অ্যাজমার মতই, প্রায়ই দেখা যায় রোগী দীর্ঘদিন ধরে কাশিতে ভুগতে থাকে, কাশির সাথে বিভিন্ন পরিমানে কফ বের হয়। রোগী পরবর্তীতে শ্বাস কষ্টে ভুগতে থাকে। শ্বাস কষ্ট ধীরে ধীরে মারাত্মক আকার ধারণ করে। প্রাথমিক পর্যায়ে ভারী কাজ করতে যেয়ে হয়রান লাগে, কিন্তু রোগ যত মারাত্মক আকার ধারণ করবে, রোগী তার দৈনন্দিন ¯^vfvweK কাজগুলি করতে যেয়েও শ্বাস কষ্টে আক্রানত্ম হবে, যেমন বাথরম্নমে যাওয়া, কাপড় পাল্টানো প্রভৃতি। অনেক ড়্গেত্রে রোগী বুকে চাপ অনুভব করে এবং শ্বাসের সাথে শব্দ হয়।
৬. সাধারণত কোন বয়সে সিওপিডি হয়ে থাকে ?
উত্তর- সাধারণ চলিস্নশ বা এক অধিক বয়সের লোকদের সিওপিডি হয়ে থাকে। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়ার সাথে সাথে এই রোগে আক্রানত্ম মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তবে কিছু কিছু ড়্গেত্রে এই রোগ চলিস্নশ বৎসরের নীচের লোকদেরও হয়ে থাকে।
5. অ্যাজমার সাথে এই রোগের পার্থক্যগুলি কি ?
উত্তর- অ্যাজমা রোগীরর কাশি, শ্বাস কষ্ট, বুকে চাপ চাপ অনুভূত হওয়া প্রভৃতি হয়, তবে লড়্গণগুলি সীমাবদ্ধ থাকে সাধারণত অ্যাজমা অ্যাটাক এর সময়, দুই অ্যাটাকের মধ্যেবর্তী সময় রোগী সম্পূর্ণভাবে লড়্গণ মুক্ত, সুস্থ ¯^vfvweK থাকতে পারে। কিন্তু সিওপিডি রোগীর সব সময় কিছু না ক্যিছু কাশি, কফ বের হওয়া বা শ্বাস কষ্টে ভুগতেই থাকেন এবং লড়্গণগুলি সময়ের সাথে ক্রমবর্ধমান। অ্যাজমার সাথে সাধারণত অন্যান্য এলার্জি জনিত সমস্যা গুলিতে রোগী ভুগতে থাকে যেমন এলার্জি জনিত সর্দি, হাঁচি, চোখ ও চামড়ার সমস্যা প্রভৃতি। তবে সিওপিডি’তে এ ধরনের এলার্জি জনিতে সমস্যাগুলি অনুপস্থিত। অ্যাজমা যে কোন বয়সে আপনাকে আক্রানত্ম করতে পারে, কিন্তু সিওপিডি সাধারণত আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে চলিস্নশের পরে। নিয়ন্ত্রিত অ্যাজমায় ভোগানিত্ম এবং মৃত্যু হার খুবই কম। কিন্তু সিওপিডি’দে ভোগানিত্ম ক্রমবর্ধমানভাবে বাড়তে থাকে এবং বিশ্বব্যাপি এই রোগে মৃত্যু হার অনেক বেশি।
6. সিওপিডি কি কি কারণে হয়ে থাকে ?
উত্তর- শতকরা নব্বই ভাগ ড়্গেত্রে এটা ধূমপায়ীদের রোগ। এছাড়া অন্যান্য কারণ গুলির মধ্যে রয়েছে, আমরা যদি রান্নার চুলার জ্বালানি হিসাবে লাকড়ি, শুকনা গোবর, খড় কুটো কিংবা কয়লা ব্যবহার করি, এর থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া সিওপিডি রোগের অন্যতম কারণ। বাড়ির বাইরের এবং ভিতরের বায়ু দূষণ এই রোগ হওয়ার ড়্গেত্রে উলেস্নখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। কম ওজনের বাচ্চা জন্ম নিলে তাদের সিওপিডি হওয়ার সম্ভবনা বেশী, এর কারণ হল প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় এদের ফুসফুস পূর্ণ মাত্রায় বিকশিত হতে পারে না। এছাড়া ফুসফুসরে পূর্ণ বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়। বাচ্চা যদি ছোট বেলায় ঘন ঘন শ্বাসনালীর সংক্রমনের শিকার হয়, কিংবা বাচ্চার মা যদি ধূমপানে অভ্যসত্ম হয়ে থাকেন, তবে তাও বাচ্চার ফুসফুসের বৃদ্ধিকে বাধাগ্রসত্ম করে। বলা হয়েছে দুর্বল আর্থ-সামাজিক অবস্থা সিওপিডি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়, এড়্গেত্রে পুষ্টি হীনতাই মূল কারণ। ধূমপান ছাড়াও আমাদের সমাজের কিছু লোক শ্বাসের সাথে কিছু ড়্গতিকারক নেশা জাতীয় বস্তু গ্রহণ করে থাকে, যেমন- গাজা। এরা খুব দ্রম্নতই সিওপিডি’তে আক্রানত্ম হতে পারে।
7. এই রোগে পুরম্নষ নাকি মহিলারা বেশি আক্রানত্ম হয় ?
উত্তর- এক সময় আমাদের চিকিৎসকদেরও ধারণা ছিল, সিওপিডি হয় ত শুধুমাত্র পুরম্নষদের রোগ। সে ধারণা দ্রম্নত ভুল প্রমাণিত হয়েছে। মহিলারাও সমভাবে এই রোগে আক্রানত্ম হতে পারে। পুরম্নষ মূমপায়ীদের মত আমাদের দেশে মহিলা ধূমপায়ীদের সংখ্যা বাড়ছে, সে জন্য ভবিষ্যতে আমরা অধিক হারে মহিলা সিওপিডি রোগী পেতে পারি। এছাড়াও একটি উলেস্নখযোগ্য সংখ্যক মহিলা ধূমপান না করেও কেবল মাত্র অসচেতনতার কারণ সিওপিডি রোগে আক্রানত্ম হচ্ছেন। এর মূল কারণ বাড়ির আভ্যনত্মরিন পরিবেশ দূষণ এবং এই দূষণ বেশির ভাগ ড়্গেত্রে হয়ে থাকে বাড়ির চুলার ধোঁয়া থাকে। বিশেষ করে চুলার জ্বালানী হিসাবে যদি খড়ি, খড়-কুটো, কয়লা বা শুকনো গোবর ব্যবহার করা হয়।
8. সিওপিডি’তে শুধু কি ফুসফুসই আক্রানত্ম হয়, নাকি শরীরের অন্যান্য অংশ আক্রানত্ম হতে পারে ?
উত্তর- সিওপিডি শুধু ফুসফুসেই সীমাবদ্ধ না, এতে শরীরের অন্যান্য অংশ আক্রানত্ম হতে পারে। যেমন অনেক ড়্গেত্রেই শরীরের মাংসপেশী এবং হাড় দুর্বল হয়ে যায়। অনেক ড়্গেত্রে কিডনীতে অক্সিজেনের অভাব ঘটলে শরীরে পানি জমতে থাকে ফলে অনেক রোগী পা ফোলাসহ চিকিৎসকের কাছে আসেন। দীর্ঘস্থায়ী সিওপডি’তে আক্রানত্ম ফুসফুসের ভিতরকার রক্তণালীগুলিতে চাপ বেড়ে যায় ফলে তার হৃৎপিন্ডতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, এক সময় হৃদপিন্ড তার কার্যকারিতা হারায়, সাধারণ মানুষ একে হার্ট ফেল হিসাবে জানে।
9. সিওপিডি রোগটি কি প্রতিরোধ যোগ্য ?
উত্তর- আপনি শুনে অবাক হবেন যে রোগটির চিকিৎসার নিমিত্তে বিশ্বের নামিদামী ঔষধ কোম্পানীগুলো নতুন ঐষধ আবিষ্কারের ড়্গেত্রে কোটি কোটি টাকা ব্যায় করছে, রোগটি আসলে প্রতিরোধ যোগ্য। রোগটি প্রতিরোধে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলি নিন।
ü ধূমপানকে না বলুন, শুধু না নয়, প্রতিরোধ করম্নন।
ü গৃহস্থলি কাজে ¯^v¯’¨ সম্মত চুলা ব্যবহার করম্নন। চুলার ধোঁয়া বাড়ি থেকে সরাসরি বের হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা রাখুন।
ü আপনার এলাকায় বায়ু দূষণ কমিয়ে আনার জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলুন। ধোঁয়া উৎপন্নকারী কারখানা জনবসতির বাইরে রাখুন।
ü আপনার ফুসফুসের যে কোন সংক্রমন বা সমস্যার দ্রম্নত সমাধান করম্নন।
10. রোগটির চিকিৎসা সম্পর্কে কিছু বলুন ?
উত্তর- রোগটির চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য হল এর মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা, রোগীকে আরাম দেয়া, রোগটির জটিলতার পরিহার করা প্রভৃতি। এই ড়্গেত্রে রোগীর জন্য এই সংক্রানত্ম ¯^v¯’¨ শিড়্গা খুবই গুরম্নত্বপূর্ণ। সবার আগে রোগীকে ধূমপান বন্ধ করতে হবে, যাতে আমরা ক্রমবর্ধমান রোগটির যাত্রাপথ বন্ধ করতে পারি। এছাড়া চেষ্টা করম্নন আর যে সকল কারণে রোগটি হয়ে থাকতে পারে তা পরিহার করা। চিকিৎসক আপনার শ্বাসনালীর সর্বোচ্চ সম্প্রসারণ ঘটানোর জন্য একাধিক ইনহেলার ব্যবহারের পরামর্শ দিতে পারেন। এই ধরনের রোগীর জন্য শ্বাসের ব্যায়াম এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার টীকা গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
11. কি কি কারণে রোগের লড়্গণগুলি হঠাৎ হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে ?
উত্তর- অনেক কারনেই এ ধরনের সমস্যা হতে পারে যেমন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রামন হওয়া, বায়ু দূষণ বা ড়্গতিকর গ্যাসীয় পদার্থ শ্বাসের সাথে ফুসফুস টেনে নেয়া। এছাড়া কিছু জটিলতার কারণেও শ্বাস কষ্ট বেড়ে যেতে পারে, যেমন- ফুসফুসের কোন অংশ হঠাৎ করে ফেটে যাওয়া, ইত্যাদি।
12. বাংলাদেশে এই চিকিৎসায় কতখানি এগিয়েছে ?
উত্তর- আমি বলল, এখানে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। এমন কি যে সব ড়্গেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন রয়েছে তা আমাদের দেশে সাফল্যের সাথে সম্পন্ন হচ্ছে।
ফুসফুসে যেভাবে যেসব ক্যান্সার ছড়ায়
ফুসফুসের ক্যান্সারের সাথে আমরা কম বেশী সবাই পরিচিতি, কিন্তু ফুসফুসে চিকিৎসকরা যে সব ক্যান্সারের সন্ধান পান তার সবগুলির জন্য কেবল ফুসফুস দায়ি না, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গে সৃষ্ট ক্যান্সার ফুসফুসে এসে ছড়ায়।
এর কারণ হল আমাদের ফুসফুস রক্তণালী এবং লাসিকাণালী সৃমদ্ধ শরীরের একটি অন্যতম অঙ্গ এবং বলা যায় শরীরের অঙ্গগুলি পরস্পরের সাথে এই রক্তণালী বা লসিকাণালী দ্বরা প্রত্যড়্গ বা পরোড়্গভাবে যুক্ত। ফলে বিভিন্ন অঙ্গে সৃষ্ট ক্যান্সারের ড়্গুদ্রাতি ড়্গুদ্র অংশ মূল টিউমার থেকে ছুটে যেয়ে প্রবাহিত রক্ত দিয়ে ভেসে ভেসে, ফুসফুসে এসে আটকে যায় এবং পরবর্তীতে ফুসফুসের ঐ অংশে বড় হতে থাকে।
এর ফলে কাশি, কফ, বুকে ব্যাথা, কাশির সাথে রক্ত যাওয়া এবং শ্বাসকষ্টসহ এক বা একাধিক লড়্গণ প্রকাশ পেতে পারে।
যেসব ক্যান্সার ফুসফুসে বেশী ছড়ায় তা নিম্নরূপ :
1. মাথা এবং ঘাড়ের বিভিন্ন অঙ্গের ক্যান্সার, যেমন- ¯^i যন্ত্রে ক্যান্সার।
2. মহিলাদের সত্মনের ক্যান্সার।
3. কিডনীর ক্যান্সার।
4. wW¤^vkq এবং গর্ভাশয়ের ক্যান্সার।
5. অন্ডকোষের ক্যান্সার।
6. বৃহদযন্ত্রের ও মলাশয়ের ক্যান্সার।
7. হাড়ের ক্যান্সার প্রভৃতি।
ফুসফুসে যখন কোন ক্যান্সার ছড়িয়ে যায়, মনে করতে হবে তা শরীরে খুব বেশী বিসত্মার লাভ করেছে এবং তা অনেক ড়্গেত্রেই অনিরাময় যোগ্য।
ফুসফুস ছাড়াও ফুসফুসের পর্দাতেও বিভিন্ন ক্যান্সার ছড়ায়, এর ফলে অনেক সময় ফুসফুসের চারিদিকে পানিও জমা হয়।
ঔষধ প্রতিরোধী যড়্গা
সাধারণ যড়্গা রোগ বাংলাদেশে এখনও একটি বড় ধরনের ¯^v¯’¨ সমস্যা হিসাবে রয়ে গেছে। কিন্তু এর মধ্যেই মারাত্মক ¯^v¯’¨ ঝুঁকি সৃষ্টি করছে বিভিন্ন মাত্রার ঔষধ প্রতিরোধী জটিল যড়্গা। যেমন- এম.ডি.আর. যড়্গা (একাধিক ঔষধ প্রতিরোধী যড়্গা), এক্সডি আর যড়্গা (দ্বিতীয় সারির ঔষধ প্রতিরোধী যড়্গা) প্রভৃতি। এম.ডি.আর যড়্গার জীবাণু সাধারণভাবে ব্যবহারিত যড়্গার ঔষধে মারা যায় না ওপর দিকে এক্স.ডি. আর যড়্গার ড়্গেত্রে দ্বিতীয় সারির যড়্গার ঔষধগুলোও অকার্যকর। ঔষধ প্রতিরোধী জটিল যড়্গার চিকিৎসা অত্যনত্ম ব্যায়বহুল, রোগীর জন্য কষ্টকর এবং ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক বেশি। কেন আজকাল ঔষধ প্রতিরোধী যড়্গার রোগী এত বেশি হারে পাওয়া যাচ্ছে? ঔষধ প্রতিরোধী যড়্গাকে বলা হয়ে থাকে একটি মনুষ্য সৃষ্ট বিপর্যয়। এর কারণ নিম্নরূপ :
১ রোগীর সঠিক পরিমাণে নির্দিষ্ট সময় পর্যনত্ম ঔষধ না খাওয়া।
২. চিকিৎসক যদি সঠিক নিয়মে প্রেসক্রিপশন তৈরি করে না দেন।
৩. ঔষধের মান যদি খারাপ থাকে।
৪. ঔষধের সরবরাহ যদি ঠিক না থাকে ইত্যাদি।
৫. ঔষধ প্রতিরোধী যড়্গায় আক্রানত্ম রোগীর সংস্পর্শে আশা।
চুলা যখন শক্রু
এক সময় পানি দূষণ এবং পানি বাহিত রোগ তথা ডায়রিয়া, আমাশয়, কলেরা, টাইফয়েড প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ এর জন্য সেনিটারী টয়লেট বা আদর্শ পায়খানা আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, এখন সময় এসেছে ফুসফুসের my¯^v‡¯’¨i জন্য আদর্শ চুলা আন্দোল গড়ে তোলা।
লাকড়ির চুলা থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া গৃহের আভ্যনত্মরিন বায়ু দূষণ বাড়ায়, এর ফলে শ্বাসতন্ত্রজনিত সমস্যাগুলি বৃদ্ধি পায়। এক সময় মনে করা হত, আমাদের দেশের মহিলারা যেহেতু ধূমপান করেন না সেহেতু তাদের সিওপিডি (ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসরোধক রোগ) হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু এরপরও উলেস্নখযোগ্য সংখ্যাক মহিলা সিওপিডিতে আক্রানত্ম হচ্ছেন বাড়ির আভ্যনত্মরিন পরিবেশ দূষণের কারণে এবং এই দূষণ মূলত হচ্ছে গৃহস্থলি চুলা থেকে।
আর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন গ্রামের এবং নিম্ন আয়ের মহিলারা, কারণ তারাই মূলত জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করেন লাকড়ী বা খড়ি অথবা শুকনো গোবর।
এড়্গেত্রে আদর্শ চুলা। এই সব মহিলার জন্য ত্রাতা হিসাবে কাজ করতে পারে। এই সব চুলায় খুব কম জ্বালানী লাগে, কম ধোঁয়া তৈরী হয়, ধোঁয়া ছড়ায় না, কিছু ধোঁয়া তৈরি হলেও তা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে j¤^v চিমনী দিয়ে বাড়ির বাইরে বের হয়ে যায়। আসুন সেনিটারী টয়লেটের মত আমরা আদর্শ চুলা ব্যবহার করতে অভ্যসত্ম হই।
দূর্ঘটনা জনিত বুকের আঘাত
বুক আমাদের শরীরের একটি বড় অংশ গঠন করে। সুতরাং যে কোন বড় ধরণের দূর্ঘটনা কিংবা আঘাতে আমাদের বুক এবং বড়্গ গহরবস্থ অঙ্গগুলি ড়্গতিগ্রসত্ম হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী।
বড়্গ গহ্বরের প্রাচীর তথা পাঁজর এবং মাংসপেশী ড়্গতিগ্রসত্ম হয়ে ভিতরের অঙ্গগুলি আক্রানত্ম হতে পারে কিংবা আপাত দৃষ্টিতে বুকে কোন আঘাত দেখা না গেলেও প্রবল ঝাঁকুনিতে (blunt trauma) বড়্গ গহবরস্থ ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গগুলি ড়্গতিগ্রস্থ হতে পারে।
এই ড়্গেত্রে সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা হল, ফুসফুস ছিদ্র হয়ে বাতাস বড়্গ গহবরে জমা হওয়া, ফুসফুসের বায়ু থলির (alveoli) পাশাপাশি রক্তণালীও যদি ছিড়ে যায় সেড়্গেত্রে বড়্গ গহবরে রক্ত ড়্গরণ হতে পারে।
জমা বাতাস যদি বেশী হয় অথবা ক্রমাগত বাড়তে থাকে তাহলে দেখা দিবে শ্বাস কষ্ট এবং বুকে ব্যাথা। বড়্গ গহবরে মুক্ত বাতাস যদি বেশিী জমে যায় তাহলে তা হৃৎপিন্ড এবং বড় বড় রক্তণালীতে এতটাই চাপ দেয় যে রক্তচাপ কমে যেতে পারে, যাকে বলা হয়ে থাকে বড়্গগহবরে চাপ সৃষ্টিকারী বায়ু (tension penumothorax)|
রক্তণালী ছিড়ের যেয়ে বড়্গ গহবরে এতটাই রক্ত জমতে পারে, যে আহত ব্যক্তির শ্বাস কষ্ট হতে থাকে। এ সমসত্ম রোগীর অনেক ড়্গেত্রে রক্তচাপ শূন্যতা (shock) পরিলড়্গিত হয়।
বুকের পাঁজর ভেঙ্গে গেলে ঐ স্থানে প্রচন্ড ব্যাথা হয়। এর কারণে রোগী শ্বাসকষ্টে ভুগতে পারে। অনেক সময় পাঁজর এমনভাবে ভাঙ্গে যে শ্বাস নেয়ার সময় বুকের একটি অংশ ডেবে যায় (flial chest)| বুকের পাঁজর ভাংলে, ফুসফুসের বায়ুথলি (alveoli) ছিদ্র হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ছিদ্র হওয়া ফুসফুস থেকে বের হওয়া বাতাস শুধু বড়্গ গহ্বরে জমা হয় না, জমা হতে পারে চামড়ার নীচে (surgical emphysema) এর ফলে মুখসহ সারা শরীর ফুলে যেতে পারে।
বড়্গ গহবর এবং উদর গহবরের মাঝখানে থাকে মধ্যচ্ছদা (The diaphragm)| এটি হল শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রধান মাংস পেশী, দূর্ঘটনার কারণে এটি ফেটে যেয়ে পেটের নাড়ীর অংশ বিশেষ ঢুকে যেতে পারে বড়্গ গহবরে, ফলে রোগী শ্বাস কষ্টে ভুগতে পারে।
কোন রকম ছিদ্র হওয়া বা ফেটে যাওয়া ছাড়াও ফুসফুস প্রচন্ড আঘাতে ড়্গতিগ্রসত্ম হতে পারে, এর ফলে ফুসফুসের বায়ুথলির ফাঁকে ফাঁকে প্রদাহজনিত রস জমা হয় (Pulmonary contusion)| এর ফলে অক্সিজেন এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড আদান প্রদান ব্যাহত হয়।
তাই বলব কোন দূর্ঘটনার পর যেমন উপর থেকে পড়ে যাওয়া, গাড়ি দূর্ঘটনা, দেয়াল চাপা পড়া প্রভৃতি ড়্গেত্রে কোন ব্যক্তি যদি শ্বাস কষ্ট এবং বুকের ব্যাথায় ভুগতে থাকে, তবে তার উচিত হবে একজন বড়্গ ব্যাধি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া। আর এই ড়্গেত্রে সবচেয়ে গুরম্নত্বপূর্ণ পরীড়্গাটি হলো দ্রম্নত বুকের একটি এক্সরে করিয়ে নেয়া।
নিউমোনিয়া m¤^‡Ü জানি এবং তাকে প্রতিরোধ করি
§ নিউমোনিয়াতে হঠাৎ করে ফুসফুসে ইনফেকশন হয়। এই ইনফেকশন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া জনিত হতে পারে।
|
§ অপুষ্টি, অপরিচ্ছন্নতা মা-বাবার ধূমপানের অভ্যাস, ঘরের ভিতরের বায়ু দূষণ বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হওয়ার অন্যতম কারণ। |
§ বাচ্চারা হামে আক্রানত্ম হওয়ার পর কিংবা মায়ের দুধ পান না করলে নিউমোনিয়াতে বেশি আক্রানত্ম হয়। |
এই শতাব্দিতেও যখন, হাতের কাছে অনেক ¯^v¯’¨Kg©x কিংবা ঔষধপত্র, এরপরও মুত্যৃর অন্যতম কারণ নিউমোনিয়া। অথচ নিউমোনিয়ার কারণে মৃত্যু অনেক ড়্গেত্রেই প্রতিরোধযোগ্য। এই ড়্গেত্রে দুটি বিষয় খুবই গুরম্নত্বপূর্ণ- (১) দ্রম্নত রোগ নির্ণয় এবং (২) সঠিক চিকিৎসা।
যে কোন বয়সে নিউমোনিয়া হতে পারে। তবে মৃত্যু ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি পাঁচ বৎসর বয়সের নীচের শিশুদের এবং ৬৫ বৎসরের বেশী বয়স্ক মানুষের।
নিউমোনিয়ার লড়্গণ কম বেশী অনেকেরই জানা যেমন-
1. জ্বর আসা, শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যেতে পারে, শরীর কেঁপে কেঁপে জ্বর আসতে পারে।
2. কাশি হয়, প্রথম দিকে কাশিতে কফ বের হয় না, তবে পরবর্তীতে মরিচার মত রং এর কফ বের হতে পারে।
3. বুকে ব্যাথা হতে পারে কাশি বা শ্বাস নেয়ার সময় বুকের ব্যাথা বেড়ে যায়।
4. কারো কারো শ্বাস কষ্ট দেয়া দেয়। এছাড়াও আরো অনেক লড়্গণ আছে, যা বিশেষ পরিপ্রেড়্গিতে প্রকাশ পায়।
নিউমোনিয়ার যদি চিকিৎসা না করা হয়, তবে কি কি সমস্যা হতে পারে ?
1. ফুসফুসের পর্দায় পানি আসতে পারে।
2. ফুসফুসের পর্দায় পুঁজ জমতে পারে।
3. ফুসফুসের ভেতর ফোঁড়া হতে পারে।
4. নিউমোনিয়া ভাল হয়ে গেলেও ফুসফুসের শ্বাসণালী এবং এর বায়ুথলিগুলি ড়্গতিগ্রসত্ম হয়ে ফুসফুস কুঁকড়ে যেতে পারে। এর ফলে দেখা যায় ড়্গতিগ্রসত্ম ফুসফুসটি প্রায়ই জীবাণু দ্বারা আক্রানত্ম হচ্ছে।
5. ফুসফুস থেকে জীবাণু রক্তে ছড়িয়ে যেয়ে সেপ্টিসেমিয়া হতে পারে।
6. শ্বাসতন্ত্রের কর্মড়্গমতা হ্রাস (Respiratory failure) পেয়ে রোগী মারা যেতে পারে।
নিউমোনিয়া কখন বিপদজনক ?
1. রোগীটি যদি জ্ঞান হারায়
2. বড়দের শ্বাসপ্রশ্বাসের হার যদি মিনিটে ত্রিশের অধিক হয়।
3. রোগীর রক্ত চাপ যদি কমে যায়।
4. কিডনির কর্মড়্গমতা যদি হ্রাস পায়।
5. যদি ঠোঁট ও জিহবা নীল বর্ণ ধারণ করে। প্রভৃতি।
কাদের মৃত্যু ঝুঁকি বেশী ?
1. যাদের পূর্বে থেকে কিডনী এবং হার্টের সমস্যা আছে।
2. যাদের আগে থেকে স্ট্রোকের ইতিহাস আছে।
3. যারা ক্যান্সারে আক্রানত্ম।
4. যারা বৃদ্ধ। প্রভৃতি।
কাদের নিউমোনিয়া বেশি হয় ?
1. যাদের ডায়বেটিস আছে।
2. যারা ধূমপান ও মদ্যপান করে।
3. বয়স্ক এবং শিশুদের।
কিভাবে নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করা যায় ?
1. বাচ্চাদের যথা সময়ে সকল ধরনের টীকা দেয়া এবং ছয় মাস বয়স পর্যনত্ম বাচ্চাদের কেবল মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো।
2. বাচ্চাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং সঠিক নিয়মে পুষ্টি চাহিদা মেটানো।
3.
৬৫টি বৎসর বয়সের লোকদের নিউমোকক্কাল নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন দেয়া। এছাড়া যাদের দীর্ঘস্থায়ি ফুসফুসের রোগ, হার্ট কিংবা কিডনীর সমস্যা আছে তাদেরও এই টীকা নেয়া উচিত।
পরোড়্গ ধূমপান থেকে নিজেকে বাঁচান
নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য আশেপাশের মানুষকে ধূমপান থেকে বিরত রাখুন। বলা হয়ে থাকে, ধূমপান মদ্যপানের চেয়েও খারাপ, এর ব্যাখ্যা এইভাবে দেয়া হয় যে, যিনি মদ্যপান করছেন তিনি মূলত নিজের ড়্গতি করছেন, কিন্তু যিনি ধূমপান করছেন তিনি আশেপাশের মানুষকে ড়্গতিগ্রসত্ম করছেন। আশেপাশের মানুষ ধূমপান না করেও ধূমপায়ির ধোঁয়া টেনে নিয়ে ড়্গতিগ্রস্থ হচ্ছে। এটাকেই বলা হয় ‘সেকেন্ড হ্যান্ড স্মোকিং’ বা পরোড়্গ ধূমপান।
পরোড়্গ ধূমপানে সিগারেট থেকে যে সাত হাজার ড়্গতিকর রাসায়নিক দ্রব্য বের হয় তার পুরোটাই অধূমপায়ির শ্বাসণালী দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। এর মধ্যে ৭০টি রাসায়নিক দ্রব্য আছে যা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী। তাই অধূমপায়ি হয়েও শুধুমাত্র পরোড়্গ ধূমপানের কারণে আপনি ফুসফুসের ক্যান্সারসহ লেরিনক্স (¯^i যন্ত্র), গলা, খাদ্যণালী, পাকস্থলি, সাইনাস (মাথার বায়ু কঠুরী), মলাশয়, পস্রাবের থলি, মসিত্মষ্কের এমনকি সত্মন ক্যান্সারে আক্রানত্ম হতে পারেন। অর্থাৎ আপনি দোষী না হয়েও ধূমপানের কুফল ভোগ করছেন। শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বৎসর ফুসফুসের ক্যান্সারে মারা যায় ৭,৩০০ জন। ভাবতেও অবাক লাগে, একজন সুস্থ মানুষ শুধুমাত্র অপরের সিগারেটের ধোঁয়া টেনে নিয়ে কিভাবে ড়্গতিগ্রস্থ হচ্ছে।
আর নিষ্পাপ বাচ্চারা এই বিষাক্ত ধোঁয়া টেনে নিলে আক্রানত্ম হতে পারে- বস্নাড ক্যান্সার, লিম্ফমা, লিভার কিংবা মসিত্মষ্কের টিউমারে।
পরোড়্গ ধূমপানে আক্রানত্ম হয়ে অনেকে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোক করে শয্যাশায়ি অথবা মৃত্যুবরণ করতে পারে। ধারণা করা হয় প্রতি বৎসর আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রে কমপড়্গে ৩৪,০০০ লোক শুধুমাত্র পরোড়্গ ধূমপানের কারণে হৃদরোগে আক্রানত্ম হয়ে মারা যায়। এছাড়া দেখা যায় যারা পরোড়্গ ধূমপানে আক্রানত্ম হয় তাদের অনেকেই মানসিক অবসাদ ও বিষন্নতায় ভুগে।
রাসত্মা ঘাট, বাজার, যানবাহন, বাসা-বাড়ি প্রভৃতি পাবলিক পেস্নসে ধূমপান করলে সবচেয়ে বেশি ড়্গতিগ্রসত্ম হয় শিশুরা। পরোড়্গধূমপানের কারণে তাদের সর্দি কাশি লেগেই থাকে, খুব সহজেই তারা নিউমোনিয়া কিংবা শ্বাসণালীর ইনফেকশনে (ব্রঙ্কাইটিস) আক্রানত্ম হয়ে থাকে। কারো কারো কাকে ইনফেকশন হয়। কেউ অ্যাজমাতে আক্রানত্ম হয়ে থাকলে, তার অ্যাজমার প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে।
তাই ভবিষ্যতে প্রজেন্মর ¯^v‡_© পাবলিক পেস্নসে কিংবা অধূমপায়ির সামনে ধূমপান বন্ধ রাখুন। অধূমপায়িদের অবশ্যই অধিকার নেই অন্য সবাইকে ড়্গতিগ্রস্থ করার।
গর্ভবতী অবস্থায় শ্বাসকষ্ট
গর্ভবতী অবস্থায় শ্বাসকষ্ট, অধিকাংশ ড়্গেত্রে ¯^vfvweK নিয়মে শারিরীক পরিবর্তনের সাথে জড়িত, তবে অবশ্যই শ্বাসকষ্টের ড়্গতিকর কারণগুলি সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।
গর্ভাবস্থায় ¯^vfvweK নিয়মে কিছুটা শ্বাস কষ্টের অনুভূতি হতে পারে। মূলত তা হয়ে থাকে ২টি কারণে :
1. গর্ভাবস্থায় শরীরে প্রজেস্টেরোন নামক হরমোনের আধিক্যের কারণে। হরমোনটির প্রভাবে গর্ভবতী মা’কে বড় বড় শ্বাস নিতে হয়।
2. দ্বিতীয় কারণটি দেখা দেয় মূলত গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে, যখন পেটের প্রায় পুরো অংশ জুড়ে অবস্থান করে অনাগত সনত্মান। এর ফলে আমাদের শ্বাস ক্রিয়ার মূল মাংস পেশী মধ্যচ্ছদা (The diaphragm), যা পেট এবং বুক গহবরের মাঝখানে অবস্থান করে, ঠিকমত নাড়াচাড়া বা উঠা-নামা করতে পারে না, ফলে শ্বাস কষ্টের অনুভূতি হয়।
এই ¯^vfvweK শ্বাস কষ্টের জন্য ভীত বা অস্থির হবেন না; তাতে শ্বাস কষ্টের অনুভূতি আরোা বেড়ে যাবে। বরং ধীর স্থিরভাবে পিঠ সোজা রেখে খাড়াভাবে বসুন, ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নিন। শোয়ার সময় মাথার নীচে দুই বালিশ দিয়ে মাথা উঁচু করে শোয়ার চেষ্টা করম্নন, তাতে শ্বাস কষ্টের অনুভূতি কমে যাবে।
অনেক সময় গর্ভাবস্থায় কোন কোন রোগের প্রকোপ এবং লড়্গণ বেড়ে যেতে পারে, যেমন- অ্যাজমা। বলা হয়ে থাকে প্রায় এক তৃতীয়াংশ অ্যাজমা রোগীর, গর্ভাবস্থায় অ্যাজমার প্রকোপ বেড়ে যায়। সেড়্গেত্রে অ্যাজমার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধের পরিমাণ বাড়ানোর প্রয়োজন হয়।
কিছু কিছু ড়্গেত্রে হার্টের ভাল্বের সমস্যা বা জন্মগত ক্রুটির লড়্গণ ¯^vfvweK অবস্থায় প্রকাশ পায় না। কিন্তু গর্ভবতী অবস্থায় যখন হার্টকে অধিক কাজ করতে হয় তখন শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। সাধারণত এই সমসত্ম রোগীরা শ্বাসকষ্টের সাথে বুক ধরফরের কথা বলে অর্থাৎ তাদের নাড়ির গতি বেশী থাকে।
ঠিক একইভাবে রক্তশূন্যতায় আক্রানত্ম কেউ যদি গর্ভবতী হন, তাহলেও তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। কারণ এই সময় গর্ভস্থ বাচ্চার জন্য ‘মা’র রক্তকে অধিক অক্সিজেন বহন করতে হয়। এই সব মায়েরা সাধারণত A¯^vfvweK দুর্বলতায় ভোগেন।
গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ড়্গমতা হ্রাস পায় বলে ফুসফুসে নিউমোনিয়া বা যড়্গা হওয়া A¯^vfvweK নয়। তবে এসব ড়্গেত্রে শ্বাসকষ্টের সাথে জ্বর, কাশি, বুকে ব্যাথা প্রভৃতি বিদ্যমান থাকে।
উপরোলিস্নখিত লড়্গণগুলি ছাড়া যদি শুধুমাত্র শ্বাসকষ্ট থাকে, তাহলে খুব সম্ভবত এটি গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত ¯^vfvweK শ্বাসকষ্ট। কিন্তু শ্বাসকষ্টের সাথে যদি কাশি, বুকে ব্যাথা, জ্বর, রক্ত শূন্যতা, বুকে ব্যাথা অথবা A¯^vwfK দুর্বলতা থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
আর্সেনিক ফুসফুসের কোন ড়্গতি করে কি ?
বাংলাদেশের একটি বড় এলাকার লোক আর্সেনিকের ঝুঁকিতে আছে। আর্সেনিক মূলত একটি বর্ণহীন, গন্ধহীন, ¯^v`nxbe¯Í, যা মূলত ভূগর্ভস্থ পানির সাথে মিশে নলকূপের মাধ্যমে উঠে আসে। এই পানি দীর্ঘীদন পান করলে মানুষ আর্সিনকোসিসে আক্রানত্ম হয়। আমরা সাধারণত রোগীর চামড়া এবং নখের বিশেষ পরিবর্তন দেখে বুঝে নিই রোগীটি আর্সেনিকের বিষক্রিয়ায় আক্রানত্ম। কিন্তু আর্সেনিক বিষে আক্রানত্ম হতে পারে শরীরের গুরম্নত্বপূর্ণ অঙ্গগুলি। যেমন- ফুসফুস, যকৃত কিংবা কিডনি।
ফুসফুসে ড়্গতিগ্রসত্ম হলে দেখা দেয় দীর্ঘস্থায়ী কাশি, কখনও কখনও দেখা দেয় শ্বাস কষ্ট। যেগুলি মূলত শ্বসণালীর প্রদাহের লড়্গণ। আমাদের অনেকের কাছে তা ব্রঙ্কাইটিস নামে পরিচিত। এরপরও আর্সেনিকের বিষক্রিয়া চলতে থাকলে শ্বাসণালী স্থায়ীভাবে ড়্গতিগ্রসত্ম হয়। শ্বাসণালীর দেয়াল ড়্গতিগ্রসত্ম হয়ে এর স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয় এবং এগুলো হয়ে উঠে জীবাণূ মিশ্রিত কফের আধার। এই অবস্থার নাম ব্রঙ্কেকটেসিস (Bronchiectasis) । সবচেয়ে বিপদজনক বিষয়টি হল ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়া, যা মূলত আর্সেনিকের দীর্ঘস্থায়ী বিষক্রিয়ার ফলাফল। একজন আর্সেনিকোসিসে আক্রানত্ম ব্যক্তি যদি ধূমপায়ি হয় তবে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকগুণে বৃদ্ধি পায়।
কিভাবে ফুসফুসকে অধিক ড়্গতির হাত থেকে বাঁচাবেন? আপনি যদি অগভীর নলকূপের পানি খান, তবে তা এখনই আর্সেনিকের জন্য পরীড়্গা করিয়ে নিন। আর্সিনকোসিসের প্রাথমিক লড়্গণগুলি প্রকাশ পেয়ে থাকলে, খাবার পানির জন্য বৃষ্টির পানি সংরড়্গণ করম্নন অথবা পুকুরের পানি খাওয়ার উপযোগী করে নিন এবং একই সাথে ধূমপায়ি হলে তা ত্যাগ করম্নন। ব্রঙ্কাইটিস হলে দ্রম্নত চিকিৎসা নিন। কাশির সাথে রক্ত গেলে কিংবা বুকে ব্যাথা হলে, ফুসফুসে কোন টিউমার আছে কিনা জেনে নিন।
অ্যালার্জি জনিত সর্দি আর ভাইরাস জনিত সর্দির পার্থক্য
অ্যালার্জি জনিত ঠা-া লাগা এবং সাধারণ ভাইরাসের কারণে ঠা-া লাগার লড়্গণগুলি অনেকটা একই রকমই। যেমন- সর্দি লাগা, হাচ্চি আসা, কাশি, বুকে কফ জমে থাকা, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখ চুলকানো প্রভৃতি।
পার্থক্য করার উপায় হল, ভাইরাসের কারণে ঠা-া লাগলে সেখানে জ্বর থাকে এবং মাত্র কয়েক দিন স্থায়ী হয়। অপরদিকে এলার্জি জনিত ঠা-ায় সাধারণত জ্বর হয় না এবং তা কয়েক সপ্তাহ পর্যনত্ম স্থায়ী হয়।
ফুসফুসের ফেটে যাওয়া
আপনি কি জানেন ? আপনার ফুসফুস অনেকটা বেলুনের মত কিংবা বলা যায় কামাড়ের হাপরের মত! নিশ্বাস নিলে এটি ফুলে উঠে আর ছাড়লে কিছুটা চুপসে যায়। আমরা প্রায়ই দেখি বাচ্চাদের প্রিয় বেলুনটি হঠাৎ ফেটে যেতে। বেলুনটি ফেটে যেতে পারে। বাইরের কোন আঘাতে অথবা এর দেয়ালে কোন প্রকারের দুর্বলতা থাকলে। ঠিক একইভাবে আপনার ফুসফুসটি বুকের মধ্যে ফেটে যেয়ে বুকে বাতাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে ফুসফুসটি কিছুটা বা সম্পূর্ণভাবে চুপসে যেতে পারে, ঠিক যেভাবে বাতাসে বের হয়ে গেলে বেলুন চুপসে যায়।
বিভিন্ন রোগের কারণে ফুসফুস দুর্বল হয়ে থাকলে এর ফেটে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে যেমন- সিওপিডি, যক্ষ্মা, আইএলডি (ILD) ইত্যাদি। আবার কোন কোন ড়্গেত্রে ফুসফুস ফেটে যাওয়ার তেমন কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। এরকমটি হয়ে থাকে সাধারণত হালকা গড়নের কম বয়সী লোকদের। এছাড়াও বুকে গুলি অথবা ছুরির আঘাত লাগলে কিংবা গাড়ী দুর্ঘটনায় ফুসফুস ফেটে যেতে পারে।
এই ড়্গেত্রে রোগী সাধারণত বুকের যে কোন এক পাশে ব্যাথা (যে পাশে ফুসফুস ফেটে যায়) এবং শ্বাস কষ্ট নিয়ে চিকিৎসকের নিকট আসে। এছাড়াও যে রোগের কারণে ফুসফুস ফেটে গেছে, সেই রোগের লড়্গণগুলিও উপস্থিতত থাকে। কারো কারো ড়্গেত্রে ফুসফুস ফেটে যাওয়ার পর মুক্ত বাতাস ফুসফুস থেকে বের হয়ে চামড়ার নীচে জমা হতে পারে। বাতাস চামড়ার নীচে জমার ফলে মুখসহ অন্যান্য অংশ ফুলে যেতে পারে এবং শরীর হাত বোলালে পুট পুট শব্দ হতে পারে।
সামান্য একটি বুকের এক্সরে করে নিলেই সমস্যাটি সহজে ধরা পড়ে। অধিকাংশ ড়্গেত্রে নিউমোথেরাক্সের (ফুসফুসের ফেটে যাওয়া) জরম্নরী চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
স্ট্রোকের রোগীকে খাওয়ানোর সঠিক পদ্ধতি
স্ট্রোকের রোগীকে খাওয়ানোর সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন এবং নিউমোনিয়া থেকে রোগীকে রড়্গা করম্নন। ঔষধ গ্রহণের পাশাপাশি, স্ট্রোক রোগীর পুষ্টি চাহিদা মেটানো একটি চ্যালেঞ্জ। আমরা অনেকেই জানি স্ট্রোকের রোগী যে সকল কারণে খারাপ হয় তার মধ্যে এসপিরেসন নিউমোনিয়া একটি অন্যতম কারণ।
এসপিরেসন নিউমোনিয়া হয় মূলত যখন মুখের ময়লা লালা বা খাদ্য কণা খাদ্যণালীতে না যেয়ে শ্বাসনালী হয়ে ফুসফুসে ঢুকে পড়ে। আপনারা হয়ত জানেন শরীর খাদ্যণালী এবং শ্বাসণালী পাশাপাশি থাকে। স্ট্রোকের রোগীরা অনেকেই খাবার গিলতে সমস্যা বোধ করেন, ফলে খাদ্য কণা শ্বাসণালী হয়ে চলে যেতে পারে ফুসফুসে। ফলে ফুসফুসে জীবাণু সংক্রমণ হয়ে দেখা দিতে পারে নিউমোনিয়া কিংবা ফুসফুসের ফোঁড়া।
স্ট্রোকের রোগীরা খাবার গ্রহণ করতে যেয়ে তিনটি সমস্যার সম্মুখীন হন- (১) নিজে খাদ্য গ্রহণ করতে পারেন না, (২) খাবার ভালভাবে চিবাতে পারেন না, (৩) খাবার গিলতে সমস্যা হওয়া।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধের ড়্গেত্রে আমরা নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলি নিতে পারি-
1. স্ট্রোকের রোগীকে সবসময় হেলান দিয়ে বসিয়ে খাওয়াতে হবে, কখনও শোয়া অবস্থায় স্ট্রোকের রোগীকে খাওয়ানো ঠিক নয়, এতে খাবার শ্বাসণালীতে চলে যেতে পারে।
2. রোগীকে খাওয়ানোর পর কিছুড়্গণ বসিয়ে রাখতে হবে (১/২ ঘন্টা থেকে ১ ঘন্টা)। খাওয়ানোর সাথে সাথে শুইয়ে দিলে খাবার পেট থেকে মুখে চলে আসতে পারে এবং পরবর্তীতে তা শ্বাসণালীতে চলে যেতে পারে।
3. নরম সহজ পাচ্য খাবার দিতে হবে, যাতে তা চিবাতে না হয় এবং সহজে গিলে ফেলা যায়।
4. একবারের বেশি খাওয়ানো ঠিক নয় এতে বমি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাই খাওয়াতে হবে অল্প অল্প ঘন ঘন।
স্ট্রোকের রোগীকে নিউমোকক্কাল ভ্যাক্সিন দিয়ে নেয়া উচিত। কারণ এদের নিউমোনিয়াতে আক্রানত্ম হয়ে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
পাখি পালনকারীদের ফুসফুসের রোগ
কেউ হয়তো বলতে পারেন, পাখি পোষার মত একটি নির্দোষ অভ্যাসে কেন ফুসফুস আক্রানত্ম হবে। এটা ঠিক যে, এতে সবাই আক্রানত্ম হন না, তবে তাদের একটি বড় অংশ এই রোগে আক্রানত্ম হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। পাখি পালনকারীদের ফুসফুসে যে রোগটি হয়, তা হল মূলত অতিসংবেদনশীলতা জনিত ফুসফুসের প্রদাহ।
প্রাথমিক পর্যায়ে রোগের লড়্গণগুলি অ্যাজমা রোগের মতই, যেমন- পাখির কাছাকাছি থাকলেই দেখা দেয় কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ চাপ অনুভব হওয়া প্রভৃতি। তবে এরপরও পাখি পালক বা ভুক্তভোগিরা বার বার পাখির সংস্পর্শে আসতে থাকলে দীর্ঘস্থায়ী কাশি দেখা দেয়, ফুসফুস স্থায়ীভাবে ড়্গতিগ্রসত্ম হয় এবং রোগী অল্প পরিশ্রমেই শ্বাস কষ্টে ভুগতে থাকে।
বিভিন্ন ধরনের পাখি পালনে, কারো কারো এই রোগ দেখা দিতে পারে। যেমন- কবুতর, টিয়া, কাকাতুয়া, ঘুঘু এমনকি মুরগী পালনের সময় এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এইড়্গেত্রে পাখির বিষ্ঠা এবং পালক হতে সৃষ্ট ধূলার ন্যায় আমিষ কণা মানুষের শ্বাসের সাথে ফুসফুসে যেয়ে এই রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
এই রোগে আক্রানত্ম হয়ে থাকলে আপনার প্রথম কাজ হবে, পাখি পালনের অভ্যাস থেকে সরে আসা। এমনকি আপনি যদি পাখির পালকের তৈরি বালিশ ব্যবহার করেন, তাও পরিহার করা উচিত।
প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা নিলে, এই রোগ থেকে পুরোপুরি সেরে উঠা সম্ভব, কিন্তু দেরীতে চিকিৎসা নিলে ফুসফুস ¯^vfvweK অবস্থায় ফিরে নাও আসতে পারে।
অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ ছোটদের জন্যও গুরম্নত্বপূর্ণ
অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ বড়দের জন্য যেমন গুরম্নত্বপূর্ণ, আরো বেশী গুরম্নত্বপূর্ণ ছোটদের জন্য। কারণ অনিয়ন্ত্রত অ্যাজমা বাচ্চাদের মানসিক এবং দৈহিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ করে। এছাড়া ফুসফুসের কাঠামোগত পরিবর্তনের কারণে ভবিষ্যত জীবনে খারাপ বা তীব্রতর অ্যাজমায় ভোগার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে সাত বৎসর বয়সের বাচ্চাদের মধ্যে অ্যাজমা রোগের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
আপনি হয়তো বলতে পারেন বাচ্চাদের ইনহেলার নেওয়াটা কি ঠিক হবে? আর ইনহেলার দিতে চাইলেও বাচ্চারা হয়ত ইনহেলার নিতে পারবে না! বড়দের মত ছোটদেরও অ্যাজমার মূল চিকিৎসা শ্বাসের সাথে টেনে নেয়া ¯^í মাত্রার স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ এবং আমাদের অভিজ্ঞতা বলে ছয় বৎসরের বাচ্চারাও ইনহেলার সরাসরি ব্যবহার করতে পারে, যদি তারা ঠিকমত শিখে নেয়। আর এর চেয়ে ছোট বয়সের বাচ্চারা স্পেসার ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই ইনহেলার ব্যবহার করতে পারে। অ্যাজমায় আক্রানত্ম বাচ্চাদের একটি অংশ নিয়মিত ঔষধ ব্যবহারের মাধ্যমে ১৩/১৪ বৎসর বয়সের ভাল হয়ে যেতে পারে। অ্যাজমার পাশাপাশি বাচ্চার যদি অ্যালার্জি জনিত সর্দি থাকে, তবে তারও চিকিৎসা নিতে হবে।
অ্যাজমা ও নিরাপদ মাতৃত্ব
অ্যাজমা সুনিয়ন্ত্রিত রাখুন। গর্ভাবস্থাকে নিরাপদ করম্নন এবং একটি সুস্থ বাচ্চার মা হোন। অ্যাজমাতে আক্রানত্ম মহিলারা, অন্য মহিলাদের মত ¯^vfvweK নিয়মেই মা হতে পারেন। এই ড়্গেত্রে অ্যাজমা কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না। গর্ভাবস্থার আগে, যে সকল ঔষধ আপনার অ্যাজমাকে নিয়ন্ত্রণে রাখত তা হঠাৎ করে গর্ভবতি হয়েই সেগুলো এই ভয়ে বন্ধ করবেন না যে, যদি বাচ্চার ড়্গীত হয়! আপনাদের জেনে হয়ত ভাল লাগবে, অ্যাজমায় ব্যবহৃত অধিকাংশ ঔষধই গর্ভস্থ বাচ্চার জন্য নিরাপদ। বিশেষ করে শ্বাসের সাথে ব্যবহৃত (ইনহেলার) ঔষধগুলো। বরং ঔষধ বন্ধ করলে অ্যাজমা অনিয়ন্ত্রিত হলে, তা মা এবং গর্ভস্থ বাচ্চার বিপদ ডেকে আনতে পারে। তবে আপনি একজন বড়্গব্যাধি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন, অধিকতর নিরাপদ বিকল্প ঔষদের জন্য।
গর্ভাবস্থায় মায়েদের ড়্গেত্রে তিনটি বিষয় ঘটতে পারে : (১) অ্যাজমার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। সে ড়্গেত্রে ঔষদের মাত্রাও বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। (২) অনেক ড়্গেত্রে গর্ভাবস্থায় অ্যাজমার প্রকোপ কিছু কমে যেতে পারে, সে ড়্গেত্রে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণকারী ঔষধ কমিয়ে আনা সম্ভব। (৩) আবার অ্যাজমা একই মাত্রায় থেকেও যেতে পারে।
গর্ভাবস্থায় অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ রাখা এই জন্য জরম্নরী যে, গর্ভস্থ শিশু যেন পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ পায়। অক্সিজেনের অভাবে গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হতে পারে, বাচ্চা বয়সের তুলনায় খর্বাকৃতি হয়ে জন্ম নিতে পারে, অনেক সময় অক্সিজেনের ঘাটতি অত্যধিক হলে, গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যু হতে পারে।
আপনি যদি অ্যাজমায় আক্রানত্ম একজন মা হন, আপনাকে সেবা দানকারী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, জেনারেল প্রেকটিশনার, ধাত্রী বা ¯^v¯’¨Kg©x‡K তা অবহিত করম্নন।
আমরা অবশ্যই চাইব, এই ধরনের মায়েরা সনত্মান জন্ম দেয়ার সময় যেন উন্নত ¯^v¯’¨ কেন্দ্রের সেবা নিন।
পানিতে ডুবলে করণীয়
আপনি জানেন কি? প্রতি আধা ঘন্টায় বাংলাদেশে একটি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়, অর্থাৎ প্রতিদিন পানিতে পড়ে মারা যাচ্ছে ৫০টি শিশু। বৎসর শেষে মারা যাচ্ছে প্রায় ১৮০০০ শিশু। তাই সচেতন হওয়ার পাশাপাশি, উদ্ধার করা শিশুটির ¯^v¯’¨ সেবা দেয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হোন।
ডুবে যাওয়া মানুষকে উদ্বার করে আপনার প্রথম কাজ হবে, মুখ গহ্বর এবং শ্বাস নেয়ার পথ থেকে ময়লা সরিয়ে কৃত্রিমভাবে শ্বাস দেয়া শুরম্ন করা। একে বলা যায় জীবন রড়্গাকারী শ্বাস। বুক এবং পেট থেকে পানি বের করার উদ্দেশ্যে এর উপর চাপ প্রয়োগ করার প্রয়োজন নেই, এর ফলে বরং পেটের পানি কিংবা খাবার অধিক পরিমাণে শ্বাসণালীতে চলে যেতে পারে। সবচেয়ে সঠিক কাজটি হল দ্রম্নত কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাস শুরম্ন করা, মিনিটে চার থেকে বারো বার, এতে ফুসফুস পানি থাকলেও অক্সিজেন পৌঁছে যাবে রক্তে।
বুকের উপর চাপ প্রয়োগ করতে হয় তখনই, যখন অক্সিজেনের অভাবে হৃৎপিন্ড বা হার্টের কাজ বন্দ হয়ে যায়। চাপ দেয়ার পদ্ধতিতে ইংরেজীতে বলে কার্ডিয়াক মেসেজ। বুকের ঠিক মাঝখানে হার্টের অবস্থানে চাপ দিয়ে একে চালু করার চেষ্টা করা হয়। পুরো প্রক্রিয়াটাকে বলে সিপিআর বা cadio-pulmnary resusctation, ডুবে যাওয়া মানুষকে প্রাথমিক অবস্থায় বাঁচিয়ে তুলতে গুরম্নত্বপূর্ণ এবং অত্যনত্ম কার্যকরী। সচেতন নাগরিক হিসেবে সবারই এই প্রাথমিক চিকিৎসাটি জানা থাকা উচিত। বেশ কয়েক ঘন্টা আগে মারা গেছে এমন যদি না হয়, তবে ফলাফল পাওয়া অথবা হাসপাতালে পৌঁছানো পর্যনত্ম কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাস এবং কার্ডিয়াক মেসেজ দেয়ার পদ্ধতি চালিয়ে যাওয়া উচিত।
উদ্বার করার সময় ঘাড়ে কোন প্রকার আঘাত আছে নাকি সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। উদ্ধারের সময়, সম্ভব হলে উপর করা অবস্থায় পানি থেকে তোলা উচিত। ঠা-া পানি থেকে তোলা হলে, কাপড় জড়িয়ে তাকে গরম রাখতে হবে। G¨v¤^y‡j‡Ý বহন করার সময় প্রচুর অক্সিজেন দেয়া উচিত।
ফুসফুসের ড়্গুদ্রাতি ড়্গুদ্র বায়ু থলিগুলিতে যেভাবে অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইড আদান প্রদান হয় :
শ্বাসণালীর প্রানেত্ম রয়েছে বায়ুথলি। পরিবেশ থেকে সংগৃহীত অক্সিজেন যুক্ত বাতাস শ্বাসণালীর পথ বেয়ে এই বায়ুথলিতে পৌঁছে। এরপর অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন বায়ুথলি থেকে সুক্ষ্ম রক্তণালীতে পৌঁছে (গাঢ় লাল রং দ্বারা চিহ্নিত)। এরপর অক্সিজেন যুক্ত রক্ত, সুক্ষ্ম রক্তণালীর পথ বেয়ে পৌঁছে যায় বৃহত্তর রক্তণালীতে, অবশেষে তা চলে আসে হৃৎপিন্ডে এবং সেখান থেকে অক্সিজেন যুক্ত রক্ত ছড়িয়ে পড়ে সারা শরীরে।
ঠিক একইভাবে প্রানিত্ময় অঙ্গ প্রত্যঙ্গ থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড ছোট ছোট শিরার মাধ্যমে সংগৃহীত হয়ে প্রধান শিরার মাধ্যমে হৃৎপিন্ডে পৌঁছে। এই কার্বন ডাই অক্সাইড সমৃদ্ধ রক্ত, অক্সিজেন দ্বারা সমৃদ্ধ করতে হৃৎপিন্ড এই রক্ত পাঠিয়ে দেয় ফুসফুসে। রক্ত অক্সিজেন সমৃদ্ধ হয়ে ফুসফুস থেকে ফিরে আসে হৃৎপিন্ডে। হৃৎপিন্ড সেই অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পুনরায় ফিরিয়ে দেয় সারা শরীরে। এইভাবে আমাদের ফুসফুস শরীরে অক্সিজেনের চাহিদা মিটিয়ে চলছে।
অ্যাজমা উপশমে আপনার বর্তমান পেশাকে না বলতে হতে পারে
পেশাজনিত কারণে অ্যাজমাতে ভুগছে এমন লোকের সংখ্যা আমাদের দেশে কম নয়, কিন্তু সচেতনার অভাবে অনেকেই তাদের এই সমস্যাটি ঠিক অনুধাবন করতে পারে না। পেশাজনিত অ্যাজমা দ্রম্নত বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন, পরিবেশ দূষণ এবং নগারায়ণের ফলে।
এ ধরনের রোগীদের ড়্গেত্রে দেখা যায়, সপ্তাহের শুরম্নতে কারখানা বা কর্ম ড়্গেত্র পৌঁছলে শুরম্ন হয় কফ কাশি, শ্বাস কষ্ট কিংবা বুকে চাপ চাপ বোধ হওয়া প্রভৃতি। আবার বাড়ি ফিরে আসলে লড়্গণগুলি অনেকখানি উপশম হয়। আর ছুটির দিনগুলিতে রোগী অনেকখানি ভাল থাকে। অর্থাৎ অ্যাজমার লড়্গণগুলি পেশাগত কারণে ফিরে ফিরে আসে। অ্যাজমার সাথে সাথে অন্যান্য অ্যালার্জি জাতীয় সমস্যাগুলিও দেখা দিতে পারে, যেমন- অ্যালার্জি জনিত সদি, অ্যালার্জি জনিত চোখের প্রদান প্রভৃতি।
কোন কোন পেশায় নিয়োজিত থাকলে পেশাগত অ্যাজমা হবে সেটি সুনির্দিষ্ট ভালো বলা কঠিন। তবে দেখা যায় যে সব পেশায় কর্মড়্গেত্রে বাতাসে ভাসমান প্রচুর ড়্গুদ্র কণা, ধূলা, আঁশ প্রভৃতি তৈরি হয় সে পেশাগুলিতে কর্মরত মানুষের এ ধরণের পেশাগত অ্যাজমা হয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন রাসায়নিক কারখানায় কর্মরত কিংবা যেখানে তীব্র গন্ধের উদ্রেক হয় সেখানেও এ ধরণের অ্যাজমায় আক্রানত্ম রোগী পাওয়া যেতে পারে।
সম্ভাব্য পেশা যেমন- কৃষি কাজ, পশু পালন, কাঠের কাজ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ, নাপিতের কাজ, বেকারীর কাজ, বিভিন্ন প্রকার ধাতুর কাজ, সূতা তৈরি, রং করার কাজ ইত্যাদি।
পেশাজনিত অ্যাজমার চিকিৎসা সাধারণ অ্যাজমার মতই, তবে এর সাথে যুক্ত হয় আপনি, আপনার পেশা পরিবর্তন করবেন কিনা অথবা কর্মড়্গেত্রে এমন জায়গা জায়গা খুঁজে নিবেন যেখানে বাতাসে ভাসমান কণা কম। কর্মড়্গেত্র পরিবর্তন করলে এই সব ড়্গেত্রে সুফল পাওয়া যায়। বিশ্বের অনেক দেশেই এই সকল পেশায় নিয়োজিত শ্রমিকদের স্পইরোমেট্রির (শ্বাস মাপক যন্ত্র) মাধ্যমে ফুসফুসের ড়্গমতা মেপে অ্যাজমা আছে কিনা দেখা হয়। তাই নিয়োগকর্তা এবং শ্রমিক ভাইদের বলব কর্মড়্গেত্রে যেয়ে কাশি, শ্বাস কষ্ট, বুকে চাপ চাপ বোধ অথবা বুকে বাঁশির মত আওয়াজ হলে আপনারা জেনে নেয়ার চেষ্টা করম্নন, আপনাদের পেশাজনিত অ্যাজমা আছে কিনা।
ফুসফুসের গঠনগত তন্তুর রোগ
(আই.এল.ডি)
এটি ফুসফুসের একটি ভিন্ন ধরণের রোগ, মূলত ফুসফুসের গঠনগত তন্তু এই রোগে আক্রানত্ম হয়। এই রোগ সাধারণ মানুষের কাছে কিছুটা অপরিচিত হলেও, সাধারণ মানুষের একটি বড় অংশ এই রোগের ঝুঁকিতে থাকে। আই.এল.ডি এর অনত্মর্গত রয়েছে ফুসফুসের বিভিন্ন ধরণের রোগ, এর বড় একটি অংশ হয়ে থাকে পেশাগত কারণে, কোন কোনটি হয়ে থাকে বিভিন্ন প্রকার বাত রোগের কারণে। তবে অধিকাংশ ড়্গেত্রে এর কারণ জানা যায় না।
আই.এল.ডি বা ফুসফুসের কাঠামোগত তন্তুর রোগ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকলেও এদের কিছু সাধারণ লড়্গণ রয়েছে। যেমন-
(১) ক্রমাগত শুকনা কাশি হওয়া, দিন রাত, ঠান্ডা গরম কিংবা ঋতু পরিবর্তনে কাশির মাত্রার খুব একটা পরিবর্তন হয় না।
(২) শ্বাসকষ্ট হওয়া। মূলত পরিশ্রম করলেই রোগীর শ্বাস কষ্ট দেয়া দেয় এবং সময়ের সাথে সাথে রোগের মাত্রা বাড়তে থাকলে শ্বাস কষ্টও ক্রমাগত বেড়ে যায়।
(৩) বুকে A¯^w¯’, প্রভৃতি।
এই রোগ নির্ধারণে চিকিৎসকরা সাধারণ নিম্নের রোগ নির্ণয় পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করেন, যেমন- বুকের এক্সরে, লাং ফাংশন টেস্ট (ফুসফুসের কার্য্যড়্গমতা দেখার পরীড়্গা), এইচ.আর.সিটি (H.R.C.T of chest)| মূলত এইচ.আর.সি.টি পরীড়্গার ব্যবহারের ফলে আই.এল.ডি রোগ নির্ণয়, এর ধরণ এবং কারণ m¤^‡Ü জানা সহজতর হয়েছে।
আই.এল.ডি রোগ গুলোর মধ্যে যে গুলো স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধে রোগের লড়্গণগুলোর উপশম হয়, তাদের চিকিৎসার ফলাফল ভাল। পেশাগত কারণে যে আই.এল.ডি গুলো হয়, পেশা পরিবর্তনে তারা যথেষ্ট উপকৃত হয়। আই.এল.ডি রোগ গুলির একটি বড় অংশের সনেত্মাষজনক চিকিৎসা নেই অথবা রোগগুলোর সম্পূর্ণ ভাল হয়ে উঠার সম্ভাবনা কম। তবে রোগগুলি থেকে যাতে শারিরীক জটিলতা দেখা না দেয়, রোগীর কষ্টদায়ক উপসর্গগুলো যাতে প্রশমিত হয় অথবা রোগুলোর যাতে স্থিতি অবস্থা বজায় থাকে সেই জন্য বিদ্যমান চিকিৎসা যথাযথ ভাবে গ্রহণ করা উচিত।
শ্বাসতন্ত্রের শুরম্ন থেকে শেষ
বাইরের পরিবেশ থেকে ফুসফুসে বাতাস ঢোকার প্রবেশ পথ হল নাসারন্ধ। শুধু বাতাসের প্রবেশ পথই না, বাতাসের বড় বড় ভাসমান ময়লা আটকে যায় নাকেটর গহবরে। নাকের দুই পাশে রয়েছে সারি সারি বায়ু কঠুরী (সাইনাস)। নাকে প্রবেশ করা বাতাসে জলীয় ভাব আনা এবং নিঃশ্বাসের বায়ুর তাপমাত্রা শরীরের তাপমাত্রার কাছাকাছি নিয়ে যাওয়াই এর কাজ। এরপর শ্বাসের এই বাতাস ফেরিংক্স বা গলবিল বেয়ে চলে আসে লেরিংক্স বা ¯^i যন্ত্রে। এখানে সজাগ পাহাড়ায় রয়েছে ইপিগস্নটিস এবং গস্নটিস যাতে বাতাসের সাথে সাথে প্রধান শ্বাসণালীতে ঢুকে না যায় খাদ্য কণা, মুখের লালা কিংবা খাদ্যণালীর রস।
¯^ihš¿ বা লেরিংক্সের পরপরই শুরম্ন হয় শরীরের সবচেয়ে বড় বায়ুণালী টি (ট্রাকিয়া)। এরপর এটি বিভক্ত হয় ডান এবং বামের প্রধান শ্বাসণালীতে। এরপর দুটি প্রধান শ্বাসণালী বারবার বিভক্ত হতে হতে ড়্গুদ্রাতি ড়্গুদ্র শ্বাসণালীতে পরিণত হয়। আর এই ড়্গুদ্র ড়্গুদ্র শ্বাসণালীর প্রানেত্ম থাকে বায়ু থলি যেখানে অক্সিজেনের আদান প্রদান হয়।
মাতৃগর্ভে ফুসফুসের বেড়ে ওঠা
দেখুন সপ্তাহে সপ্তাহে কিভাবে ভ্রূণে ও মাতৃ গর্ভে বেড়ে উঠে মানব ফুসফুস। প্রথম বার (১২) সপ্তাহে বড় শ্বাসনালী, এরপর ষোল সপ্তাহ থেকে চব্বিশ সপ্তাহ পর্যনত্ম ড়্গুদ্রাতি ড়্গুদ্র শ্বাসণালীগুলি তৈরী হয়। বায়ু থলি তৈরির সময়, মাতৃগর্ভের আঠাশ সপ্তাহ থেকে আটত্রিশ (৩৮) সপ্তাহ পর্যনত্ম।
ফুসফুসের ক্যান্সারের দশটি প্রধান লড়্গণ
1. রোগীদের যদি ক্রমাগত কাশি হতে থাকে, কাশি যদি ভাল হতে না চায় কিংবা অন্য কোন রোগের কারণে কাশি হতে থাকলেও যদি কাশির ধরণটা পাল্টে যায় তা হলে দেখে নেয়া ভাল আপনি ক্যান্সারে আক্রানত্ম কিনা ? বিশেষ করে যারা ধূমপান করে, তাদের জন্য আরো বেশী জরম্নরী ফুসফুসের ক্যান্সারের স্ক্রীনিং করে নেয়া।
2. কাশির সাথে রক্ত যাওয়াও একটি বিপদজনক লড়্গণ। রোগী বলে কফের সাথে মাঝে মাঝে রক্ত যায়, কিংবা কফের সাথে ছিড়ে ছিড়ে রক্ত যায়।
3. কিছু কিছু রোগীর শ্বাসের সাথে কর্কশ কিংবা বাঁশির মত শব্দ হয়, ধরে নেয়া হয় তাদের বড় কোন শ্বাসণালীতে টিউমার থাকতে পারে।
4. বুকে ব্যাথা ফুসফুসের আরেকটি প্রধানতম লড়্গণ। এই ধরনের ব্যাথা তীব্রতর হয়ে থাকে, সাধারণ ব্যাথার ঔষধে এর মাত্রা কমতে চায় না। রাত দিন ২৪ ঘন্টা রোগী ব্যাথায় ভুগতে থাকে।
5. এই ধরণের রোগীরা প্রায়ই ইনফেকশনে ভুগে থাকে। এমনকি নিউমোনিয়াতে আক্রানত্ম হয়ে চিকিৎসকের নিকট উপস্থিত হয়। মূলত ক্যান্সারে রোগ প্রতিরোধ ড়্গমতা কমে যাওয়ার কারণে এমনটি হয়ে থাকে।
6. কারও কারও খাবার গিলতে সমস্যা হয়। ফুসফুসের টিউমার, বুকের মধ্যভাগে অবস্থিত খাদ্যণালীতে চাপ দিলে এই পরিস্থিতির সৃষ্ট হয়।
7. ক্যান্সারের জটিলতার কারণে কিছু লোকের ¯^i কর্কশ বা ভেঙ্গে যেতে পারে।
8. ফুসফুসের ক্যান্সারের রোগীর শ্বাসকষ্ট হতে পারে নানা কারণে, ফুসফুসের পর্দায় প্রচুর পরিমাণে পানি আসলে, শ্বাসণালীতে টিউমার থাকার কারণে ফুসফুসের একটা বড় অংশ চুপষে গেলে, বড় শ্বাসণালী টিউমারের কারণে সরম্ন হয়ে গেলে কিংবা ক্যান্সার উভয় ফুসফুসে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে গেলে।
9. অধিকাংশ রোগী ক্রমাগত ওজন হারাতে পারেন।
10. কারো কারো আঙ্গুলগুলোর অগ্রভাগ ফুলে যেতে পারে কিংবা নখ সামনে পিছনে বেঁকে যেয়ে টিয়া পাখির ঠোঁটের মত হতে পারে।
স্থায়িভাবে ড়্গতিগ্রসত্ম শ্বাসণালী (Bronchiectasis) সারা জীবনের weo¤^bv
আমাদের ফুসফুস বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রোগে আক্রানত্ম হয়। এর মধ্যে জীবাণু সংক্রমণ অন্যতম। জীবাণু সংক্রমণের কারণে যে রোগগুলি হয়ে থাকে তার মধ্যে নিউমোনিয়া এবং যক্ষ্মা রোগ অন্যতম। এই রোগগুলির চিকিৎসা যদি ঠিক মত না হয় কিংবা দেরীতে চিকিৎসা শুরম্ন হয় তবে ফুসফুসের অন্যান্য অংশের মত এর শ্বাসণালী গুলিও ড়্গতিগ্রসত্ম হয়। শ্বাসণালীর দেয়ালের বৈশিষ্ট্য সমূহ নষ্ট হয়ে এর স্থিতিস্থাপকতা এবং কফ সরাণোর ড়্গমতা হ্রাস পায় কিংবা নষ্ট হয়। ফলে এই শ্বাসণালী গুলিও ড়্গতিগ্রসত্ম হয়। শ্বাসণালীর দেয়ালের বৈশিষ্ট্য সমূহ নষ্ট হয়ে এর স্থিতিস্থাপকতা এবং কফ সরানোর ড়্গমতা হ্রাস পায় কিংবা নষ্ট হয়। ফলে এই শ্বাসণালীগুলি হয়ে উঠে ময়লা কফ এবং জীবাণুর আধার। ডাক্তারি ভাষায় একে বলা হয় ব্রঙ্কেকটেসিস। একে বাংলায় বলা যেতে পারে প্রসারিত নিশ্চল শ্বাসণালী।
এছাড়াও কিছু জন্মগত ক্রুটির কারণে ফুসফুসের শ্বাসণালী ড়্গতিগ্রসত্ম হয়। যেমন- জিনগত ত্রম্নটির কারণে (সিস্টক ফাইব্রসিস), রোগ প্রতিরোধ ড়্গমতা না থাকার কারণে (হেইপো গামা গেস্নাবিউলেমিয়া) কিংবা শ্বাসণালীর সিলিয়ার অসারতার কারণে। এছাড়া ছোট বেলায় হুপিং কাশি বা হাম হলেও ফুসফুসের শ্বাসণালী ড়্গতিগ্রসত্ম (ব্রঙ্কেকটেসিস) হয়।
যেহেতু ড়্গতিগ্রসত্ম শ্বাসণালীগুলি হয়ে থাকে ময়লা কফ ও জীবাণুর আধার, তাই প্রায়ই দেখা যায় এখান থেকে জীবাণু আশেপাশের অপেড়্গাকৃত ভাল অংশে সংক্রমিত হয়। ফলে ঐ সব অংশে দেখা দিতে পারে নিউমোনিয়া, ফুসফুসের ফোঁড়া প্রভৃতি। এমনকি ফুসফুসের পর্দায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, সেখানে পুঁজ জমতে পারে। অনেক সময় এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে রক্তেল। ড়্গতিগ্রসত্ম শ্বাসণালী থেকে প্রায় রড়্গ ড়্গরণ হয়, এই রড়্গ ড়্গরণ মাঝে মাঝে এত বেশী হতে পারে, যে রোগীর প্রধান শ্বাসণালী বন্ধ হয়ে রোগী মারা যেতে পারে।
তাই এই সমস্যার প্রধান চিকিৎসা হল, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা এবং ফুসফুসকে বিশেষ অবস্থানে রেখে ময়লা কফ বের করে এনে ড়্গতিগ্রসত্ম শ্বাসণালী পরিষ্কার রাখা।
কিন্তু এতে কাজ না হলে কিংবা বারবার জটিলতা দেখা দিলে, অপরেসনই হয়ে উঠে একমাত্র বিকল্প ব্যবস্থা।
এছাড়া নিউমোনিয়া এবং ফ্লুভেক্সিন নিয়ে বারবার সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে।
কাশি যখন রোগের কথা বলে
কারণ |
বৈশিষ্ট্য |
নাকের পেছন দিয়ে রস ঝরা |
দীর্ঘস্থায়ি বিরক্তিকর কাঁশি |
কারণ |
বৈশিষ্ট্য |
¯^ih‡š¿i প্রদাহ, টিউমার, হুপিং কাশি, ভাইরাল ইনফেকশন |
কর্কশ এবং ব্যাথা যুক্ত কাশি যা কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দের মত শুনায় যার সাথে কখনও কখনও বড় শ্বাসনালীর ঘের ঘের শব্দ শোনা যায়।
|
কারণ |
বৈশিষ্ট্য |
মূলশ্বাসনালীর (ট্রাকিয়া) প্রদাহ
|
ব্যাথাযুক্ত কাশি |
শ্বাসনালীতে বাইরের বস্তু যেমন- ফলের বিচি, নকল দাঁত ইত্যাদি।
|
হঠাৎ করে দম বন্ধ হয়ে আসা এবং শব্দ বের না হওয়া সৃষ্টি হতে পারে |
কারণ |
বৈশিষ্ট্য |
ছোট শ্বাসনালীর প্রদান এবং দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসরোধক রোগ (সিওপিডি) |
শুকনা অথবা কফযুক্ত কাশি যা সকালের দিকে বৃদ্ধি পায়। |
অ্যাজমা |
শুকনা অথবা কফযুক্ত কাশি যা সকালের দিকে বৃদ্ধি পায়। কাশির সাথে বুকে বাঁশিরমত শব্দ হয়। |
ফুসফুসের ক্যান্সার |
সার্বড়্গণিক কাশি থাকে এবং কাশির সাথে মাঝে মাঝেই রক্ত যায়।
|
কারণ |
বৈশিষ্ট্য |
ফুসফুসের যক্ষ্মা |
কফযুক্ত কাশি এবং কাশির সাথে রক্ত যাওয়া |
নিউমোনিয়া |
প্রথম দিকে শুকনা কাশি থাকে পরের দিকে কফ বের হয়। |
ড়্গতিগ্রসত্ম এবং স্থায়ীভাবে প্রসারিত শ্বাসনালী (ব্রঙ্কেকটেসিস) |
কাশির সাথে প্রচুর কফ বের হওয়া |
ফুসফুসে পানি আসা |
কাশির সাথে ফেনাযুক্ত কফ বের হওয়া। কখনও কখনও রক্ত আসতে পারে। |
ফুসফুসের গঠনগত তন্তুর অত্যাধিক বৃদ্ধি (আই.এল.ডি) |
শুকনা A¯^w¯’Ki কষ্টদায়ক কাশি |
ফুসফুসের ফোঁড়া |
গন্ধযুক্ত কফ বের হয়। |
কাশি কোন রোগ নয়, বরং অনেক প্রকাশিত বা অপ্রকাশিত রোগের লড়্গণ। আমরা যখন রোগীর কাশি সংক্রানত্ম কোন ইতিহাস নিই, তখন নিম্নলিখিত বিষয়গুলি m¤^‡Ü রোগীর কাছ থেকে জানার চেষ্টা করি-
1. আপনি কত দিন যাবত কাশিতে আক্রানত্ম ?
যদি উত্তরাটা হয় কয়েকদিন থেকে দুই সপ্তাহ পর্যনত্ম। তাহলে এটির কারণ হতে পারে সাধারণ সর্দি জ্বর হতে নিউমোনিয়া পর্যনত্ম। যদি কাশি হয়ে থাকে ২/৩ সপ্তাহের অধিক, রোগী আক্রানত্ম হয়ে থাকতে পারে যক্ষ্মা, অ্যাজমা দীর্ঘস্থায়ি শ্বাসরোধক রোগ (COPD) ফুসফুসের ক্যান্সার প্রভৃতি।
2. কাশির সাথে কি কফ বের হয় ?
কাশির সাথে যদি কফ বেন না হয়, অর্থাৎ এটি যদি শুকনা কাশি হয়, তবে কারণ হতে পারে অ্যাজমা, আই.এল.ডি (ফুসফুসের কাঠামোগত তন্ত্রুর রোগ) কিংবা কোন কোন ঔষধ ইত্যাদি। কাশির সাথে যদি প্রচুর পরিমাণে কফ বের হয় তবে মনে করতে হবে সেই ব্যক্তি হয়ত বা ব্রঙ্কেকটেসিস (ড়্গতিগ্রসত্ম অসার শ্বাসণালী) কিংবা ফুসফুসের ফোড়ায় আক্রানত্ম।
3. কাশি সাথে কি রক্ত যায় ?
সাধারণ ব্রঙ্কাইটিস (শ্বাসণালীর প্রদাহ) হল কাশির সাথে রক্ত যাওয়ার সবচেয়ে পরিচিত কারণ। কিছুটা ভীতিকর কারণ যেমন- যক্ষ্মা, যারা ধুমপায়ি তাদের দুশ্চিনত্মা হওয়া উচিত এই কারণে যে, মাঝে মাঝে কাশির সাথে রক্ত যাওয়ার অন্যতম কারণ ফুসফুসের ক্যান্সার। তবে কাশি সাথে সবচেয়ে বেশী পরিমাণে রক্ত যেতে পারে ব্রঙ্কেকটেসিস (ড়্গতিগ্রসত্ম অসার শ্বাসণালী) , যক্ষ্মায় কিংবা ফুসফুসের ফোড়ায়।
4. কাশির সাথে কি বুকে ব্যাথা হয় ?
তা হলে হতে পারে নিউমোনিয়ার জন্য সাধারণত তা হয়ে থাকে বুকের কোন এক পাশে। তবে এই সকল রোগীরা উচ্চ তাপ মাত্রার জ্বরে আক্রানত্ম হয়ে থাকেন। কিন্তু বুকের ব্যাথা যদি টানা ধরণের হয় এবং কাশিরত ধুমপায়ি রোগীটির যদি জ্বর না থাকে, তবে আমরা যেন ভালভাবে বুঝে নিই, সে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রানত্ম নয়।
5. কাশির সাথে কি বুকে বাঁশির মত শব্দ হয় অথবা বুকে চাপ ধরে থাকে ?
তাহলে বুঝতে হবে আপনি হয়ত অ্যাজমা অথবা সিওপিডি (দীর্ঘ স্থায়ি শ্বাসরোধক রোগ) তে আক্রানত্ম।
6. প্রতি শীতে কিংবা ধুলাবিলর সংস্পর্শে আপনার কাশি কি বেড়ে যায়, তাহলে আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি হয়ত অ্যাজমায় আক্রানত্ম হয়ে থাকতে পারেন।
ফুসফুসের গঠনগত তন্তুর রোগ
এটি ফুসফুসের একটি ভিন্ন ধরনের রোগ, মূলত ফুসফুসের গঠনগত তন্তু এই রোগে আক্রানত্ম হয়। এই রোগ সাধারণ মানুষের কাছে কিছুটা অপরিচিত হলেও তাদের একটি বড় অংশ এই রোগের ঝুঁকিতে থাকে। আই.এল.ডি এর অনত্মর্গত রয়েছে ফুসফুসের বিভিন্ন ধরনের রোগ, এর বড় একটি অংশ হয়ে থাকে পেশাগত কারণে, কোন কোনটি হয়ে থাকে বিভিন্ন প্রকার বাত রোগের কারণে। তবে অধিকাংশ ড়্গেত্রে এর কারণ জানা যায় না।
আই.এল.ডি বা ফুসফুসের কাঠামোগত তন্তুর রোগ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকলেও এদের কিছু সাধারণ লড়্গণ রয়েছে। যেমন (১) ক্রমাগত শুকনা কাশি হওয়া, দিন রাত, ঠা-া গরম কিংবা ঋতু পরিবর্তনে কাশির মাত্রার খুব একটা পরিবর্তন হয় না। (২) শ্বাসকষ্ট হওয়া। মূলত পরিশ্রম করলেই রোগীর শ্বাস কষ্ট দেখা দেয় এবং সময়ের সাথে সাথে রোগের মাত্রা বাড়তে থাকলে শ্বাস কষ্টও ক্রমাগত বেড়ে যায়। (৩) বুকে A¯^w¯’, প্রভৃতি।
এই রোগ নির্ধারণে চিকিৎসকরা সাধারণ নিম্নের রোগ নির্ণয় পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করেন, যেমন- বুকের এক্স-রে, লাং ফাংশন টেস্ট (ফুসফুসের কার্য্যড়্গমতা দেখার পরীড়্গা), এইচ.আর.সিটি (H.R.C.T of chest)| মূলত এইচ.আর.সি.টি পরীড়্গার ব্যবহারের ফলে আই.এল.ডি রোগ নির্ণয়, এর ধরণ এবং কারণ m¤^‡Ü জানা সহজতর হয়েছে।
আই.এল.ডি রোগগুলোর মধ্যে যেগুলো স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধে রোগের লড়্গণগুলোর উপশম হয়, তাদের চিকিৎসার ফলাফল ভাল। পেশাগত কারণে যে আই.এল.ডি গুলো হয়, পেশা পরিবর্তনে তারা যথেষ্ট উপকৃত হয়। আই.এল.ডি রোগ গুলির একটি বড় অংশের সনেত্মাষজনক চিকিৎসা নেই অথবা রোগগুলোর সম্পূর্ণ ভাল হয়ে উঠার সম্ভাবনা কম। তবে রোগগুলি থেকে যাতে শারীরিক জটিলতা দেখা না দেয়, রোগীর কষ্টদায়ক উপসর্গগুলো যাতে প্রশমিত হয় অথবা রোগগুলোর যাতে স্থিতি অবস্থা বজায় থাকে সেই জন্য বিদ্যমান চিকিৎসা যথাযথ ভাবে গ্রহণ করা উচিত।
অ্যাজমাকে প্রতিরোধ করতে চাইলে, অ্যালার্জিজনিত সর্দির যথাযথ চিকিৎসা নিতে হবে
অ্যাজমা এবং অ্যালার্জি জনিত সর্দিকে বলা হয়ে থাকে একই পাখির পালক কিংবা একই গোয়ালের গরম্ন।
নাক হল ফুসফুসের শ্বাসণালীর প্রবেশ দ্বার। গঠনগতভাবে নাকের ভিতরকার অংশ এবং ফুসফুসের শ্বাসনালীর ভিতরকার অংশের মধ্যে যথেষ্ট মিল আছে। বিভিন্ন অ্যালার্জিক (উত্তেজক) বস্তুর সংস্পর্শে আসলে নাক ও এর আশেপাশের শেস্নষা ঝিলিস্ন (মিউকাস মেমব্রেন বা আবরণী) ফুলে ফুলে যায় এবং সর্দি ঝড়া শুরম্ন হয়। তবে এই পরিবর্তন তাদের ড়্গেত্রেই দেখা দেয়, যাদের শারীরিকভাবে অ্যালার্জিতে আক্রানত্ম হওয়ার প্রবণতা আছে যা অনেকটা প্রাকৃতিক বা বংশগতির ধারায় নির্ধারিত হয়। ¯^vfvweK মানুষের ড়্গেত্রে অ্যালার্জিক বা উত্তেজক বস্তু যতই সংস্পর্শে আসুক না কেন, নাকে এই ধরনের কোন পরিবর্তন আসে না।
ফুসফুসের শ্বাসনালীর শুরম্ন নাক থেকেই, তাই এই প্রবেশ দ্বার যখন অ্যালার্জিতে ভুগে (অর্থাৎ রোগী যখন অ্যালার্জি জনিত সর্দিতে আক্রানত্ম হয়) তখন এই ভবিষ্যতবাণী করা যায়, আমাদের রোগীটি তার জীবনের কোন না কোন সময় অ্যাজমাতে আক্রানত্ম হতে পারে। এই সম্ভাবনা কম বেশী শতকরা ৬০ ভাগ।
অ্যাজমাকে সহজ ভাষায় বুঝাতে চাইলে আমরা একে তুলনা করতে পারি শ্বাসনালীর অ্যালার্জি হিসাবে। তাই নাকের অ্যালার্জির যথাযথ চিকিৎসা না করলে এই অ্যালার্জি আরো বিসত্মার লাভ করে এবং পরবর্তীতে শ্বাসনালীর অ্যালার্জি অর্থাৎ অ্যাজমা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
অ্যালার্জি জনিত সর্দির চিকিৎসা না নিলে আমাদের কান এবং সাইনাস (নাকের চারিদিকে অবস্থিত বায়ু কুঠুরী) ইনফেকশন বা জীবাণু সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
অ্যালার্জি জনিত সর্দির আক্রমণ কমাতে চাইলে ধুলা, মাইট নামক ড়্গুদ্র কীট, বাতাসে ভেসে বেড়ানো ছত্রাকের বীজ প্রভৃতির সংস্পর্শ কমাতে হবে। এড়্গেত্রে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলি গ্রহণ করা যায় :
1. ঘর বা বাথরম্নমের দেয়ালে স্যাঁতস্যাঁতে দেয়াল থাকলে তা মেরামত করতে হবে।
2. পানির কল বা পাইপে কোন লিক থাকলে তা সাড়িয়ে নিতে হবে।
3. ঘরের মধ্যে কাপড় শুকানো যাবে না।
4. জানালায় ভারী পর্দা না টাঙ্গানো, যেখানে ধূলা আটকাতে পারে।
5. আলনাতে কাপড় না রেখে আলমারিতে কাপড় গুছিয়ে রাখা।
6. বাইরে থেকে ঘরে ফিরলে হাত মুখ ভালভাবে ধুলে ফেলা, যাতে শরীরে কোন অ্যালার্জেন (বিভিন্ন উত্তেজক বস্তু যেমন- ধূলাবালি, পরাগরেণু ইত্যাদি) আটকে না থাকে।
7. ঘরে কার্পেট নাা বিছানো।
8. বিছানার চাদর, বালিশ প্রভৃতি ঘরের বাইরে ঝেড়ে নিয়ে আসা।
9. সাধারণ বালিশের পরিবর্তে, মাইট প্রতিরোধী বালিশ ব্যবহার করা যেতে পারে, প্রভৃতি।
অ্যাজমা চিকিৎসায় যেমন শ্বাসের সাথে টেনে নেয়া স্টেরয়েড মূল চিকিৎসা, ঠিক তেমনি নাকে ব্যবহৃত ¯^ígvÎvi স্টেরয়েড অ্যালার্জিজনিত সর্দির মূল চিকিৎসা।
দীর্ঘস্থায়ি কাশির অন্যতম কারণ নাকের পিছন দিয়ে ক্রমাগত ঝড়ে পড়া সর্দি
নাকের সম্মুখভাগের নাসা রন্ধ্র দিয়ে সর্দি ঝড়া আমরা হর হামেশাই দেখতে পাই। কিন্তু নাকের পিছন দিয়ে (নাসা গহ্বরের পিছনের খোলা অংশ দিয়ে) সর্দি ঝড়া আমাদের দৃষ্টির অগোচরেই থেকে যায়।
এই সমস্যার মূল কারণগুলি হল- (১) দীর্ঘ স্থায়ি নাকের প্রদা (সর্দি) (২) দীর্ঘস্থায়ি সাইনাসের প্রদাহ (সাইনুসাইটিস) ইত্যাদি। নাক এবং এর আশেপাশের সাইনাস তৈরী হওয়া সর্দির কিছু অংশ নাকের পিছনের ছিদ্র হয়ে গলার পিছনে এসে জমা হয়, এর কিছু অংশ রোগী গিলে ফেলে আবার কিছু অংশ প্রধান শ্বাসনালীতে যেয়ে পড়ে। সর্দি যখন গলার পিছনে কিংবা শ্বাসনালীতে যেয়ে পড়ে তখনই কাশির উদ্রেক হয়। রোগী যখন চিত হয়ে শুয়ে থাকে তখন এই সর্দি গলায় বেশি জমা হয়, এই ধরনের রোগীরা শোয়ার পর বেশী কাশে। রোগীরা বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ করতে পারে যেমন-
1. গলায় সবসময় A¯^w¯’Kifv‡e কফ জমে থাকে। প্রায়ই খাকারি দিয়ে কফ পরিষ্কার করতে হয়।
2. খুব একটা কাশি নাই কিন্তু সারাদিন কফ ফেলি।
3. গলার ¯^i পাল্টে গেছে।
4. গলা চুলকায় প্রভৃতি।
চিকিৎসকরা সাধারণত মুখ হা করিয়ে গলার ভিতরের পিছন দিকটা দেখার চেষ্টা করেন, সেখানে কোন সর্দি জমে আছে কিনা। নাকের পিছন দিয়ে সর্দি পড়া বন্ধ করতে চাইতে দীর্ঘস্থায়ি নাকের প্রদাহ কিংবা সাইনুসাইটিসের যথাযথ চিকিৎসা নিতে হবে।
পাকস্থলি থেকে উগড়ে আসা এসিড, আপনার দীর্ঘস্থায়ি কাশির কারণ হতে পারে
আমরা সবাই জানি খাদ্যণাণীর মুখ একসাথে লাগোয়া থাকে এবং দুটি নলের শুরম্ন গলা থেকে। শ্বাসণালীর মুখ অবস্থান করে খাদ্যনালীর মুখের সামনে। শ্বাসনালী অতি সংবেদনশীল বিধায় আমাদের শরীর এই পথটি সংরড়্গিত রাখার চেষ্টা করে ইপিগস্নটিস (পাতার ন্যায় নরম তরম্নণাস্থি) বা ভোকাল কর্ড (¯^i যন্ত্রের অংশ) দ্বারা। অপরদিকে খাদ্যনালীর মুখ শ্বাসনালীর মত সুরড়্গিত নয়।
খাদ্যনালীর নীচের প্রানেত্ম যুক্ত থাকে পাকস্থলি যেখানে বেশ খানিকটা সময় খাদ্য জমা থাকে পরিপাক ক্রিয়ার অংশ হিসাবে। এই জমাকৃত আধা হজম খাদ্য, পরিপাক রস এবং পাকস্থলি থেকে নিঃসৃত এসিড যাতে খাদ্যনালী বেয়ে উপরে উঠে না আসে সে জন্য খাদ্যনালী এবং পাকস্থলির সংযোগ স্থলে থাকে স্ফিংটার যা ইলাস্টিকের মত খাদ্যনালীকে চেপে রাখে।
এই স্ফিংটার দুর্বল হয়ে গেলে এই এসিড মিশ্রিত রস খাদ্যনালীতে উঠে আসলে বুকে দেখা দিতে পারে জ্বালা পোড়া, এবং আধা পরিপাককৃত রস আরেকটু উপরে উঠে আসলে তা শ্বাসনালীতে যেয়ে কাশির সৃষ্টি করে এবং দেখা যায় শোয়ার পর কিংবা খাওয়ার পর ভরা পেটে এই ধরনের কাশি বেশি দেখা দেয় একে গ্যাষ্ট্রিক অ্যাজমাও বলা হয়ে থাকে। এছাড়াও নিম্নলিখিত লড়্গণগুলি দেখা দিতে পারে যেমন-
1. গলা ব্যাথা।
2. মনে হবে গলায় কি যেন দলা পাকিয়ে আছে।
3. বার বার গলা খাকারি দিয়ে গলা পরিষ্কার করার চেষ্টা করার ইচ্ছা হবে।
4. গলার ¯^i ভেঙ্গে যেতে পারে।
5. মুখে তিঁতা পানি আসে, প্রভৃতি।
এই সমস্যা আরো বেশি দেয়া দেয় চা, কপি, কোমল পানীয় পান করলে অথবা চর্বি, তৈলাক্ত বা মশলা জাতীয় খাবার খেলে। এসিড উগড়ে আসা থেকে সৃষ্ট কাশি প্রতিরোধ করার জন্য, ঔষধ ছাড়াও নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলি নেয়া যায় :-
1. পেট ভরে খাওয়া পরিহার করা।
2. ভাত খেয়ে শুয়ে না পড়া। খাওয়ার দুই ঘন্টার পর শুতে যাওয়া।
3. একটু উঁচু বালিশে শোয়া।
4. টাইট বেল্ট বা পেন্ট পড়া পরিহার করা। প্রভৃতি।
সাবধান খাদ্যনালী এবং শ্বাসনালী পাশাপাশি
খাদ্যনালী এবং শ্বাসনালী একদম কাছাকাছি তাই খাওয়ার সময় ধীরে ধীরে খান এবং কম কথা বলুন। ভুলবশত খাবার খাদ্যনালীতে না ঢুকে, যদি ঢুকে যায় শ্বাসনালীতে তবে দেখা দিতে পারে বিপত্তি। খাদ্যের টুকরাটি যদি বড় হয়, তবে তাৎড়্গণিকভাবে প্রচন্ড কাশি শুরম্ন হয়, শ্বাস কষ্ট হতে থাকে এমনকি দম বন্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা বিরল নয়। খাবারের কণা ছোট হলে তা পৌঁছে যায় ফুসফুসের গভীরে ফলে হতে পারে নিউমোনিয়া তা থেকে পরবর্তীতে ফুসফুসে পুঁজ জমে সৃষ্টি হতে পারে ফুসফুসের ফোঁড়া। এছাড়াও মাঝারি ধরনের শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে ফুসফুসের ঐ অংশটি চুপসে যেতে পারে। এভাবে দীর্ঘদিন থাকলে ফুসফুসের ঐ অংশটি অকার্যকর হয়ে যায়। ফলে দেখা যায় উক্ত ব্যক্তিটি প্রায়ই ফুসফুসের ইনফেকশনে আক্রানত্ম হয় এবং কাশি ও শ্বাস কষ্টে ভুগতে থাকে।
বিভিন্ন রকমের বাতের রোগীরা, ফুসফুসের রোগেও আক্রানত্ম হয়ে থাকে
আমরা যে রোগে আক্রানত্ম হই না কেন, আমাদের ফুসফুস কম বেশী ঝুঁকিতে থাকে। বাত রোগ জনিত অস্থি সন্ধির (joint) সমস্যায় আপনার ফুসফুস আক্রানত্ম হতে পারে। যেমন- ফুসফুসের পর্দায় পানি আসা (pleural effusion), ফুসফুসের কোন কোন অংশ শুকিয়ে কুকড়িয়ে যাওয়া (ILD), শ্বাসনালীতে প্রদাহ (bronchitis) হওয়া, ফুসফুসের রক্তনালীতে প্রদাহ (vaculitis) হওয়া ফুসফুসে রক্তড়্গরণ হওয়া (pulmonary heamorrhage) প্রভৃতি। এছাড়াও এই সমসত্ম রোগীদের নিউমোনিয়া (pneumonia) , যড়্গা এমনকি ফুসফুস টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। অস্থিসন্ধির বাত রোগে আক্রানত্ম ব্যক্তি যদি দীর্ঘস্থায়ি কাশি, শ্বাসকষ্ট, কাশির সাথে রক্ত যাওয়া, বুকে ব্যাথা হওয়া কিংবা জ্বরে ভুগতে থাকেন, তখন অবশ্যই একজন বড়্গব্যাধি চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।